স্বাধীনতার আকাঙ্ক্ষায় রণাঙ্গনে সমারাস্ত্রের মহড়ায় পুরো জাতি জেনেছিল তাদের কাণ্ডারি হয়ে আসছেন একজন। তিনি মেজর জিয়াউর রহমান, যার দুচোখে স্বপ্ন ছিল স্বাধীন, স্বনির্ভর আত্মমর্যাদাশীল একটি দেশ গঠনে। পাকিস্তানি বাহিনীর ভেতরে থেকে তাদের বিরুদ্ধেই লড়াইয়ের আহ্বান জানান জিয়াউর রহমান।
একাত্তার থেকে পঁচাত্তর-- নানা পটপরিবর্তন, অঘটন আর বিশৃঙ্খলায় নিমজ্জিত ছিল দেশ। দিশেহারা বাংলায় সেপাই জনতার বিপ্লবে আবারও উত্থান ঘটে জিয়াউর রহমানের। এবার যেনো স্বপ্ন বাস্তবায়নের পালা। বাকশালের বাক্সে বন্দি দেশের রাজনীতিকে মুক্ত আর শক্তিশালী একটি প্ল্যাটফর্ম তৈরির আকাঙ্ক্ষায় প্রথমে জাগো দল, পরে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) প্রতিষ্ঠা করেন জিয়াউর রহমান।
১৯৭৮ সালের ১ সেপ্টেম্বর দলটির যাত্রা শুরু হয় দেশের রাজনীতিতে। এর মাধ্যমে খুলে যায় বহুদলীয় রাজনীতির দরজা। এর পরের চার যুগের পথ চলায় নানা উত্থান-পতন আর সংকট থেকে বারা বার ফিনিক্স পাখির মতো জেগে ওঠা দলটি দেশের ক্রান্তিলগ্নে বারবারই নেতৃত্ব দিয়েছে সামনের সারিতে থেকে।
আরও পড়ুন: সংশয় নেই, সঠিক সময়েই নির্বাচন: মির্জা ফখরুল
একটি ভুখণ্ড আর মানচিত্রের ভেতরে থাকা এক জাতিতে রূপান্তরের মধ্য দিয়ে জাতীয়তাবাদের চেতানায় উদ্ধুব্ধ করার যুদ্ধে বারা বার লড়াই করতে হয়েছে দলটিকে। বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলছেন, দলটির প্রতিষ্ঠা না হলে ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত হত স্বপ্নের বাংলাদেশ।
ফখরুল বলেন, শেখ মুজিব ও আওয়ামী লীগের ব্যর্থতা এবং শেখ মুজিবের চলে যাওয়া-- সব কিছু মিলিয়ে রাজনৈতিক শূন্যতা তৈরি হয়েছিল। পরিস্থিতি কাটিয়ে তোলার জন্য আওয়ামী লীগের প্যারালাল কোনো পার্টি ওই সময় ছিল না। জাতিকে ঐক্যবদ্ধ রাখতে তখন মধ্যপন্থি একটা শক্তিশালী রাজনৈতিক দল খুব বেশি প্রয়োজন ছিল। ওই সময় যদি বিএনপি না হত, তাহলে বাংলাদেশ একটা ব্যর্থ রাষ্ট্রের দিকে চলে যাওয়ার আশঙ্কা ছিল।
৪৭ বছর পরে বিএনপির সামনে চ্যালেঞ্জ কী, এমন প্রশ্নোত্তরে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর জানান, জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠা আর তাদের আকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়নে কাজ করে যেতে চায় তার দল। সেই প্রস্তুতিও নিচ্ছেন তারা।
আরও পড়ুন: কোনো আঘাত এলে জবাব দিতে হবে: জাতীয় পার্টির মহাসচিব
তিনি বলেন,
গণ-অভুত্থানের মধ্য দিয়ে বাস্তবতা বেরিয়ে এসেছে। সেই বাস্তবতা মোকাবিলা করে চ্যালেঞ্জগুলো সামনে নিয়েই আমাদেরকে রাজনীতি করতে হবে। দেশে শিল্প, কৃষি, সেবা খাত, কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করার মতো নানা চ্যালেঞ্জর কাজগুলো করতে হবে। এজন্য খুব উদ্ভাবনী বিনিয়োগ পলিসি নিয়েই আগাতে হবে। এসব বিষয়ে বিএনপি আগে থেকেই অবগত। তাই আগে থেকেই পয়েন্ট আউট করে কাজ শুরু করেছে।
বিএনপি মহাসচবি জানান, ৪ যুগের পুরনো দল বিএনপির রাজনৈতিক দর্শনে কোনো পরবির্তন হয়নি বরং বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদকে সামনে রেখেই পথ চলতে চায় তার দল।
]]>