পটুয়াখালীর পালপাড়ায় মাটির পণ্য তৈরির ধুম

৩ সপ্তাহ আগে
বাংলা বর্ষবরণ সামনে রেখে ব্যস্ত পটুয়াখালীর মৃৎশিল্পীরা। এখানকার মাটির পণ্য ঢাকার আড়ং ছাড়াও দেশের সীমানা পেরিয়ে বিদেশেও রফতানি হচ্ছে। তবে সরকারি সহযোগিতা পেলে এই শিল্পের আরও বিকাশ সম্ভব বলছেন শিল্পীরা।

পটুয়াখালীর বাউফলের মদনপুরা ইউনিয়নের পালপাড়া মাটির পণ্যের জন্য পরিচিত প্রায় অর্ধশতক ধরে। এখানকার তৈরি মাটির খেলনা বিক্রি হয় বৈশাখি মেলায় এ অঞ্চলের সর্বত্র। প্রযুক্তির উৎকর্ষ আর নকশার আধুনিকতায় এর বাজার ছড়িয়ে পড়ে রাজধানী ঢাকাতেও।

 

এখানকার মৃৎশিল্পের অন্যতম রূপকার ছিলেন রাজেশ্বর পাল। এক সময়ে তিনি মেলায় ঘুরে ঘুরে খেলনাসহ অন্যান্য পণ্য বিক্রি করতেন। তিনি আজ বেঁচে না থাকলেও তার প্রতিষ্ঠানের তৈরি পণ্য এখন সরবরাহ করা হচ্ছে আড়ংয়ের মত ঐতিহ্যবাহী প্রতিষ্ঠানে। পালপাড়ার এ মৃৎশিল্পের সঙ্গে জড়িত রয়েছেন প্রায় অর্ধশত পরিবার। এখানে দীর্ঘদিন কাজ করছেন এমন শ্রমজীবী মানুষ রয়েছেন অনেকেই।

 

আরও পড়ুন: মঙ্গল শোভাযাত্রার নাম পরিবর্তন নিয়ে কোনো আলোচনা হয়নি: ফারুকী

 

সামনেই পহেলা বৈশাখ। এ জন্য রাতদিন পরিশ্রম করে মাটি দিয়ে তৈরি করা হচ্ছে পান্তার থালা বাসন, মগ, মিষ্টির পাতিলসহ বিভিন্ন আইটেম। এসব অর্ডারি পণ্য তৈরির শেষ পর্যায়ে এখন বিপণন নিয়ে ব্যস্ত এ শিল্পের সঙ্গে জড়িতরা।

 

এখন আর শুধু খেলনা নয়, মাটির তৈরি ফুলদানি, ডিনার সেট, কাপ-পিরিচ, মগসহ বিভিন্ন শো-পিস তৈরি হয়। যার বাজার রয়েছে ঢাকার আড়ংসহ বিভিন্ন মার্কেটে। গত কয়েক বছর ধরে দেশের বাইরেও যাচ্ছে এখানকার পণ্য।

 

 

তবে প্রতি বছর পহেলা বৈশাখকে সামনে রেখে স্থানীয় বাজারের জন্য প্রচুর অর্ডার থাকলেও চলতি বছর মাটির দামসহ অন্যান্য মালামালের দাম বেশি থাকায় ব্যবসা না হওয়ার কথা  জানান মৃৎশিল্পের সঙ্গে জড়িত পরিবারগুলো।

 

বাউফল পাল পাড়ার মৃৎশিল্পর সভাপতি বিশ্বেশ্বর পাল বলেন, পহেলা বৈশাখের পণ্য কিনতে এখানে ভিড় করছেন ক্রেতা ও উদ্যোক্তারা। সরকারি সহযোগিতা পেলে আমরা দেশের চাহিদা মিটিয়ে বিদেশে রফতানি করতে পারব। আমাদের এই পণ্য ঢাকার আড়ংসহ বিভিন্ন বড় বড় শপিং কমপ্লেক্সে বিক্রি করা হয়।

 

আরও পড়ুন: ঈদ-বাংলা নববর্ষ / উৎসব ঘিরে চাহিদা বেড়েছে রাজশাহী সিল্কের, ৬০ কোটি টাকা বিক্রির আশা

 

এছাড়া দেশের বাইরেও এসব পণ্য রফতানি করা হয় জানিয়ে তিনি বলেন, যদি আমরা আর্থিকভাবে বেশি এটা পেতাম তাহলে আরো বড় পরিসরে আগের মত ব্যবসাটা চালিয়ে যেতে পারতাম। বর্তমানে মাটির সমস্যা রয়েছে আমাদের।

 

এদিকে, মৃৎশিল্পীদের ঋণ দেয়াসহ সব ধরনের সহযোগিতা দিয়ে যাচ্ছে বিসিক। পটুয়াখালী বিসিক শিল্পনগরী কর্মকর্তা মোহাম্মদ আল আমিন বলেন, বাউফল পালপাড়ার এই মৃৎশিল্পের প্রতি বিশেষ দৃষ্টি রয়েছে পটুয়াখালীর শিল্প সহায়তা কেন্দ্রের। তাদের লোন কার্যক্রম ছাড়াও ঢাকা থেকে ডিজাইন সহায়তা করে থাকে আমরা।

 

উল্লেখ্য, শুধু বর্ষবরণ নয়, বিভিন্ন সামাজিক ও পারিবারিক অনুষ্ঠান ঘরের শোভা বর্ধনে দিন দিন চাহিদা বাড়ছে এখানকার মাটির তৈরি পণ্যের।

]]>
সম্পূর্ণ পড়ুন