বন বিভাগ সূত্রে জানা যায়, সুন্দরবনে ছেড়ে দেয়া পাঁচ কুমির পিঠে স্যাটেলাইট ট্রান্সমিটার নিয়ে প্রায় এক হাজার ৪৬ কিলোমিটার নৌপথ ঘুরেছে। শিকার খোঁজা, খাবার, ডিম পাড়ার জন্য কুমিরগুলো ২৪ ঘণ্টায় দেড় থেকে দুই কিলোমিটার এলাকায় ঘোরাঘুরি করে।
সুন্দরবনে কুমিরের জীবনাচরণ, অধিক্ষেত্র, বিতরণ ও ব্যবস্থাপনা বিষয়ে জানতে গত বছরের ১৩ মার্চ প্রথমবার দুটি কুমিরের শরীরে স্যাটেলাইট ট্রান্সমিটার লাগানো হয়। পর্যায়ক্রমে আরও তিনটি কুমিরের শরীরে স্যাটেলাইট লাগিয়ে সুন্দরবনের খালে ছাড়া হয়। এরমধ্যে চারটি কুমির সুন্দরবনের ভেতরের খালেই চলাচল করে। জোংড়া নামে একটি কুমির বাগেরহাট, বরিশাল, পিরোজপুর ঘুরে আবার সুন্দরবনে ফিরেছে।
গবেষণাকাজে নেতৃত্ব দিয়েছে আইইউসিএনের বাংলাদেশ দল। তাদের সহযোগিতা করছে জার্মান ফেডারেল মিনিস্ট্রি ফর ইকোনমিক কো-অপারেশন অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট।
আরও পড়ুন: ৩ মাস পর ফের খুলছে সুন্দরবনের দুয়ার
আইইউএসএনের ‘ইন্টিগ্রেটেড ম্যানেজমেন্ট অব সুন্দরবন ম্যানগ্রোভস অ্যান্ড দ্য মেরিন প্রটেকটেড এরিয়া সোয়াচ অব নো গ্রাউন্ড বাংলাদেশ’ প্রকল্পের আওতায় গবেষণাটি পরিচালিত হয়।
গবেষণার সুবিধার জন্য পাঁচটি কুমির সংগ্রহ করে আলাদা নাম দেয়া হয়– জুলিয়েট, মধু, পুটিয়া, জোংড়া ও হারবারিয়া। এর মধ্যে জুলিয়েট, মধু, পুটিয়া ছিল স্ত্রী কুমির। হারবারিয়া ও জোংড়া পুরুষ। স্যাটেলাইট সচল থাকা অবস্থায় জুলিয়েট ১৪৫, মধু ১৭০, পুটিয়া ২০৪, হারবারিয়া ৫১ ও জোংড়া ৪৭৩ কিলোমিটার নৌপথ ঘুরেছে।
এ বিষয়ে খুলনা অঞ্চলের বন সংরক্ষক ইমরান আহমেদ বলেন, ‘কুমিরের জীবনাচরণ সম্পর্কে মোটামুটি ধারণা পেয়েছি আমরা। জোংড়া নামে যে কুমিরটি দূরের এলাকা ঘুরে বেড়িয়েছে সেটি মূলত করমজল বন্যপ্রাণী প্রজনন কেন্দ্রের। এর গণ্ডি ছিল স্বল্প। নদীতে ছেড়ে দেয়ার পরে এক বিশাল দুনিয়া সে পেয়েছে। সে কারণেই হয়তো যেদিক পথ পেয়েছে, খাবার দেখেছে ছুটেছে। অন্য কুমিরগুলো সুন্দরবনের মধ্যেই ছিল। আরও বিস্তারিত জানতে নতুন পরিকল্পনাও রয়েছে।’