এদিকে বিক্ষোভের জেরে প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা ওলি ক্ষমতা ছাড়ার পর এখনও থমথমে নেপালের পরিস্থিতি। রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা এবং সাধারণ মানুষের নিরাপত্তায় মোতায়েন রয়েছে সেনাবাহিনী। সহিংসতায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩০ জনে। তবে ফের চালু হয়েছে ত্রিভুবন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর।
দুর্নীতি, বেকারত্ব আর সামাজিক যোগযোগমাধ্যম বন্ধ করে দেয়ায় গত কয়েকদিন বিক্ষোভে উত্তাল হয়ে ওঠে নেপাল। দুই দিনের টানা বিক্ষোভের মুখে গত মঙ্গলবার (৯ সেপ্টেম্বর) নেপালে কেপি ওলি সরকারের পতন ঘটে।
সরকার পতনের পর নেপালের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে দেশটির সেনাবাহিনী। আইন-শৃঙ্খলা স্বাভাবিক অবস্থায় ফেরাতে রাজধানী কাঠমাণ্ডুসহ গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় কারফিউ জারি করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: নেপালের অস্থিরতা কি দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর ওপর প্রভাব ফেলবে?
কাঠমাণ্ডু পোস্ট জানায়, প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগের পর মঙ্গলবার রাত থেকেই নিরাপত্তা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে মাঠে আছে সেনাবাহিনী। রাজধানী কাঠমান্ডুর জনশূন্য রাজপথে সাঁজোয়া যানের টহল দেখা গেছে। দোকানপাট ছিল বন্ধ। নতুন সরকার দায়িত্ব না নেয়া পর্যন্ত সেনারাই শান্তি রক্ষার দায়িত্বে থাকবে।
সেনাবাহিনী বলেছে, বিক্ষোভ পরবর্তী পরিস্থিতি মোকাবিলা এবং সমস্যার সমাধান করতে সংশ্লিষ্ট পক্ষগুলো সমন্বয় করছে। বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে আলোচনায় বসেছেন সেনাপ্রধান জেনারেল অশোক রাজ সিগদেল।
এছাড়া তাদের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির মহাসচিবেরও। অন্তর্বর্তী প্রধানমন্ত্রী হিসেবে সুপ্রিম কোর্টের সাবেক প্রধান বিচারপতি সুশীলা কার্কির নাম প্রস্তাব করেছেন বিক্ষোভকারীরা।
বিক্ষোভকারীদের একজন প্রতিনিধি বলেন, ‘জনগণের কাছে নৈতিক ও নিরপেক্ষ হিসেবে স্বীকৃত ব্যক্তিদের মধ্যে আমরা সর্বসম্মতভাবে সুশীলা কার্কির নাম অন্তবর্তী সরকার গঠনের জন্য প্রস্তাব করেছি।’
আরও পড়ুন: হেলিকপ্টারের দড়িতে ঝুলে পালাচ্ছেন নেপালের মন্ত্রীরা, ভিডিও ভাইরাল
বিক্ষোভের মুখে নেপালের প্রধানমন্ত্রীসহ বেশ কয়েকজন মন্ত্রী ও কয়েকজন সাংসদ পদত্যাগ করলেও বর্তমান মন্ত্রীসভার অধীনেই দেশ পরিচালিত হবে বলে গত বুধবার এক বিবৃতিতে জানান নেপালের প্রেসিডেন্ট রামচন্দ্র পৌদেল।
রামচন্দ্র পৌদেল সাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, সংবিধানের নিবন্ধ ৭৭-এর ধারা তিন অনুযায়ী নতুন প্রধানমন্ত্রী দায়িত্ব না নেয়া পর্যন্ত বর্তমান মন্ত্রীসভার অধীনেই দেশ পরিচালিত হবে। প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগপত্র গ্রহণ করে ‘সংবিধান অনুযায়ী নতুন ব্যবস্থা না হওয়া পর্যন্ত’ কেপি শর্মা ওলিকেই কাজ চালানোর দায়িত্ব দেন নেপালের প্রেসিডেন্ট।
সোশ্যাল মিডিয়ায় আলোচনা চলছে যে ওলি দেশ ছেড়ে চলে গেছেন। তবে তার ঘনিষ্ঠ একজন দাবি করেছেন, তিনি নেপালেই আছেন এবং নিরাপত্তা সংস্থাগুলোর সুরক্ষায় রয়েছেন। সংবিধান অনুযায়ী, এমন পরিস্থিতিতে সংসদের কোনো একজন সদস্য প্রধানমন্ত্রী হতে পারেন।