পাহাড়ি বিলেতি ধনেপাতায় ২০০ কোটি টাকার বাণিজ্য

১ সপ্তাহে আগে
রাঙ্গামাটির পাহাড়ের পাদদেশে বাঁশের মাচা। দেখে মনে হতে পারে পানের বরজ। এই ছাউনির নিচে তাকালে চোখে পরবে লম্বা পাতা বিশিষ্ট এক জাতীয় সবুজ উদ্ভিদ। এটিই হলো বিলেতি ধনেপাতা। দেশজুড়ে সৃষ্টি হয়েছে এই ধনে পাতার চাহিদা। ফলে এর বাজার ছাড়িয়েছে ২০০ কোটি টাকা বলে জানায় কৃষি বিভাগ।

সংশ্লিষ্টরা জানান, জেলায় কৃষি ভিত্তিক অর্থনীতিতে চমক দেখাচ্ছে বিলেতি ধনিয়া পাতা। উপযুক্ত ভূমি ও অনুকূল পরিবেশের কারণে লাভজনক ফসল হওয়ায় বিলাতি ধনিয়া পাতার চাষ দিন দিন বেড়েই চলেছে।


সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, জেলার কাউখালী, কাপ্তাই বিলাইছি উপজেলার প্রায় প্রতিটি গ্রামে গেলেই চোখে পড়বে, সবাই সবে গল্পের ছলে বাছাই করছে ধনে পাতা। পরে সেগুলো আঁটি বেঁধে নেয়া হয় বাজারে। বেপারিদের হাত ধরে এই ধনে পাতা চলে যায় দেশের বিভিন্ন জেলায়।


কৃষি বিভাগ বলছে, পাতা জাতীয় ফসলটি সুগন্ধযুক্ত, উচ্চ পুষ্টি ও ভেষজগুণ সমৃদ্ধ এই সবজিটির এখন সারা দেশে ব্যাপক চাহিদা সৃষ্টি হয়েছে। তবে এই ফসল জলাবদ্ধতা সইতে পারে না। এগুলো চাষের জন্য জমিতে যেমন রস থাকতে হয়, তেমনি পানি দ্রুত নিষ্কাশন হতে হয়। এসব বিবেচনায় পার্বত্য অঞ্চল এই ধনেপাতা চাষের আদর্শ স্থান হয়ে উঠেছে। আর চাহিদা থাকায় বিলেতি ধনেপাতা এখন পার্বত্য অঞ্চলের অন্যতম অর্থকরী ফসল হিসাবে স্থান করে নিয়েছে।


আরও পড়ুন: লালমিতে হাসছে ফরিদপুরের কৃষক, ৪৫ কোটি বাণিজ্যের টার্গেট!


এ ছাড়া এই সবজি উৎপাদনে আলো-ছায়ার প্রয়োজন হয়। ফলে মাচা দিয়ে একইসঙ্গে সাথী ফসল হিসাবে বিভিন্ন সবজিও চাষ করা হয়। অধিক লাভজনক হওয়ায় এই ধনেপাতা চাষে ঝুঁকছেন কৃষক।


এ বিষয়ে কৃষক অমিও চাকমা বলেন, ‘এবার এক একর জমিতে বিলেতি ধনেপাতা চাষ করেছি। বাজারে এখন এক কেজি ধনেপাতা ৮০ থেকে ৯০ টাকা দরে বিক্রয় হচ্ছে। সে হিসেবে প্রায় দুই থেকে আড়াই লাখ টাকার বিক্রয় করা যাবে।’


তিনি আরও বলেন, ‘এই ধনেপাতার বীজ একসঙ্গে গজায় না, ফলে একবার রোপণ করলে কম করে চারবার ধনেপাতা সংগ্রহ করা যায়।’


আরও পড়ুন: পদ্মার কৃষকের মুখে ভুট্টার হাসি, বাণিজ্যের লক্ষ্যমাত্রা ২শ’ কোটি!


সজনি চাকমা বলেন, ‘এই বিলেতি ধনেপাতা চাষ করতে হলে আলো-ছায়ার প্রয়োজন হয়। তাই এগুলো চাষ করলে মাচা দিতে হয়। সেই মাচাতেই লাউ, বরবটি, চিচিঙ্গা চাষ করতে পারি। এতে আমাদের বাড়তি আয় হয়।’


রাঙ্গামাটি কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপপরিচালক মো. মনিরুজ্জামান বলেন, ‘পাহাড়ি এই ধনেপাতার চাহিদা বেড়েছে সারা দেশে, ফলে এর বাজার ছাড়িয়েছে ২০০ কোটি টাকা। এই আর্থিক দিক বিবেচনা করে এর উৎপাদন বাড়াতে কৃষকদের পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছি।’


কৃষি বিভাগের তথ্য মতে, জেলায় এ বছর ৫০ হেক্টর জমিতে বিলেতি ধনেপাতার চাষ হয়েছে। আর উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে তিন হাজার মেট্রিকটন।

]]>
সম্পূর্ণ পড়ুন