ফরিদপুরে বদ্ধঘরে মায়ের মরদেহ, মেয়েকে উদ্ধার করল পুলিশ

৩ সপ্তাহ আগে
ফরিদপুর শহরের একটি ভাড়া বাসা থেকে বদ্ধ অবস্থায় রিনা বেগম (৩০) নামে এক নারীর বিবস্ত্র মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। এ সময় তার ৫ বছর বয়সী শিশু কন্যাকেও ওই বাসা থেকে উদ্ধার করা হয়।

মঙ্গলবার (১০ জুন) দুপুরে শহরের রঘুনন্দনপুর এলাকার হাবিব ভিলার ৩ তলা ভবনের নিচতলা থেকে মরদেহটি উদ্ধার করে পুলিশ। নিহত রিনা বেগম জেলা সদরের অম্বিকাপুর ইউনিয়নের আজহার মন্ডলের ডাঙ্গী এলাকার মান্নান বেপারীর মেয়ে। তার ৫ বছরের কন্যা সন্তান ও ৮ বছর বয়সী এক পুত্র সন্তান রয়েছে।


সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ওই বাসার বাথরুমের সামনে বিবস্ত্র অবস্থায় পড়ে ছিল রিনা বেগম। পাশের কক্ষে বিছানায় অচেতন হয়ে পড়ে থাকতে দেখা যায় শিশুকন্যাকে। সেখানে একাধিক ওষুধ ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে এবং তরকারি ও ভাত মাখা খাবারের প্লেটও পড়ে রয়েছে। ভেতর থেকে বাসাটির দরজায় ছিটকিনি দেওয়া ছিল। ঘরের ভেতর থেকে পানি বেয়ে বাইরে চলে আসে।


স্থানীয় বাসিন্দারা বাসার জানালা দিয়ে বিষয়টি দেখে পুলিশকে খবর দেয়। পরে পুলিশের একাধিক টিম এসে দরজা ভেঙে রিনা বেগমকে উদ্ধার করে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠালে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। তবে তার মৃত্যু নিয়ে রহস্য সৃষ্টি হয়েছে। এদিকে ওই সময় তার শিশু কন্যাকে উদ্ধার করা হয়। সে সুস্থ রয়েছে।

আরও পড়ুন: স্ত্রীকে হুমকি দিচ্ছে ইজ্জলের ‘হত্যাকারীরা’, বিচার নিয়ে সংশয়!

বাড়ির মালিক হাবিবুর রহমান জানান, চলতি মাসে স্বামী-স্ত্রী পরিচয়ে বাসাটি ভাড়া নেয় মনিরুল ইসলাম নামে এক ব্যক্তি। মাত্র এক সপ্তাহ আগে ওই নারী উঠেছিলেন। আজ সকালে ঘটনাটি শুনে মনিরুলকে ফোন দিয়ে ঘটনাটি জানালে সে আর আসেনি, পরবর্তীতে নম্বরটি বন্ধ করে রাখেন।


পরিবার সূত্রে জানা যায়, প্রায় ১৫ বছর আগে পাশের ঈশাণগোপালপুর ইউনিয়নের শহীদ মোল্যার সঙ্গে বিয়ে হয় রিনা বেগমের। বিয়ের দুই বছর পর স্বামী শহীদ মোল্যা সৌদি আরবে পাড়ি জমান। এক পর্যায়ে রিনাকেও নিয়ে যান। কয়েক বছর আগে রিনা দেশে চলে আসেন। এরমধ্যে এক বছর পূর্বে ঈশাণগোপালপুর ইউনিয়নের দয়ারামপুর গ্রামের মনিরুল ইসলামের (৪০) সঙ্গে পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়েন এবং স্বামী শহীদ মোল্যার সঙ্গে মনোমালিন্য হয়। পরে শহরের একটি ডায়াগনস্টিক সেন্টারের কাজ শুরু করেন রিনা বেগম। তার সাথে তার মেয়ে থাকতো আর ছেলে থাকতো নানা-নানীর কাছে।


রিনার চাচা আব্দুস সালাম বেপারী বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ‘গত ৬ মাস আগে শহীদের সঙ্গে রিনার বিচ্ছেদ হয়। এরপর মনিরুলকে বিয়ে করেন। আজ জানতে পেরেছি, রিনা মারা গেছে। তবে কী কারণে, কীভাবে মারা গেছে জানি না। তবে তার আরেক প্রতিবেশী জানান- তাঁদের মধ্যে বিচ্ছেদ হয়নি।’

আরও পড়ুন: গ্রাম্য দলাদলির জেরে ভ্যানচালককে কুপিয়ে হত্যা

এ বিষয়ে কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আসাদউজ্জামান বলেন, ‘বাসার ভেতরে বিবস্ত্র অবস্থায় এক নারীর মরদেহ পড়ে রয়েছে এমন সংবাদের ভিত্তিতে ঘটনাস্থলে আমিসহ একাধিক টিম সেখানে যাই। জানালা দিয়ে দেখা যায় দরজায় ভেতর থেকে ছিটকিনি দেওয়া। পরে দরজা ভেঙে বাসায় প্রবেশ করে ওই নারীর মরদেহ উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠানো হয়। এসময় তার শিশু কন্যাকে উদ্ধার করা হয়। শিশুটি সুস্থ রয়েছে।’


তিনি আরও জানান, প্রাথমিকভাবে কিছু বলা যাচ্ছে না, ময়নাতদন্ত রিপোর্ট হাতে পেলে মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানা যাবে এবং তদন্ত অনুযায়ী আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

]]>
সম্পূর্ণ পড়ুন