পূজার ছুটিতে নিতে পারেন শ্রীমঙ্গলের অপরূপ স্বর্গীয় অভিজ্ঞতা, যেভাবে যাবেন

১ সপ্তাহে আগে
বাংলাদেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের মণিপুরী পাহাড়ের পাদদেশে অবস্থিত শ্রীমঙ্গল। এটি মৌলভীবাজারের একটি উপজেলা। যা ‘চায়ের রাজধানী’ হিসেবে পরিচিত। প্রকৃতিপ্রেমী ও ভ্রমণপিপাসুদের জন্য এক অপূর্ব গন্তব্য। এই ছোট্ট জায়গাটি মণিপুরী, কুকি, চাকমা, বাঙালিসহ বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠীর সমাহারে এক বৈচিত্র্যময় সাংস্কৃতিক পরিবেশ সৃষ্টি করেছে।

চায়ের বাগান, টিলা, অরণ্য এবং নদী শোভিত পরিবেশ এই অঞ্চলের অন্যতম প্রধান আকর্ষণ। আসন্ন দুর্গাপূজার ছুটিতে আপনিও নিতে পারে শ্রীমঙ্গলের অপরূপ স্বর্গীয় অভিজ্ঞতা।

 

মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল যাওয়ার জন্য সেরা সময় হলো অক্টোবর থেকে মার্চ। যখন আবহাওয়া প্রশান্ত ও শীতল থাকে। বর্ষাকালে বৃষ্টি হলে কিছু জায়গায় যাওয়ার পথ বন্ধ হতে পারে, তবে সেই সময়ে প্রকৃতি দেখতে আলাদা এক আনন্দ পাওয়া যায়।

 

দর্শনীয় স্থান

 

লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যান, নুরজাহান ও সাতগাঁও চা বাগান, মাধবপুর লেক, খাসিয়া ও মণিপুরি পল্লী, শ্রীমঙ্গল চা জাদুঘর, মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিবিজড়িত বধ্যভূমি-৭১ ও ডিনস্টন সিমেট্রি।

 

চা ছাড়াও শ্রীমঙ্গলে প্রচুর আনারস, লেবু ও রাবার বাগান রয়েছে। যা দেখতে আকর্ষণীয়। বাংলাদেশ বন্যপ্রাণি সেবা ফাউন্ডেশনেও যেতে পারে। এছাড়া রয়েছে চাকন্যা ভাস্কর্য এবং নির্মাই শিববাড়ি। এগুলো স্থানীয় সংস্কৃতি ও ধর্মীয় ঐতিহ্যকে তুলে ধরে।

 

যেভাবে যাবেন

 

শ্রীমঙ্গল যাওয়া খুবই সহজ এবং ভ্রমণ পিপাসুদের জন্য একটি দারুণ অভিজ্ঞতা হতে পারে। এখানে বিভিন্ন উপায়ে শ্রীমঙ্গলে পৌঁছানো সম্ভব।

 

  • বাসে যাত্রা

ঢাকা থেকে শ্রীমঙ্গলে যাওয়ার সবচেয়ে সহজ এবং জনপ্রিয় উপায় হলো বাস। মহাখালী টার্মিনাল ও সায়েদাবাদ টার্মিনাল হলো বাসের অন্যতম স্টপেজ। শ্রীমঙ্গলের বাস স্টপেজে নেমে আপনার গন্তব্যে যেতে পারবেন। ঢাকা থেকে শ্রীমঙ্গল পর্যন্ত বাস চলাচলের সময় প্রায় ৬-৭ ঘণ্টা। তবে, ট্রাফিকের ওপর ভিত্তি করে সময় একটু বেশি হতে পারে।

 

শ্রীমঙ্গল উদ্দেশ্যে যাত্রা করার অনেক বাস সার্ভিস রয়েছে। এরমধ্যে রয়েছে- শ্রীমঙ্গল এক্সপ্রেস, গোল্ডেন লাইন, মেট্রো লাইন্স, সুন্দরবন পরিবহন।

 

বাসের ভাড়া সাধারণত ৫০০-৭০০ টাকা (সাধারাণ শ্রেণি থেকে অত্যাধুনিক বাসের জন্য)। কিছু বিলাসবহুল বাসে ভাড়া একটু বেশি হতে পারে।

 

  • ট্রেনে যাত্রা

ট্রেন হলো ঢাকা থেকে শ্রীমঙ্গল যাওয়ার আরেকটি জনপ্রিয় এবং আরামদায়ক উপায়। ট্রেনের যাত্রা বেশ আরামদায়ক এবং যাত্রাপথে প্রকৃতি উপভোগ করা যায়। পারাবত এক্সপ্রেস, জয়ন্তিকা এক্সপ্রেস, উপবন এক্সপ্রেস, কালনী এক্সপ্রেস ট্রেনে আপনি শ্রীমঙ্গল যেতে পারেন।


ঢাকা থেকে শ্রীমঙ্গল ট্রেনে যাওয়ার সময় সাধারণত ৬-৭ ঘণ্টা। তবে মাঝে মাঝে দেরি হতে পারে যদি ট্রেনটি বিলম্বিত হয়। ট্রেনে শোভন চেয়ার কোচের ভাড়া ২৭৫ টাকা, প্রথম শ্রেণির কোচের ভাড়া প্রায় ৪২০ টাকা, স্নিগ্ধা কোচের ৫২৪ টাকা, এসি কোচের ভাড়া ৬২৭ টাকা, এস বার্থ কোচের ভাড়া ৯৩৮ টাকা।

 

ঢাকার কমলাপুর ও বিমানবন্দর স্টেশন থেকে থেকে ট্রেন ছেড়ে যায়। শ্রীমঙ্গল রেলস্টেশনে নেমে সিএনজিচালিত ও ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা যেকোনো স্থানে পৌঁছানো যায়।

 

  • ব্যক্তিগত গাড়ি

ব্যক্তিগত গাড়িতেও শ্রীমঙ্গল যাত্রা আরামদায়ক হয়। ঢাকা থেকে শ্রীমঙ্গল যাওয়ার জন্য প্রধান রাস্তা ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক। এই সড়ক ধরে আপনি সরাসরি শ্রীমঙ্গলের দিকে যেতে পারবেন। প্রায় ৬-৭ ঘণ্টা সময় লাগে ব্যক্তিগত গাড়িতে। সাধারণত, ব্যক্তিগত গাড়ি বা ক্যাবের ভাড়া ৭ হাজার থেকে ১০ হাজার টাকা গুনতে হতে পারে।

]]>
সম্পূর্ণ পড়ুন