নুরের গ্রামে গণঅধিকার পরিষদ ও বিএনপি নেতাকর্মীদের সংঘর্ষ

৩ সপ্তাহ আগে
পটুয়াখালীর গলাচিপা উপজেলার চরবিশ্বাস বাজারে গণঅধিকার পরিষদ ও বিএনপির স্থানীয় নেতাকর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে উভয়পক্ষের অন্তত ১০ জন আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।

বৃহস্পতিবার (১২ জুন) রাত ৮টার দিকে বাজারে একটি আলোচনা সভা চলাকালীন এই ঘটনা ঘটে।

 

স্থানীয়রা জানান, ঘটনার পর পুরো বাজারজুড়ে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। ভাঙচুরের আশঙ্কায় দোকানপাট বন্ধ করে দেন ব্যবসায়ীরা।

 

এই সংঘর্ষের পেছনে বাজারে দোকান বরাদ্দ (চান্দিনা ভিটি) নিয়ে দীর্ঘদিনের অসন্তোষ এবং রাজনৈতিক দ্বন্দ্ব মূল কারণ বলে জানা গেছে।

 

গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি ও ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নুরের গ্রামের বাড়ির সামনেই এ সংঘর্ষের সূত্রপাত ঘটে।

 

আরও পড়ুন: বরিশালে জাতীয় পার্টি ও গণঅধিকার পরিষদের পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি

 

ঘটনার বিষয়ে জানতে চাইলে তার ছোট ভাই আমীনুল ইসলাম নূর বলেন, ‘বাজারে প্রায় দুই শতাধিক দোকান রয়েছে। ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি বাকের বিশ্বাস ও সাধারণ সম্পাদক মজিবুর রহমান প্রতি দোকান থেকে ৩০ হাজার টাকা করে দাবি করেন ডিসিআর পাইয়ে দেয়ার নামে, যা সরকারের নির্ধারিত ফি’র চেয়ে অনেক বেশি।’

 

তিনি অভিযোগ করেন, অতিরিক্ত অর্থ আদায়ের বিরুদ্ধে ব্যবসায়ীরা ভিপি নুরের সহযোগিতা চান। গত ১০ জুন ভিপি নুর এলাকায় গেলে বিষয়টি নিয়ে দোকানিরা অভিযোগ করেন। তিনি তাদের অতিরিক্ত টাকা না দিতে বলেন এবং প্রশাসনের মাধ্যমে ডিসিআর পাইয়ে দেয়ার আশ্বাস দেন। এরপর থেকেই স্থানীয় বিএনপি নেতাদের সঙ্গে গণঅধিকার পরিষদের নেতাকর্মীদের সম্পর্ক উত্তপ্ত হয়ে ওঠে।’

 

অন্যদিকে, চরবিশ্বাস ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মো. মজিবুর রহমান দাবি করে বলেন, ‘আমরা একটি কর্মীসভা করছিলাম। সেই সময় ভিপি নুরের ভাই আমীনুল ও তার লোকজন এসে আলোচনা বন্ধ করতে বলেন। আমরা আলোচনা বন্ধ করলেও, অকারণে তারা আমাদের ওপর চড়াও হন এবং চেয়ার ছুঁড়ে মারেন। এতে আমাদের অন্তত ৮–১০ জন নেতাকর্মী আহত হন।’

 

তবে চান্দিনা ভিটির ডিসিআর পাইয়ে দেয়ার নামে অর্থ নেয়ার অভিযোগ অস্বীকার করে মজিবুর বলেন, ‘আমরা কারও কাছ থেকে টাকা নেইনি। ভিপি নুরের শ্যালক এনিম আওয়ামী লীগ নেতাদের সাথে মিলে টাকা তুলেছেন। এখন এর দায় আমাদের ওপর চাপানো হচ্ছে।’

 

এদিকে, ঘটনার প্রতিক্রিয়ায় নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে নুরুল হক নুর লিখেছেন, ‘এলাকার সন্তান হিসেবে মানুষের ভালোবাসা থাকায় আওয়ামী লীগের লোকেরাও আমাদের সঙ্গে ঝামেলা করতে সাহস পায়নি। অথচ আজ বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশী হাসান মামুনের নির্দেশে চরিত্রহীন, লম্পট বাকের বিশ্বাসের নেতৃত্বে হামলা চালানো হয়েছে!’

 

অন্যদিকে বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য হাসান মামুন তার ফেসবুক পোস্টে দাবি করেন, ‘চরবিশ্বাস ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের নেতাদের নেতৃত্বে গণঅধিকার পরিষদের নেতাকর্মীরা বিএনপি কার্যালয়ে হামলা চালায়। এতে বিএনপির সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকসহ অনেকে আহত হন।’

 

আরও পড়ুন: চাঁপাইনবাবগঞ্জে ককটেল হামলায় চেয়ারম্যানসহ আহত ৬, গণঅধিকার পরিষদের অফিস ভাঙচুর


ঘটনার বিষয়ে গলাচিপা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) অফিসার ইনচার্জ মো. আশাদুর রহমানের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তার মুঠোফোনটি ব্যস্ত পাওয়া যায়।

 

স্থানীয় রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, একদিকে চান্দিনা ভিটির অর্থ আদায়কে কেন্দ্র করে দোকানিদের ক্ষোভ, অন্যদিকে কেন্দ্রীয় রাজনীতির প্রভাব ও মনোনয়ন প্রত্যাশীদের দ্বন্দ্ব—এই দুইয়ের সংঘর্ষেই এমন পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।

]]>
সম্পূর্ণ পড়ুন