প্রথম দিনই যে ১০টি নির্বাহী আদেশ দিতে পারেন ট্রাম্প

২ সপ্তাহ আগে
প্রথম মেয়াদে মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে প্রথম দিনে ওবামাকেয়ার ইস্যুতে মাত্র একটি নির্বাহী আদেশে স্বাক্ষর করেছিলেন ট্রাম্প। কিন্তু এবার তিনি বেশ কয়েকটি আদেশে সই করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। সোমবার ( ২০ জানুয়ারি) মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নিতে যাচ্ছেন রিপাবলিকান ট্রাম্প।

প্রথম দিনই তিনি যেসব নির্বাহী আদেশে সই করতে পারেন সেগুলো হলো-
 


গণ নির্বাসন কর্মসূচি


প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেয়ার পর প্রথম দিনে অভিবাসন পরিকল্পনা ট্রাম্পের প্রধান এজেন্ডাগুলোর একটি। তিনি আগেই অবৈধ অভিবাসীদের লক্ষ্য করে গণ-নির্বাসন কর্মসূচি শুরু করার অঙ্গীকার করেছেন। ‘প্রথম দিনেই, আমি অপরাধীদের বের করে দেয়ার জন্য আমেরিকান ইতিহাসের সবচেয়ে বড় নির্বাসন কর্মসূচি চালু করব,’ নিউ ইয়র্ক সিটিতে এক সমাবেশে ট্রাম্প বলেন।

 

আরও পড়ুন:শপথ নেয়ার পরপরই অভিবাসীদের বিরুদ্ধে অভিযান চালানোর পরিকল্পনা ট্রাম্পের


জন্মগত নাগরিকত্বের অবসান

 

ট্রাম্প জন্মগত নাগরিকত্ব ( বার্থরাইট সিটিজেনশিপ) বাতিল করারও প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। এই নিয়ম অনুযায়ী, যুক্তরাষ্ট্রের সীমানায় জন্ম নেয়া যেকোনো শিশু জন্মসূত্রে মার্কিন নাগরিকত্ব পেয়ে যায়। ওই শিশুর বাবা–মা যে দেশেরই নাগরিক হোন না কেন, নবজাতক মার্কিন নাগরিক বিবেচিত হয়। কিন্তু প্রথম দিনে এই আইন বদলাতে সই করতে পারেন ট্রাম্প। 


ক্যাপিটল হিলের দাঙ্গাবাজদের ক্ষমা

 

ট্রাম্প ৬ জানুয়ারি, ২০২১ সালে মার্কিন ক্যাপিটলে হামলার জন্য দোষী সাব্যস্ত আসামিদের ক্ষমা করতে নির্বাহী আদেশে সই করতে পারেন। আগেই তিনি এমন ইঙ্গিত দিয়েছেন। ক্ষমার সময়সূচী সম্পর্কে তাকে জিজ্ঞাসা করা হলে ট্রাম্প বলেন, ‘প্রথম দিনের দিকে তাকিয়ে আছি।’ কারণ তিনি জানান, এই বিষয়টি নিয়ে অনেক বিতর্ক হয়েছে। তবে অনেকেই যুক্তি দিচ্ছেন যে ৬ জানুয়ারি হামলায় জড়িতদের ক্ষমা করলে আইনের শাসনকে দুর্বল করা হবে। ২০২০ সালের নির্বাচনে বাইডেন জয় পাওয়ার পর ফলাফল উল্টে দিতে ক্যাপিটল হিলে হামলা চালায় ট্রাম্পের সমর্থকরা।


রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের সমাপ্তি

পররাষ্ট্র নীতির দিক থেকে ট্রাম্প সাহসের সঙ্গে দাবি করেছিলেন যে তিনি ক্ষমতা গ্রহণের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে, এমনকি তার আগেও ইউক্রেনের যুদ্ধ শেষ করতে পারবেন। ‘আমি প্রেসিডেন্ট হওয়ার আগেই এটি নিষ্পত্তি করব,’ ট্রাম্প ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিসের সাথে একটি বিতর্কে বলেছিলেন।

 

