বিশেষ করে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের প্রতি কুরআনের উপদেশগুলো শুধু তার যুগের কাফেরদের নয়, বরং সকল যুগের মানুষদের মানসিকতা, আচরণ ও বাস্তবতার প্রতিচ্ছবি। সুরা আনআম-এর ৩৫নং আয়াতে এমনই একটি বাস্তবতা তুলে ধরা হয়েছে—যেখানে মানুষের অবাধ্যতা ও অযৌক্তিক দাবির মুখে নবীজির মনোভাব এবং আল্লাহর কৌশলগত হিকমত পরিষ্কারভাবে ফুটে উঠেছে।
যদি তাদের উপেক্ষা তোমার কাছে বেশি কষ্টদায়ক হয়, তবে পারলে তুমি ভূগর্ভে সুড়ঙ্গ বা আকাশে সিঁড়ি খুঁজে তাদের জন্য নিদর্শন নিয়ে এসো। আল্লাহ চাইলে সবাইকে হিদায়াতে আনতেন, কাজেই তুমি অজ্ঞদের অন্তর্ভুক্ত হয়ো না।
আরও পড়ুন: যুদ্ধবিরতি নিয়ে ইসরাইলের নতুন প্রস্তাব, কী ভাবছে হামাস?
এ আয়াতে আল্লাহ্ তাআলা রসুল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে সান্ত্বনা ও বাস্তবতা বোঝাচ্ছেন যে, কাফেরদের জেদ ও অবিশ্বাস তাদের একান্ত মনোবৃত্তির ফল। যদি তিনি তাদের মন মত মুজিযা এনে দেন, তবুও তারা ঈমান আনবে না। আল্লাহ চাইলে সবাইকে হিদায়াত দিতেই পারতেন, কিন্তু তিনি দিয়েছেন চিন্তার স্বাধীনতা, যাতে মানুষ নিজে থেকেই সত্য গ্রহণ করে। কারণ ঈমান জবরদস্তির মাধ্যমে গ্রহণযোগ্য নয়।
এই আয়াত আমাদের শেখায়, আল্লাহর হিদায়াত একটি অমূল্য নেয়ামত যা শুধু তাদের জন্য, যারা সত্যের খোঁজে মন উন্মুক্ত রাখে। যারা হঠকারিতা, জেদ ও অহংকারে ডুবে থাকে, তাদের জন্য শত মুজিযাও যথেষ্ট হয় না।
এ আয়াত আমাদের যেমন ধৈর্য ও দাওয়াতি আদব শেখায়, তেমনি হিকমতের সাথে পথপ্রদর্শনের দিকটিও তুলে ধরে। অতএব, ঈমান আনার পূর্বশর্ত হলো বিনয় ও অনুসন্ধানী মন, আর দাওয়াতদাতার দায়িত্ব হলো আন্তরিকতা ও দৃঢ়তা।
]]>