সপ্তাহে মাত্র দুইদিন—সোমবার ও শুক্রবার—বসা এই হাটে বিক্রি হচ্ছে ৫ থেকে ৬ কোটি টাকার সুপারি। মৌসুমজুড়ে এই হাট ঘিরেই লেনদেনের পরিমাণ দাঁড়াতে পারে প্রায় ১৫০ কোটি টাকা, এমনটাই জানিয়েছেন স্থানীয় কৃষি বিভাগ।
সরেজমিনে বাজার ঘুরে দেখা গেছে, সপ্তাহের এই দুদিন সকাল থেকেই বাজারে আসছে বস্তাভর্তি সুপারি। মাটিতে ঢেলে রাখা হচ্ছে স্তূপ আকারে, চলে দর কষাকষি। এরপর বাছাই ও প্যাকেটজাত করে পাঠানো হচ্ছে দেশের বিভিন্ন জেলায়—চট্টগ্রাম, সিলেট, ফেনী, নোয়াখালীসহ আরও অনেক জায়গায়।
চাষিরা খুশি, বাড়ছে আগ্রহ
স্থানীয় চাষিরা জানাচ্ছেন, পঞ্চগড়ের মাটি ও আবহাওয়া সুপারি চাষের জন্য অত্যন্ত উপযোগী। তুলনামূলকভাবে খরচ কম, লাভ বেশি। এই কারণেই অন্যান্য ফসলের পাশাপাশি সুপারির দিকে ঝুঁকছেন কৃষকরা।
গত বছর যেখানে প্রতি পণে (৮০ পিছ) সুপারি বিক্রি হয়েছিল ১৫০ থেকে ৪০০ টাকায়, চলতি মৌসুমে সেটি বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৫০ থেকে ৬০০ টাকায়। এক কাহন (১৬ পণ বা ১২৮০ পিছ) সুপারি বিক্রি হচ্ছে ৪ হাজার থেকে ৯ হাজার ৫০০ টাকায়।
আরও পড়ুন: যাত্রীবাহী বাসে সুপারির বস্তায় ফেনসিডিল!
কামাত কাজলদিঘীর চাষি সালাম মিঞা সময় সংবাদকে বলেন, গতবারের তুলনায় এবার সুপারির বাজার অনেক চাঙ্গা। চাহিদা বেশি, দামও বেশ ভালো মিলছে।
আরেক চাষি কারিমুল ইসলাম জানান, এবার ফলন কিছুটা কম হলেও দাম নিয়ে কারো কোনো অভিযোগ নেই। বাজার বেশ ভালো।
ব্যবসায়ীরাও ব্যস্ত- তারা যা বলছেন
সুপারির দাম কিছুটা বাড়লেও গুণগত মান ভালো থাকায় পিছিয়ে নেই পাইকার ব্যবসায়ীরাও। কেউ কেউ উচ্চমূল্য নিয়ে হিমশিম খেলেও পণ্য কিনে নিচ্ছেন দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে আসা ব্যবসায়ীরা। আর তা সে অঞ্চলের চাহিদা মিটাচ্ছে।
আরও পড়ুন: রাজশাহী অঞ্চলে আম চাষে ১২ হাজার কোটি টাকা বাণিজ্যের টার্গেট!
পঞ্চগড় জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক আব্দুল মতিন জানান, চলতি মৌসুমে পঞ্চগড়ে ৬৫২ হেক্টর জমিতে সুপারির চাষ হয়েছে। তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, এই মৌসুমে সুপারি বেচাকেনা ঘিরে প্রায় ১৫০ কোটি টাকার লেনদেন হবে।
দেশজুড়ে পঞ্চগড়ের চাহিদা
বর্তমানে দেশের অন্যান্য জেলায় সুপারির ঘাটতি থাকায় পঞ্চগড়ের সুপারির প্রতি চাহিদা আরও বেড়েছে। স্থানীয় চাহিদা তো রয়েছেই, পাশাপাশি পঞ্চগড় এখন দেশের বড় একটি অংশের চাহিদা পূরণ করছে। ফলে কৃষক ও ব্যবসায়ী সবাই এখন সুপারির মৌসুমকে ঘিরে ব্যস্ত সময় পার করছেন।