পুলিশের সামনেই অস্ত্র নিয়ে ভুক্তভোগীদের ওপর হামলা, আহত ৩

১৬ ঘন্টা আগে
চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জে পারিবারিক বিরোধকে কেন্দ্র করে এক গৃহবধূকে মারধরের পর উপস্থিত পুলিশের সামনেই দেশীয় অস্ত্র (প্যাডেল রিকশার চেইন সেট ও লোহার হাতল দিয়ে প্রস্তুতকৃত) নিয়ে হামলার ঘটনা ঘটেছে।

রোববার (২৪ আগস্ট) বিকেলে উপজেলার সুবিদপুর পশ্চিম ইউনিয়নের ভোলাচৌ গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। তবে ঘটনার একদিন পর সোমবার (২৫ আগস্ট) পর্যন্ত থানার পুলিশ কোনো অভিযুক্তকে আটক করতে পারেনি।

 

হামলার ঘটনায় আহত হয়েছেন গৃহবধূ তাহমিনা বেগম, তার শিশু কন্যা ও ভাই মিলন। এ বিষয়ে সোমবার দুপুরে আদালতে মামলা দায়ের করা হয়েছে।

 

আরও পড়ুন: রাজধানীর কদমতলীতে ছুরিকাঘাতে প্রাণ গেল যুবকের

 

জানা গেছে, প্রায় ১০ বছর আগে ফরিদগঞ্জ উপজেলার কৃষ্ণপুর গ্রামের তাহমিনা বেগমের বিয়ে হয় একই উপজেলার ভোলাচৌ গ্রামের মানিক হোসেনের সঙ্গে। তাদের সংসারে একটি আট বছর বয়সী কন্যা সন্তান রয়েছে। চার বছর আগে তাদের মধ্যে পারিবারিক কলহ শুরু হয়। একাধিক সালিশ হলেও চলতি বছর এপ্রিল মাসে তাদের বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটে। দেনমোহর ও অন্যান্য পাওনা বাকি থাকায় তাহমিনা কন্যাকে নিয়ে স্বামীর বাড়িতেই বসবাস করছিলেন।

 

তবে রোববার আদালতে হাজিরা দিয়ে এসে মানিক মিয়া তাহমিনাকে বাড়ি থেকে বের করে দিতে মারধর করেন। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। ঘটনার সময় সহকারী উপপুলিশ পরিদর্শক (এএসআই) সঞ্জয় সঙীয় একটি দল নিয়ে উপস্থিত থাকলেও মানিক মিয়া ও তার ভাই জাকির হোসেন পুলিশের সামনেই দেশীয় অস্ত্র নিয়ে তাহমিনার ভাই মিলনকে ধাওয়া করে কুপিয়ে আহত করেন।

 

পুলিশ চেষ্টা করেও অস্ত্রধারীদের নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হয়। পরে থানার অতিরিক্ত পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। তবে হামলায় ব্যবহৃত অস্ত্র উদ্ধার বা জব্দ করা হয়নি। বরং পুলিশ উভয়পক্ষের বক্তব্য শুনে নতুন করে সালিশ ডাকার কথা বলে ঘটনাস্থল ত্যাগ করে। এতে পুলিশের ভূমিকা নিয়ে স্থানীয়দের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে।

 

ভুক্তভোগী তাহমিনা বেগম বলেন, ‘আমার স্বামী আমাকে তালাক দিয়েছে। দেনমোহর ও খরচ পরিশোধ না করায় আমি মেয়েকে নিয়ে তার বাড়িতে থাকছি। তবে অন্যের বাড়িতে কাজ করে মেয়েকে নিয়ে জীবিকা নির্বাহ করছি। রোববার স্বামী ও ভাসুর আমাকে ও মেয়েকে মারধর করে। পরে আমার ভাই আমাকে দেখতে আসলে পুলিশ উপস্থিত থাকা অবস্থায় তাকেও অস্ত্র দিয়ে কুপিয়েছে। আমি আদালতে মামলা করেছি এবং ন্যায়বিচার চাই।’

 

আরও পড়ুন: টেকনাফে শিশুকে ধর্ষণের পর হত্যা, আসামির ১০ বছরের কারাদণ্ড

 

অভিযুক্ত স্বামী মানিক মিয়া বলেন, ‘আমি তাকে ৩ মাস আগে তালাক দিয়েছি। সে কেন আমার ঘরে থাকবে, তাই আমি তাকে বের করে দিয়েছি।’

 

তবে রাষ্ট্রীয় আইন অনুযায়ী স্ত্রীর দেনমোহরসহ সব পাওনা দিয়েছেন কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে কোনো উত্তর দেয়নি মানিক মিয়া।

 

ফরিদগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ শাহ আলম বলেন, ‘ঘটনাস্থলে যদি ফৌজদারি অপরাধ ঘটে থাকে তবে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। চিহ্নিত অস্ত্রধারীর বিরুদ্ধেও কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’

]]>
সম্পূর্ণ পড়ুন