গত ৫ আগস্ট ছাত্র জনতার অভ্যুত্থানে যাত্রাবাড়ী থানার সামনে নিহত হন পিকআপ চালক শাহিন। ঘটনার এক মাস পর থানায় মামলা করেন তার স্ত্রী স্বপ্না বেগম। এতে সাবেক প্রধানমন্ত্রীসহ ৮৪ জনের নামে হত্যার অভিযোগ আনেন বাদী। অজ্ঞাত আসামি করা হয় দেড় থেকে দুই হাজার জনকে।
এজাহার অনুযায়ী হত্যাকাণ্ডটি যাত্রাবাড়ীতে ঘটলেও রহস্যজনকভাবে অধিকাংশ অভিযুক্তের বাড়ি পটুয়াখালীতে। অন্যদিকে, এজাহারভুক্ত ১৭ নম্বর আসামি হাসিবুল আলম ২৪ জুলাই দুবাই হয়ে কানাডা যান। ভিডিও কলে, মামলার কথা শুনে অবাক হন তিনি।
এনিয়ে মামলার বাদীর সঙ্গে যোগাযোগ করেও তাকে পাওয়া যায়নি। এমনকি নথিতে থাকা মুঠোফোনের নাম্বারে কল করলে রিসিভ করেন আরেক ব্যক্তি।
এদিকে, গত ৪ আগস্ট ধানমন্ডি এলাকায় হত্যাচেষ্টা মামলার বাদী শরীফ আসামি হিসেবে অন্যদের সঙ্গে এজাহারভুক্ত করেন মোহাম্মদপুরের নার্গিস বেগম ও তার ছেলেকে।
এ মামলার এজহারভুক্ত আসামি ইমরান খান বলেন, ফ্ল্যাট থেকে সরানোর জন্য ৮-৯ বছরে ৮-১০টি মামলা দেয়া হয়েছে। গত ৫ আগস্টের পর রাজনৈতিক মামলা দেয়া হবে বলে হুমকি দেয়া হয়।
আরও পড়ুন: ছাত্র আন্দোলনে ৯ হত্যা মামলায় ইউপি চেয়ারম্যান আনোয়ার গ্রেফতার
মামলাটির অপর আসামি নার্গিস বেগম কান্নারত অবস্থায় বলেন, ‘আমি অসুস্থ, হাঁটতে পারি না। ভুয়া মামলায় আমাকে হয়রানি করা হচ্ছে। আমি সরকারের কাছে বিচার চাই।’
মামলাটির বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে বাদী ক্যামেরার সামনে কথা বলতে রাজি হননি।
সমাজ ও অপরাধ বিশেষজ্ঞ ড. তৌহিদুল হক মনে করেন, উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে কাউকে মামলায় জড়ালে বিচারকাজে দীর্ঘসূত্রতার আশঙ্কা থাকে। এতে মূল অভিযুক্তরাও পার পেয়ে যাওয়ার রাস্তা পেয়ে যান।
ডিএমপির মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) তালেবুর রহমান বলেন, মামলার অযুহাতে কাউকে হয়রানির সুযোগ নেই। সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমেই ব্যবস্থা নেয়া হবে। কেউ যদি মিথ্যা মামলা করে, তাহলে বাদীর বিরুদ্ধেও আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে।
সরকারের উচ্চ পর্যায় থেকে বারবার বলা হলেও এরই মধ্যে ত্রুটিপূর্ণ এমন শত শত মামলা দায়ের হয়েছে দেশে।