আমি ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কিকে খুব ভালোভাবে চিনি এবং আমি রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে খুব ভালোভাবে চিনি। তারা আমাকে সম্মান করে, তারা বাইডেনকে সম্মান করে না, বলেন ট্রাম্প।

 

ট্যারিফ বাস্তবায়ন

ট্রাম্প আমেরিকার দুটি বৃহত্তম বাণিজ্যিক অংশীদার মেক্সিকো ও কানাডা থেকে আমদানি করা পণ্যের উপর শুল্ক আরোপের প্রতিশ্রুতিও দিয়েছেন। এই পদক্ষেপ অর্থনীতিবিদদের মধ্যে উদ্বেগের সৃষ্টি করেছে। যারা যুক্তি দেন যে এই ধরনের শুল্ক মার্কিন অর্থনীতির উপর মারাত্মক এবং ক্ষতিকারক প্রভাব ফেলতে পারে।

 

বাইডেনের ‘ইলেকট্রিক ভেহিক্যাল (ইভি) ম্যান্ডেট’ বাতিল

দায়িত্ব নেয়ার প্রথম দিনেই অর্থনৈতিক ইস্যুতে তিনি বাইডেন প্রশাসনের ‘ইলেকট্রিক ভেহিক্যাল (ইভি) ম্যান্ডেট’ বাতিল করবেন বলে ঘোষণা দিয়েছেন। তিনি বলেন, যেদিন আমি দায়িত্ব গ্রহণ করব, সেদিনই আমি জো-এর বৈদ্যুতিক যানবাহনের আদেশ বাতিল করব। হিউস্টনে একটি প্রচারণা অনুষ্ঠানে ট্রাম্প বলেছিলেন।

 

আরও পড়ুন:খোলাস্থানে হচ্ছে না ট্রাম্পের অভিষেক, কারণ কী?

 

জ্বালানি খাত

ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রে তেল খনন বাড়ানোর প্রতিশ্রুতিও দিয়েছেন। ফক্স নিউজের উপস্থাপক শন হ্যানিটির সাথে একটি সাক্ষাৎকারে ট্রাম্প বলেন, ড্রিল, ড্রিল, ড্রিল। ট্রাম্পের মতে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে তেল উৎপাদন বৃদ্ধি করলে জ্বালানি খরচ ব্যাপকভাবে হ্রাস পাবে। তবে এই পদক্ষেপ পরিবেশগত গোষ্ঠীগুলির মধ্যে উদ্বেগের জন্ম দিয়েছে।


ট্রান্সজেন্ডার অধিকার

ট্রান্সজেন্ডার অধিকার সম্পর্কে ট্রাম্পের অবস্থান বিতর্কের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। তিনি বারবার ট্রান্সজেন্ডার নারীদের পুরুষ হিসেবে উল্লেখ করেছেন এবং ট্রান্সজেন্ডার নারীদের খেলাধুলায় অংশগ্রহণ সীমিত করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। বলেছেন, আমি প্রথম দিনই পুরুষদের নারীদের খেলাধুলা থেকে ১০০ শতাংশ দূরে রাখব।


জেন্ডার–অ্যাফার্মিং কেয়ার

ট্রাম্প লিঙ্গ-নিশ্চিতকরণ অনুশীলন বন্ধ করারও প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, যার মধ্যে হরমোন থেরাপিও অন্তর্ভুক্ত থাকতে পারে। প্রথম দিনই, আমি তথাকথিত 'লিঙ্গ-নিশ্চিতকরণ যত্ন' সম্পর্কে জো বাইডেনের নিষ্ঠুর নীতিগুলো প্রত্যাহার করব। ট্রাম্প তার প্রচারণা ওয়েবসাইটে পোস্ট করা একটি ভিডিওতে বলেছেন।

 

মেড-ইন আমেরিকা উদ্যোগ

এছাড়া ট্রাম্প আমেরিকান অটো শিল্পকে পুনরুজ্জীবিত করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। বলেছেন যে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পকে ভোট দেয়ার অর্থ হলো অটোমোবাইলের ভবিষ্যৎ আমেরিকাতেই তৈরি হবে। যা তিনি প্রধম দিনেই সই করতে পারেন। 

 

সূত্র: এনডিটিভি
 

]]>
সম্পূর্ণ পড়ুন