রাজধানীর পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্পের ১ নম্বর সেক্টরের ২০১ রোডে একটি ১০ কাঠার প্লটে অস্থায়ী আবাস গড়েছেন মোরশেদ। ৫ আগস্টের পর থেকে জমির প্রকৃত মালিকের খোঁজ না থাকায় ভিটেমাটিহীন নীলা মার্কেটের এই দোকানির টিনের ছাউনিতে আপতত মাথার গোজার ঠাঁয় মিলেছে।
মোরশেদের স্ত্রী আমেনা বলেন, ‘এই প্লটটা খায়রুল সাহেবের। তারা দীর্ঘদিন ধরে আসে না বলে আমরা ঘর তুলে থাকতেছি।’
মোরশেদও জানালেন একই কথা। বলেন, আমরা বসবাস শুরু করার পর থেকে কেউ আসে না দেখি। তবে মালিকপক্ষ এলে আমরা তো জোর করে থাকতে পারবো না, এখান থেকে ঘর সরিয়ে নিবো।’
তবে দুর্নীতি দমন কমিশন বলছে, এই প্লটটি সাবেক প্রধান বিচারপতি এবিএম খায়রুল হকের। ২০০৩ সালে বিচারপতি কোটায় প্লট বরাদ্দ পান তিনি। তবে নিয়মমাফিক কিস্তি না দেয়ায় এই প্লট বরাদ্দ স্থগিত রাখে তৎকালীন রাজউক কর্তৃপক্ষ।
২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় এলে ফের প্লট পুনরুদ্ধারে তৎপরতা শুরু করেন খায়রুল হক। মানা হয়নি কোন নিয়মনীতি। আওয়ামী লীগ সরকারের প্রভাবে কিস্তিসহ সুদ পরিশোধ না করে ২০ লাখ টাকার ১০ কাঠা প্লট মাত্র সাড়ে ছয় লাখ টাকায় বাগিয়ে নেন তিনি। সম্প্রতি অভিযানে যেয়ে দুদকের টিম অনিয়মের সত্যতা পায়।
দুদকের উপ-পরিচালক আকতারুল ইসলাম বলেন, ‘রাজউক এবং গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের অসাধু কর্মকর্তাদের যোগসাজশে বিধি বহির্ভূতভাবে পূর্বাচলে নতুন শহর প্রকল্পে সাবেক প্রধান বিচারপতি খায়রুল হকের নামে ১০ কঠার প্লটটি বরাদ্দ দেয়া হয়েছিল। অনুসন্ধানকারী দল অনিয়মের সত্যতা পেয়েছে।’
আরও পড়ুন: সাবেক প্রধান বিচারপতি খায়রুল হককে গ্রেফতারের দাবিতে বিক্ষোভ
দুর্নীতি বিরোধী জাতীয় সমন্বয় কমিটির যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক শাহজাহান সাজু বলেন, ‘১০ কাঠার প্লটের এই দুর্নীতিতো কোনো বিষয়ই না। আসল বিষয় হলো এই বিচারপতি জাতিকে ধ্বংস করে দিয়ে গেছেন। দেশের বিচার ব্যবস্থাকে ধ্বংস করেছে।’
আওয়ামী লীগ সরকারের সুবিধাভোগী এই বিচারপতিকে বিচারের মুখোমুখি করার আহ্বান জানান তিনি।
দেশের বিচার বিভাগ ও গণতন্ত্র ধ্বংসের মূল কারিগর বলা হয় এবিএম খায়রুল হককে। ৫ আগস্টের পর লোকচক্ষুর অন্তরলে চলে যান তিনি। তাকে গ্রেফতারের দাবি জানিয়ে আসছে, ফ্যাসিবাদ বিরোধী বিভিন্ন রাজনৈতিক দলগুলো।
]]>