খুলনা-রাজশাহী ও খুলনা-চিলাহাটি রুটসহ উত্তরাঞ্চলের সঙ্গে সংযোগ স্থাপনকারী রেললাইনগুলোর বয়স ৫০ বছরেরও বেশি। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এসব লাইনের বিভিন্ন অংশে ফাটল, বক্রতা, ভারসাম্যহীনতা ও কাঠামোগত সমস্যা দেখা দিয়েছে। ফলে যাত্রার শুরু থেকেই যাত্রীদের পড়তে হয় দুলুনি আর আতঙ্কের মধ্যে।
খুলনা থেকে রাজশাহীগামী কপোতাক্ষ ও সাগরদাড়ি ট্রেন, পাশাপাশি রূপসা ও সীমান্ত এক্সপ্রেস ট্রেনেও যাত্রীরা একই দুর্ভোগে পড়ছেন। প্রতিদিন গড়ে প্রতিটি ট্রেনে এক হাজারেরও বেশি যাত্রী যাতায়াত করেন। রেললাইনের বেহাল অবস্থার কারণে গত এক বছরে ছোট-বড় মিলিয়ে অন্তত ১২টি দুর্ঘটনা ঘটেছে বলে জানা গেছে।
গত মঙ্গলবার (৩ জুন) রাজশাহী থেকে খুলনাগামী সাগরদাড়ি ট্রেনে যাত্রা করেন বেলায়েত হোসেন নামে এক যাত্রী। তিনি বলেন, ‘রাজশাহী থেকে খুলনায় আসার পথে পুরো পথটাই বিরক্তিকর লেগেছে। কিছু সময় পরপর ট্রেন প্রচণ্ড ঝাঁকি দেয়, মনে হয় এখনই লাইন থেকে পড়ে যাবে। প্রতিটা বাঁকে খুব ভয় লাগে।’
আরও পড়ুন: খুলনায় আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভা: ঈদে নিরাপত্তা জোরদারের নির্দেশ
একই ট্রেনে থাকা শিক্ষার্থী বিলকিস আক্তার বলেন, ‘পড়াশোনার জন্য প্রতি সপ্তাহেই রাজশাহী থেকে খুলনায় যাতায়াত করতে হয়। গত দুই বছর ধরে ট্রেনে যাতায়াত করছি। সব সময়ই ভয়ে থাকি। সিঙ্গেল লাইন হওয়ায় ক্রসিংয়ে সময় বেশি লাগে। এখানে ডাবল লাইন করা খুবই জরুরি।’
লাইনের ত্রুটির কারণে চালকদেরও অনেক স্থানে ট্রেনের গতি কমিয়ে চালাতে হয়, ফলে নির্ধারিত সময়ে পৌঁছানো সম্ভব হয় না।
সাগরদাড়ি ট্রেনের চালক (লোকমাস্টার) রইস উদ্দিন বলেন,
খুলনা থেকে রাজশাহী যাওয়ার পথে পাঁচ-ছয়টি স্থানে গতি রেস্ট্রিকশন রয়েছে। এসব জায়গায় ট্রেনের গতি ৮০/৯০ কিলোমিটার থেকে কমিয়ে ৪০/৫০ কিলোমিটার রাখতে হয়। কিছু জায়গায় লাইনের অবস্থা খুবই খারাপ।
রেল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, খুলনা থেকে দৌলতপুর পর্যন্ত রেললাইন রিনিউয়াল সম্পন্ন হয়েছে এবং ধাপে ধাপে পুরো রুটেই সংস্কারকাজ হবে।
বাংলাদেশ রেলওয়ের যশোর বিভাগীয় উপসহকারী প্রকৌশলী চাঁদ আহমেদ বলেন,
যখনই লাইনে ত্রুটি ধরা পড়ে, সঙ্গে সঙ্গে তা সংস্কার করা হয়। এখন লাইনের অবস্থা আগের তুলনায় অনেক ভালো। দৌলতপুর পর্যন্ত স্লিপার পরিবর্তন করে লাইন রিনিউয়াল করা হয়েছে। পর্যায়ক্রমে পুরো রুটেই রিনিউয়াল কাজ সম্পন্ন হবে।
]]>