পিরোজপুরে মাটি থেকে তৈরি হচ্ছে লবণ!

২ সপ্তাহ আগে
পিরোজপুরে আগুনের চুল্লিতে মাটি জ্বালিয়ে উৎপাদন করা হচ্ছে ঝরঝরে লবণ। বিভিন্ন এলাকা থেকে লবণাক্ত মাটি এনে প্রাচীন পদ্ধতিতে তৈরি হচ্ছে এই লবণ। আসন্ন কোরবানিকে ঈদকে সামনে রেখে ব্যস্ত সময় পার করছেন লবণ তৈরির কারিগরেরা।

পিরোজপুর জেলা শহর থেকে প্রায় ৬৫ কিলোমিটার দূরে নেছারাবাদ উপজেলার ডুবি গ্রামের ঘরে ঘরে প্রাচীন পদ্ধতিতে লবণাক্ত মাটি থেকে তৈরি হচ্ছে বিভিন্ন প্রকারের লবণ। প্রায় ৫০ বছর ধরে এ গ্রামে লবণ তৈরি করা হয়। এখনো কয়েকশ পরিবার ধরে রেখেছে তাদের এই পেশা।

 

প্রথমে ঝালকাঠি, খুলনা, চট্টগ্রাম, কক্সবাজার থেকে লবণাক্ত মাটি এনে মজুত করা হয়। পরে লবণাক্ত মাটি পানির সাথে গলিয়ে বিভিন্ন ধাপে পানির উপর থেকে ময়লা এবং কিছু পানি তুলে ফেলা হয়। পরবর্তীতে সেই লবণাক্ত পানি প্রচণ্ড তাপে চার কোনা ডোঙ্গায় ফোটানো হয়। ফুটতে ফুটতে একসময় পানি বাষ্প হয়ে উড়ে গেলে পড়ে থাকে লবণ।

 

এ ব্যবসাকে কেন্দ্র করেই এখানে গড়ে উঠেছে লবণ ফ্যাক্টরি। এই লবণ নিকটস্থ লবণ ফ্যাক্টরিতে বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করছে কয়েকশ পরিবার। ডুবি গ্রামের লবণ তৈরির কারিগর গফুর মিয়া বলেন, স্বাধীনের আগ থেকেই আমাদের এখানে লবণ তৈরি হতো। বাপ দাদার পেশা তাই এখনো এই পেশা ধরে রেখেছি। প্রচণ্ড গরমের মধ্যেও ১৫-১৬ ঘণ্টা আগুনের পাশে কাজ করি । যা উপার্জন হয় তা দিয়ে কোনোরকম জীবন চলে যায়।

 

আরও পড়ুন: নাটোর / লবণের দাম বাড়ায় ঈদে চামড়া বেচাকেনা নিয়ে শঙ্কায় ব্যবসায়ীরা

 

আগুনে জ্বাল দেয়ার কারণে লবণটা পুরোপুরি জীবনু মুক্ত হয়। মূলত প্রাচীন উপায়ে চুল্লিতে জ্বাল দেয়া লবণ মেশিনের মাধ্যমে আয়োডিন যুক্ত করা হয়। পরে প্যাকেট করে বাজারজাত করা হয়। এবং এই লবণই খাবার লবণ ও শিল্প লবণ হিসেবে ব্যবহৃত হয়। আসন্ন কোরবানিকে সামনে রেখে লবণ তৈরির শ্রমিকদের ব্যস্ততা বেড়েছে কয়েকগুণ।

 

লবণ তৈরির ফ্যাক্টরির শ্রমিক ধীরেন্দ্রনাথ বলেন, সামনে কোরবানি তাই আমরা লবণ তৈরিতে ব্যস্ত সময় পার করছি। কোরবানির জন্য লবণের প্রচুর চাহিদা রয়েছে। তাই দিনরাত আমরা লবণ তৈরি এবং প্যাকেট করতে ব্যস্ত। ডুবি গ্রামে প্রায় দুই হাজার মানুষ এই পেশার সঙ্গে জড়িত। আমরা এখানে কাজ করে যা উপার্জন হয় তা দিয়ে কোন রকমের জীবন চলে যায়।

 

পিরোজপুর বিসিক কার্যালয়ের উপব্যবস্থাপক এইচ এম ফাইজুর রহমান বলেন, আসন্ন কোরবানিকে সামনে রেখে পশুর চামড়া সংরক্ষণের জন্য লবণের চাহিদা পূরণের জন্য তৎপর রয়েছে বিসিক। লবণ শিল্প বিকাশের সঙ্গে জড়িতদের ঋণ সহায়তা ও পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছে বিসিক।

 

শিল্প ও ভোজ্য লবণ মিলিয়ে বছরে এখান থেকে ১ হাজার ৫০০ মেট্রিকটন লবণ উৎপাদন হয়। আর লবণ শিল্পকে কেন্দ্র করে এখানে কর্মসংস্থান তৈরি হয়েছে ২ হাজারেরও অধিক মানুষের।

]]>
সম্পূর্ণ পড়ুন