বৃহত্তর ফরিদপুরের মধ্যে সবচেয়ে বড় পশুর হাট শহরের টেপাখোলায় মঙ্গলবার (২৭ মে) দুপুর থেকেই জেলার বিভিন্ন এলাকা ও আশপাশের জেলা থেকে গরু নিয়ে হাটে আসেন খামারি ও ব্যবসায়ীরা।
হাটে নিরাপত্তা ও ব্যবস্থাপনায় নেয়া হয়েছে বিভিন্ন উদ্যোগ। ইজারাদারের পক্ষ থেকে পুরো হাট সিসি ক্যামেরার আওতায় আনা হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় পুলিশের পাশাপাশি রয়েছে স্বেচ্ছাসেবক বাহিনী। জাল টাকা শনাক্তে রয়েছে বিশেষ মেশিন এবং প্রাণিসম্পদ দফতরের পক্ষ থেকে বসানো হয়েছে মেডিকেল ক্যাম্প। হাটে প্রতি লাখ টাকায় ৩ হাজার টাকা করে হাসিল নেয়া হচ্ছে।
সরেজমিনে বিকেলে হাট ঘুরে দেখা যায়, হাটে রয়েছে নানা আকারের গরু। গরুর তুলনায় ক্রেতা কিছুটা কম এমনটাই জানিয়েছেন বিক্রেতারা।
ব্যবসায়ী সাজ্জাদ হোসেন বলেন, ‘আমি সাতটি গরু এনেছি। এর মধ্যে দুইটি বিক্রি করেছি। এখন পর্যন্ত বিক্রি হয়েছে ৩ লাখ ৮০ হাজার টাকায়। গরু বেশি, কিন্তু ক্রেতা কম।’
ক্রেতা ইদ্রিস শেখ বলেন, ‘গ্রাম থেকে আজকের হাটে দাম তুলনামূলক কম। আমি তিনটি গরু কিনেছি। এগুলো অন্য হাটে বিক্রি করলে লাভ হবে।’
আনিছুর রহমান নামের এক ক্রেতা বলেন, ‘আমি একটি গরু কিনেছি ১ লাখ ৪০ হাজার টাকায়। মনে করছি ভালো দামে পেয়েছি। হাটে প্রচুর গরু এসেছে।’
আরও পড়ুন: বিএনপি নেতার বিল বাকি ৯ মাস, বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন করায় লাইনম্যানকে মারধর
হাট ইজারাদার সরোয়ার হোসেন বলেন, ‘বৃহত্তর ফরিদপুরের সবচেয়ে বড় হাট টেপাখোলায় আজ প্রথম দিনেই জমজমাট পরিবেশ তৈরি হয়েছে। দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে প্রায় ২০ হাজার গরু এসেছে। ক্রেতা ও বিক্রেতাদের নিরাপত্তায় আমরা সব ধরনের ব্যবস্থা নিয়েছি।’
তিনি আরও জানান, হাটে আসা খামারি ও বেপারিদের থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থাও করা হয়েছে। তারা যেন নিরাপদে গরু বিক্রি করে বাড়ি ফিরতে পারেন, সেজন্য সর্বোচ্চ নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হয়েছে।
ফরিদপুর কোতোয়ালি থানার এএসআই হেদায়েত উল্লাহ বলেন, ‘হাটে নিরাপত্তায় রয়েছে পুলিশের একটি দল। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা ক্রেতারা যাতে নির্বিঘ্নে গরু কিনতে পারেন, সেটি নিশ্চিত করা হচ্ছে।’
ফরিদপুর জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. সঞ্জীব কুমার বিশ্বাস বলেন, ‘টেপাখোলা হাটে আমাদের মেডিকেল টিম মোতায়েন রয়েছে। অসুস্থ গরুর তাৎক্ষণিক চিকিৎসা ও রোগাক্রান্ত গরু শনাক্তে নজর রাখা হচ্ছে। জেলার ৪০টি কোরবানির হাটের মধ্যে ১৮টিতে স্থাপন করা হয়েছে মেডিকেল ক্যাম্প।’
তিনি আরও বলেন, ‘এবার জেলার সবচেয়ে ওজনদার দুটি ষাঁড় “বাদশা” ও “রাজাবাবু” হাটে আনা হয়নি। “বাদশা”র ওজন ৩০ মন এবং “রাজাবাবু”র ওজন ২২ মন। এগুলো বাড়ি থেকেই বিক্রি হবে। প্রতিদিন এসব গরু দেখতে এবং কিনতে ক্রেতারা বাড়িতে আসছেন।’
ডা. সঞ্জীব জানান, জেলায় এবার কোরবানির পশুর চাহিদা ছিল ১ লাখ ৮ হাজার ১১টি। উৎপাদিত হয়েছে ১ লাখ ১০ হাজার ৮৯১টি, যা চাহিদার চেয়ে ২ হাজার ৮৮০টি বেশি।
]]>