শ্যামলীর ৮ বছরের একমাত্র মেয়ে জুঁই বর্তমানে নানীর কাছে রয়েছে। তিন বছর আগে মায়ের পরকীয়ার কারণে বাবাহীন হওয়া শিশুটি এখন মাকেও হারিয়েছে।
স্থানীয়রা জানান, প্রায় ১০ বছর আগে শ্যামলীর বিয়ে হয় রাজশাহীর বাগমারা এলাকার আব্দুল জলিলের সঙ্গে। এক কন্যাসন্তান নিয়ে সুখেই কাটছিল তাদের সংসার। তবে শ্বশুর-শাশুড়ির অমতে তিন বছর আগে শ্যামলীর স্বামী তাকে রাজশাহীর একটি শোরুমে চাকরি নিতে দেন। সেখানে ম্যানেজার পাবনার সুজনের সঙ্গে পরিচয় হয় তার।
এক পর্যায়ে সুজন বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে শ্যামলীকে স্বামীকে তালাক দিতে বাধ্য করেন। পরবর্তীতে রেজিস্ট্রি ছাড়া ধর্মীয় মতে বিয়ে করে সংসার শুরু করেন তারা। কিন্তু কিছুদিন পরই শ্যামলী জানতে পারেন সুজনের আরও এক স্ত্রী ও দুই সন্তান রয়েছে। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে তিনি বাবার বাড়িতে ফিরে আসেন।
চলতি বছরের শুরুতে শ্যামলীর আবারও বিয়ে হয়। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে সুজন শ্যামলীর গোপন ভিডিও তার স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির লোকজনের কাছে পাঠিয়ে দেন। ফলে দুই মাসের মধ্যেই ভেঙে যায় সেই সংসারও।
আরও পড়ুন: কমলাপুর রেলস্টেশনে শ্যামলীকে কুপিয়ে হত্যা, প্রেমিক আটক
শ্যামলীর মা মঞ্জুয়ারা বেগম জানান, জুন মাসে ঢাকায় চাকরি নেন শ্যামলী। সেই সঙ্গে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় অংশ নেন। পরীক্ষার পর মেয়েকে নানীর কাছে রেখে আবার ঢাকায় ফিরে যান তিনি। পরে সুজন কৌশলে ফোন নম্বর সংগ্রহ করে শ্যামলীকে কমলাপুর রেলস্টেশনে ডেকে নেন। শারীরিক সম্পর্কের ভিডিও ফাঁস হয়ে যাওয়ার ভয়ে শ্যামলী সেখানে যান। সেখানে ধারালো অস্ত্র দিয়ে তাকে কুপিয়ে হত্যা করে সুজন।
মঞ্জুয়ারা বেগম বলেন, ‘শ্যামলীর আয়েই আমার সংসার চলত। এখন জুঁইকে কীভাবে মানুষ করব, বুঝতে পারছি না।’
শ্যামলীর চাচাতো ভাবি ও সাবেক উপজেলা মহিলা ভাইস-চেয়ারম্যান চামেলী খাতুন জানান, বছর খানেক আগে শ্যামলীর বাবা মারা যান। একমাত্র ভাই স্ত্রী-সন্তান নিয়ে আলাদা থাকেন। ফলে নানি-নাতির ভবিষ্যৎ এখন অনিশ্চিত।
ঘটনার পর পালিয়ে যাওয়ার সময় কমলাপুর রেলস্টেশনে উপস্থিত মানুষের সহায়তায় রেলওয়ে পুলিশ সুজনকে আটক করে। এ ঘটনায় কমলাপুর রেলওয়ে থানায় হত্যা মামলা হয়েছে।
]]>