পাকিস্তানের পাশাপাশি প্রবল বৃষ্টিতে দক্ষিণ কোরিয়া, ভারত ও রাশিয়াতেও বন্যা দেখা দিয়েছে। দক্ষিণ কোরিয়ায় বন্যায় প্রাণ গেছে অন্তত চারজনের। ভারতের রাজস্থান রাজ্যে টানা বৃষ্টিতে প্লাবিত হয়েছে সরকারি হাসপাতালসহ শহরের বিভিন্ন এলাকা। এদিকে চীনের দিকে ধেয়ে যাচ্ছে শক্তিশালী টাইফুন উইফা। জারি করা হয়েছে ইয়েলো সতর্কতা।
দক্ষিণ কোরিয়ার দক্ষিণ চুংচেওং প্রদেশে টানা তিনদিনের বর্ষণে দেখা দিয়েছে প্রবল বন্যা। গোয়াংজু শহরে ৮৬ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ ৪০০ মিলিমিটার বৃষ্টি রেকর্ড করা হয়। ভূমিধস ও বন্যার ঝুঁকিতে সাড়ে তিন হাজারের বেশি মানুষকে সরিয়ে নেয়া হয়েছে।
নিরাপত্তা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, চুংচেওং প্রদেশের সিওসান শহরে বাড়িঘর, ধানক্ষেত ও খামার প্লাবিত হয়েছে। এতে হতাহত হয়েছে বেশ কয়েকজন। স্থানীয় কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, তারা বন্যার মধ্যে ১৩টি ভিন্ন শহর থেকে ৫ হাজার ১৯২ জনকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিয়েছে। বৃষ্টি ও বন্যায় ৪৯৬টি সরকারি এবং ২৭৬টি ব্যক্তিগত সম্পত্তির ক্ষতি হয়েছে।
আরও পড়ুন: চীনের দিকে ধেয়ে আসছে টাইফুন উইফা
এদিকে চীনের দক্ষিণাঞ্চলে ধেয়ে আসছে চলতি বছরের ষষ্ঠ টাইফুন উইফা। ফিলিপিন্সের পূর্বাঞ্চলে দক্ষিণ চীন সাগরে উৎপত্তি হওয়া এই ঘূর্ণিঝড় দ্রুত শক্তি সঞ্চয় করছে এবং রোববার (২০ জুলাই) দিনের শেষের দিকে দক্ষিণ চীন সাগরের উপকূলীয় এলাকায় আঘাত হানতে পারে বলে সতর্ক করেছে চীনা আবহাওয়া অধিদপ্তর।
গুয়াংডং, হাইনানসহ বিভিন্ন এলাকায় জারি করা হয়েছে জরুরি সতর্কতা। বাতিল করা হয়েছে অন্তত ৮৯টি ফেরি সার্ভিস। আবহাওয়া বিভাগ পূর্বাভাস দিয়েছে, টাইফুন উইফা পশ্চিম-উত্তর-পশ্চিমে ঘণ্টায় ২০ থেকে ২৫ কিলোমিটার বেগে অগ্রসর হবে এবং রোববার (২০ জুলাই) দিনের শেষের দিকে গুয়াংডংয়ের শেনজেন এবং হাইনানের ওয়েনচাংয়ের মধ্যে উপকূলে আঘাত হানবে।
পাকিস্তানের পূর্বাঞ্চলে গত ২৬ জুন থেকে অবিরাম বন্যায় এখন পর্যন্ত ১৭০ জনেরও বেশি মানুষ প্রাণ হারিয়েছে। যাদের মধ্যে প্রায় অর্ধেকই শিশু। পাঞ্জাবে টানা বর্ষণে গত বুধবার (১৫ জুলাই) মাত্র ২৪ ঘণ্টায় হতাহতের সংখ্যা ৩০০ ছাড়িয়ে যায়।
বন্যা ও ভবন ধসে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সহস্রাধিক ঘরবাড়ি। মৌসুমী ঝড়ের প্রভাবে জলাভূমি ও খালবিল প্লাবিত হওয়ায় ঝুঁকিতে পড়েছে নদীতীরবর্তী এলাকাগুলো। পাকিস্তানের রাওয়ালপিন্ডিতে বন্যার পানি নামলেও ক্ষতিগ্রস্তরা বলছেন, সরকারি কোনো সহায়তা পাননি তারা।
আরও পড়ুন: বৌদ্ধ ভিক্ষুদের ব্ল্যাকমেইল করে অর্থ আদায়, থাই নারী গ্রেফতার
ভারতের রাজস্থান রাজ্যের আজমেরে টানা বৃষ্টিতে প্লাবিত হয়েছে সরকারি হাসপাতালসহ শহরের বিভিন্ন এলাকা। জলাবদ্ধতার কারণে হাসপাতাল চত্বরে হাঁটুসমান পানিতে চলাফেরা করতে দেখা গেছে রোগী ও স্বাস্থ্যকর্মীদের।
রাশিয়াতেও টানা বৃষ্টিতে প্লাবিত হয়েছে অন্তত আটটি গ্রাম। জরুরি ব্যবস্থাপনায় ১০০ জনের বেশি বাসিন্দা, তাদের পোষা প্রাণী এবং গবাদিপশু উদ্ধার করা হয়েছে। বন্যায় ডুবে গেছে ৯৩টি বাড়ি। বরফে ঢাকা এই অঞ্চল সাম্প্রতিক বছরগুলোতে জলবায়ু পরিবর্তনের সরাসরি শিকার বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা।
]]>