তিনি বলেন, ‘নৌপথে অভিযান ও টহল জোরদার করার জন্য কোস্টগার্ডকে আরও শক্তিশালী করা হচ্ছে। সেজন্য কোস্টগার্ডকে আরও ৫টি জলযান দেয়ার পরিকল্পনা রয়েছে সরকারের। যাতে সুন্দরবনের কোথাও জেলে অপহরণের খবর পেলেই সেখানে দ্রুত গিয়ে যেন দস্যুদের প্রতিহত করতে পারে। এছাড়া প্রশাসন প্রস্তুত রয়েছে, সুন্দরবনে নতুন করে মাথাচাড়া দিয়ে ওঠা জলদস্যু ও বনদস্যুদের অচিরেই নির্মুল করা হবে।’
শনিবার (১৭ মে) দুপুরে কোস্টগার্ড পশ্চিম জোন বেইস মোংলায় নবনির্মিত বোট ওয়ার্কশপ ও স্লিপওয়ের উদ্বোধনকালে তিনি এ কথা বলেন।
এসময় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের যুগ্ম সচিব মু. জসীম উদ্দিন খান, বাংলাদেশ কোস্টগার্ডের মহাপরিচালক রিয়ার এডমিরাল মো. জিয়াউল হক, মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার এডমিরাল শাহিন রহমান ছাড়াও আমন্ত্রিত অতিথিদের মধ্যে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের সচিব, বাংলাদেশ নৌবাহিনী, নৌ-পুলিশ, বন বিভাগ ও মোংলা বন্দরের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: সুন্দরবনে ‘বয়েসিং ভাসমান বিওপি’ উদ্বোধন করলেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
মোংলা কোস্টগার্ড সূত্র জানায়, গত বছরের ১১ জানুয়ারি এই প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হয়। মোংলায় এই প্রথম সর্বাধুনিক প্রযুক্তিতে নির্মিত এই বোট ওয়ার্কশপ ও স্লিপওয়ের মাধ্যমে ২০ মিটার দৈর্ঘ্যের বোট বা জলযান ডকিং ও যেকোনো ধরনের মেরামত কার্যক্রম পরিচালনা করা সম্ভব হবে। বোট ওয়ার্কশপ ও স্লিপওয়ে কোস্টগার্ডের পশ্চিম জোনের একমাত্র স্থাপনা, যার মাধ্যমে কোস্টগার্ডের পাশাপাশি ভবিষ্যতে বাংলাদেশ নৌবাহিনী, বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ, মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষ, নৌ-পুলিশ, সুন্দরবনের বন বিভাগ এবং বিআইডব্লিউটিএ-সহ সরকারি বিভিন্ন প্রশাসনিক প্রতিষ্ঠানের নৌযানসমূহ মেরামতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। পরবর্তীতে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা আনুষ্ঠানিকভাবে বোট ওয়ার্কশপ ও স্লিপওয়ের নাম ফলক উন্মোচন করেন।
এ উন্নয়ন কার্যক্রমের মাধ্যমে বাংলাদেশ কোস্টগার্ডের সক্ষমতা ও পরিসেবার মান বাড়াতে আরও এক মাইলফলক হিসেবে বিবেচিত হবে। তাই বাংলাদেশ কোস্টগার্ডকে আরও আধুনিক ও শক্তিসালী বাহিনীতে রুপান্তরিত করাসহ দেশের উন্নয়নের ধারাকে অব্যাহত রাখতে সংবাদকর্মীদের লেখনির মাধ্যমে সহায়তা চাইলেন উপদেষ্টা।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা আরও বলেন, ‘কোস্টগার্ড এবং বিজিবি দেশের উপকূল ও সমুদ্রসীমায় যেভাবে কাজ করছে তা প্রশংসনীয়। সুন্দরবনের মান্দারবাড়িয়া গিয়েছি, যেখানে ইতোপূর্বে ৭৮ জন লোককে পুশইন করেছিল, যা কোস্টগার্ড দক্ষতার সঙ্গে তাদের উদ্ধার করেছে। আগামীতে যেন এরকম ঘটনা আর না ঘটে, সে জন্য আমরা ভারতকে স্পষ্ট বলেছি, আমাদের দেশের লোক যদি তোমাদের দেশে থেকে থাকে, তাহলে পুশইন না করে সরকারের মাধ্যমে ফেরৎ দাও, যেমন আমরা দিয়েছি।’
আরও পড়ুন: সীমান্তে অপরাধ দমনে কাজ করবে ভাসমান বিওপি: বিজিবি মহাপরিচালক
তিনি বলেন, ‘দেশে এখন মানুষ-মানুষের প্রতি মায়া কমে গেছে, ছেলে-বাবাকে হত্যা করছে, মেয়ে-মাকে এবং মা মেয়েকে হত্যা করছে। এর মূল বড় সমস্যা হলো দেশে মাদকাসক্ত বৃদ্ধি পাওয়া।’
এ দেশ থেকে মাদক আর দুর্নীতি বন্ধ করতে পারলে বাংলাদেশ আরও এগিয়ে যাবে বলে জানান স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।