জেলায় প্রতিদিনই কোনো না কোনো ইউনিয়নে পশুর হাট বসছে। এসব হাটে বিক্রি হচ্ছে গরু, ছাগল, ভেড়া ও মহিষসহ বিভিন্ন কোরবানিযোগ্য পশু। এ বছর জেলার খামার ও কৃষকদের প্রস্তুত করা পশুর সংখ্যা ১ লাখ ৩৪ হাজার ৭৭টি। এর মধ্যে গরু রয়েছে ৮৯ হাজার ১৮৪টি, ছাগল ৩৯ হাজার ২৭৪টি, ভেড়া ৫৪০০টি এবং মহিষ ২১৯টি। জেলার চাহিদা মিটিয়ে অতিরিক্ত ২৭ হাজার ৯৭৭টি পশু দেশের অন্যান্য অঞ্চলে সরবরাহ করা হবে।
জেলার সবচেয়ে আলোচিত পশুর হাট হচ্ছে বারহাট্টা উপজেলার নৈহাটি বাজার। ঐতিহ্যবাহী এই হাটে কোরবানির মৌসুমে বেচাকেনা হয় শতকোটি টাকার পশু। প্রতিবারের মতো এবারও এখানে বিক্রি হবে লাখ লাখ পশু। তবে হাটে অবকাঠামো উন্নয়নের ঘাটতি থাকায় বিক্রেতা ও ক্রেতাদের চরম দুর্ভোগে পড়তে হয়। চারশো টাকার রশিদে বিক্রি হচ্ছে লাখ টাকার গরু, যেখানে বিক্রেতা ও ক্রেতা উভয়ই দিচ্ছেন দুইশ টাকা করে টোল।
এক সময় এই বাজারটি স্থানীয় প্রভাবশালী একটি সিন্ডিকেটের দখলে ছিল, যারা দীর্ঘ ১৫ বছর ধরে রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে বাজারটি পরিচালনা করেছিলো। এতে সরকার হারিয়েছে কোটি কোটি টাকার রাজস্ব। তবে গত বছর থেকে স্থানীয় প্রশাসন বাজারটিকে খাস কালেকশনের আওতায় এনে নিয়ন্ত্রণে নেয়। মাত্র ১০ মাসেই রাজস্ব আদায় হয়েছে প্রায় ২ কোটি টাকা।
বারহাট্টা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. খবিরুল আহসান জানান, বাজারের উন্নয়নে পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন: নীলফামারীতে কোরবানির পশুতে সরবরাহ বেশি, নজরকাড়া গরু কম
অন্যদিকে আটপাড়া উপজেলার তেলিগাতী পুরনো বাজার নিয়েও স্থানীয় ইজারাদার ও প্রশাসনের মধ্যে বিরোধ দেখা দেয়। পরে জেলা প্রশাসনের হস্তক্ষেপে সেটিকেও খাস কালেকশনের আওতায় আনা হয়।
জেলা প্রশাসক বনানী বিশ্বাস জানান, এ বছর জেলার সব অস্থায়ী হাটই মনিটরিংয়ের আওতায় রয়েছে। টেন্ডারে উপযুক্ত দর না পাওয়ায় যেসব হাট ইজারা দেয়া হয়নি, সেগুলো খাস কালেকশন করা হচ্ছে।
তিনি বলেন, ‘সিন্ডিকেট করে কেউ কম দর দিলে সেই হাট আর দেয়া হয় না। খাস কালেকশনে কোনো রাজস্ব ফাঁকির সুযোগ নেই।’
জেলায় ১২ হাজার ৬৬৫ জন খামারি ছাড়াও হাজারও প্রান্তিক কৃষক এবার হাটে তুলছেন তাদের লালন-পালন করা পশু। কোরবানির মৌসুম ঘিরে এই বিশাল পশুর বাজার জেলার অর্থনীতিতে প্রাণচাঞ্চল্য ফিরিয়ে এনেছে।