নিষেধাজ্ঞা শেষে শনিবার (২ আগস্ট) মধ্যরাত থেকে কাপ্তাই হ্রদে শুরু হচ্ছ মৎস্য আহরণ। জেলেরা হ্রদে নামতে সেরে নিয়েছে শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি। মাছ শিকারের বিধিনিষেধ শেষ হওয়ায় জেলেরা পুরনো জাল ও নৌকাগুলো মেরামত শেষ করে দিয়েছেন রংও। চলছে নৌকায় জাল বোঝাইয়ের কাজ। মাছের প্রাকৃতিক প্রজননের জন্য ৩ মাস বন্ধ থাকার পর রাতেই হ্রদে ফেলা হবে জাল।
প্রতি বছর কাপ্তাই হ্রদে কার্প জাতীয় মাছের প্রাকৃতিক প্রজনন, অবমুক্ত করা পোনা মাছের পোনার স্বাভাবিক বৃদ্ধির জন্য ৩০ এপ্রিল থেকে ২ আগস্ট পর্যন্ত হ্রদে তিন মাস মাছ শিকার বন্ধ রাখে কর্তৃপক্ষ। দীর্ঘ সময়ের পর হ্রদে মাছ শিকারের প্রহর গুণছেন জেলেরা।
আরও পড়ুন: ডুবে গেছে রাঙ্গামাটির ঝুলন্ত সেতু, পর্যটক ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা
জেলে রকিব মিয়া বলেন, ‘আজ (শনিবার) রাত ১২টার পর থেকে হ্রদে মাছ ধরা শুরু হবে। অনেক আগেই আমরা সব প্রস্তুতি শেষ করে নিয়েছি। আজ সকালে নৌকায় জাল বোঝাই করেছি। রাত ১০টার দিকে মাছ ধরার জন্য ঘাট থেকে নৌকা ছেড়ে যাবে। ইতোমধ্যে বরফের জন্য বোট রাঙ্গামাটি ফিসারি ঘাটে অপেক্ষা করছে।’
অপর জেলে সাইফুদ্দিন বলেন, ‘বন্ধ তিন মাস বেশ কষ্টে দিন কাটাতে হয়েছে। আজ সেই কষ্টের দিন শেষ হচ্ছে। আশা করি প্রচুর মাছ ধরা পড়বে।’
শুধু জেলে পাড়াই নয়, কর্মচঞ্চল হয়ে উঠেছে জেলার সব থেকে বড় মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র বিএফডিসি ঘাট। মাছ পরিবহনের জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে শত শত ড্রাম। মেশিনে ভাঙা হচ্ছে বরফ। দীর্ঘ বন্ধের পর মাছ পরিবহের যাবতীয় সব প্রস্তুতি সেরে নিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।
মাছ ব্যবসায়ী পান্না চৌধুরী বলেন, ‘এই সময়টা আমরা প্রচুর ব্যস্ত থাকি। জেলেদের জন্য টাকা পাঠানো হয়েছে। বরফ প্রস্তুত করে সেগুলো নিয়ে বোট চলে গেছে নিজ নিজ গন্তব্যে। সকাল থেকে আবার পুরনো ব্যস্ততা শুরু হবে। তিন মাস তো অলস সময় কাটিয়েছি।’
আরও পড়ুন: শনিবার মধ্যরাত থেকে কাপ্তাই হ্রদে মাছ ধরা শুরু
ব্যবসায়ী সাদ্দাম হোসেন বলেন, ‘এবার সারা বছর কম বেশি বৃষ্টি হয়েছে। ফলে হ্রদে পানিও ছিল বেশ। তাই আশা করছি, এবার ভালো মাছ ধরা পড়বে। জেলেদের পাশাপাশি আমাদের ব্যবসাও ভালো হবে।’
বিএফডিসি, রাঙ্গামাটি শাখার ব্যবস্থাপক কমান্ডার মো. ফয়েজ আল করিম জানান, অবতরণ ঘাটের সব প্রস্তুতির সেরে নেয়া হয়েছে। পূর্বের বছরের মতো এবছরও বিপুল পরিমাণে মাছ অবতরণের প্রত্যাশা করছেন বিএফডিসির এ কর্মকর্তা।
বিএফডিসির তথ্য মতে, কাপ্তাই হ্রদে মৎস্য শিকার করে জীবিকা নির্বাহ করে প্রায় ২৬ হাজার জেলে। আর এবছর বন্ধকালীন হ্রদে প্রায় ৬৫ মেট্রিক টন কার্পজাতীয় মাছের পোনা অবমুক্ত করা হয়।