মঙ্গলবার (২৩ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর উত্তরায় এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান পিবিআই ঢাকা জেলার পুলিশ সুপার মো. কুদরত-ই-খুদা।
গ্রেফতার দুজন হলেন- সদর আলী ওরফে সোহরাব (৪৭) ও আলমগীর (২৫)।
২০২৩ সালের ২৮ নভেম্বর সকাল সাড়ে ১০টার দিকে ধামরাই উপজেলার বাইশাকান্দা ইউনিয়নের কেস্টখালী গ্রামের একটি ধানক্ষেতের পাশ থেকে অটোরিকশাচালক সায়েদুর রহমানের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় ধামরাই থানায় হত্যা মামলা হয় এবং মামলাটি পরবর্তীতে তদন্তের জন্য পিবিআইয়ের হাতে যায়।
পিবিআইয়ের তদন্তে চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে আসে। সদর আলী ওরফে সোহরাব ও আলমগীর একই বাসায় জুয়েল নামে এক যুবকের সঙ্গে বসবাস করতেন। একপর্যায়ে সোহরাবের স্ত্রী জুয়েলের সঙ্গে পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়েন অবিবাহিত জুয়েল। এ নিয়ে বিরোধ তৈরি হয়।
কিছুদিন পর সোহরাবে স্ত্রী আবার স্বামীর কাছে ফিরে আসেন। এরই মধ্যে সোহরাব ও আলমগীর রিকশাচালক সায়েদুরের স্ত্রীর সঙ্গে অনৈতিক সম্পর্ক গড়তে চেয়েছিলেন। অর্থের সংকট দেখা দিলে সায়েদুরের অটোরিকশা ছিনতাইয়ের পরিকল্পনা করেন সোহরাব, আলমগীর ও জুয়েল। সেই অনুযায়ী, তারা সায়েদুরকে গান শোনার কথা বলে বাইরে নিয়ে যায়। ফেরার পথে কেস্টখালী গ্রামের নির্জন স্থানে তাকে কৌশলে বেঁধে ফেলে। গামছা দিয়ে মুখ চেপে, হাত-পা বেঁধে, উপর্যুপরি ছুরিকাঘাত করে নিশ্চিতভাবে হত্যা করে তারা। পরে মরদেহ ফেলে পালিয়ে যায়। অটোরিকশাটি তারা ৫০ হাজার টাকায় বিক্রি করে এবং টাকা নিজেদের মধ্যে ভাগ করে নেয়।
আরও পড়ুন: সাজাপ্রাপ্ত ৩ আসামি গ্রেফতার
তথ্য-প্রযুক্তি ও গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে প্রথমে সদর আলীকে গ্রেফতার করে পিবিআই। তার দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে মূল আসামি আলমগীরকেও গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারের পর দুজনেই আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।
পুলিশ সুপার মো. কুদরত-ই-খুদা বলেন, ‘আমরা দায়িত্ব পাওয়ার পর প্রকাশ্যে ও গোপনে তদন্ত চালাই। ধাপে ধাপে তথ্য সংগ্রহ করে অবশেষে হত্যাকারীদের শনাক্ত ও গ্রেফতার করতে সক্ষম হই। তারা আদালতে স্বীকার করেছে যে নগদ টাকার প্রয়োজনে পরিকল্পিতভাবে ভিকটিমকে হত্যা করে তার অটোরিকশা ছিনতাই করে বিক্রি করেছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘অপরাধীদের পরকীয়া ও অর্থলোভ শেষ পর্যন্ত এক নিরীহ অটোরিকশাচালকের প্রাণ কেড়ে নিয়েছে। এখনো জুয়েলের সংশ্লিষ্টতা এবং অন্য কারো সম্পৃক্ততা আছে কি না তা অনুসন্ধান করা হচ্ছে।’
]]>