রোববার (২০ জানুয়ারি) বিকেলে উপজেলার বিন্নাবাইদ ইউনিয়নের দীঘলদিকান্দি এলাকার আড়িয়াল খাঁ নদে মরদেহটি ভেসে ওঠে।
পরিবারের পক্ষ থেকে মরদেহটি নিখোঁজ ১২ বছর বয়সী স্কুলছাত্র অনয় চন্দ্র মোদক বলে দাবি করা হলেও পুলিশ বলছে ডিএনএ টেস্টের আগে নিশ্চিত হওয়া যাবে না মরদেহটি কার। কারণ হিসেবে পুলিশ বলছে, মরদেহ ফুলে বিকৃত হয়ে যাওয়ায় চেনা যাচ্ছে না।
অনয় চন্দ্র মোদক বেলাব উপজেলার বেলাব মাটিয়াল পাঁড়া গ্রামের গৌরাঙ্গ চন্দ্র মোদকের ছেলে। সে বেলাব পাইলট সরকারি মর্ডান উচ্চ বিদ্যালয়ের ৮ম শ্রেণির ছাত্র।
অনয় নিখোঁজের পর অজ্ঞাত নাম্বার থেকে তাকে অপহরণ করা হয়েছে দাবি করে চাওয়া হয় এক লাখ টাকা মুক্তিপণ। তাদের কথামত মুক্তিপণের এক লাখ টাকাও দেয়া হয় অপহরণকারীদের।
নিখোঁজ কিশোরের স্বজন ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ১৪ জানুয়ারি সন্ধ্যায় অনয় চন্দ্র মোদক মাটিয়াল পাড়ায় নিজ বাড়ি থেকে শিক্ষা উপকরণ কিনতে বেলাব বাজারে গিয়ে নিখোঁজ হয়। পরে পরিবার বিভিন্ন জায়গায় খোঁজাখুঁজি করে তার সন্ধান না পেয়ে ওই দিন রাতেই বেলাব থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন। পরবর্তীতে ১৬ জানুয়ারি সাধারণ ডায়েরিটি মামলায় রূপান্তরিত হয়।
আরও পড়ুন: বরিশালে নিখোঁজ শিশুর মরদেহ উদ্ধার
এদিকে অনয় নিখোঁজের পর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নিখোঁজ হওয়া নিয়ে লেখালেখির পর অজ্ঞাত নাম্বার থেকে অনয়ের পরিবারের নাম্বারে ফোন করে এক লাখ টাকা মুক্তিপণও চাওয়া হয়। পরে পুলিশ অপহরণকারীদের মোবাইল নাম্বার ট্র্যাকিং করে তাদের অবস্থান দেখতে পায় বরিশালের ভোলায়।
এ সংবাদ লেখার সময় পর্যন্ত বেলাব থানা পুলিশের একটি দল অনয়কে উদ্ধারের জন্য বরিশালের ভোলায় অবস্থান করছে বলে জানা গেছে।
এদিকে রোববার বিকালে নিখোঁজ অনয়ের গ্রামের পাশের গ্রাম বেলাব উপজেলার বিন্নাবাইদ ইউনিয়নের দীঘলদিকান্দি এলাকার আড়িয়াল নদে একটি ভাসমান মরদেহ দেখতে পেয়ে পুলিশে খবর দেয় স্থানীয়রা। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যায় পুলিশ, পিবিআই, সিআইডি, ডিবির সদস্যরা। অনয়ের পরিবারের দাবি এটি হত্যাকাণ্ড। তারা অনয় হত্যার সঙ্গে জড়িতদের সনাক্ত করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন।
নিখোঁজ অনয়ের চাচাতো ভাই পলাশ মোদক বলেন, ‘অনয় নিখোঁজ হওয়ার পরে আমরা বিভিন্ন জায়গায় খোঁজাখুঁজি করে তার খোঁজ না পেয়ে থানায় সাধারণ ডায়েরি করি। নিখোঁজের সংবাদ পেয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে লেখালেখি করলে একটি অজ্ঞাত নাম্বার থেকে আমাদের ফোন করে জানানো হয় তারা অনয়কে অপহরণ করেছে। তাদের কথামতো অনয়কে জীবিত পাওয়ার আশায় কয়েক দফায় বিকাশের মাধ্যমে এক লাখ টাকাও দিয়েছি। কিন্তু অনয়কে জীবিত পাইনি, পেয়েছি মৃত অবস্থায়। তারা অনয়কে হত্যা করেছে।’
বেলাব থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মীর মাহবুবুর রহমান সাংবাদিকদের বলেন, নদীতে ভাসমান মরদেহের খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে মরদেহ উদ্ধার করেছে।
নিখোঁজের স্বজনরা ধারণা করছেন, এটি অনয়ের মরদেহ। মরদেহটি বিকৃত হওয়ায় নিশ্চিত করে পরিচয় বলা যাচ্ছে না। মরদেহের সুরতহাল ও ডিএনএ পরীক্ষার পর জানা যাবে এটি অনয়ের মরদেহ কী না।