শুক্রবার (১১ জুলাই) বেলা ১২টা থেকে তাদের খোঁজ পাওয়া যাচ্ছিল না।
প্রায় একই সময় দুই শিশু নিখোঁজ হওয়ার পর শনিবার (১২ জুলাই) এক শিশুর মরদেহ মিলেছে বাড়ির অদূরে একটি পুকুরে।
শনিবার সন্ধ্যায় এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত অপর শিশুর কোনো খোঁজ পাওয়া যায়নি। এ ঘটনায় পুরো এলাকা জুড়ে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।
পুলিশ জানায়, শুক্রবার বেলা ১২টার দিকে গফরগাঁও উপজেলার পাঁচবাগ ইউনিয়নের চরশাঁখচূড়া গ্রামের সৌদি প্রবাসী নুরুল ইসলামের ছেলে মো. সিফাত (৯) নিখোঁজ হয়। সে স্থানীয় একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিল। শুক্রবার রাতে শিশু সিফাতের সৌদি প্রবাসী বাবা ও দেশে থাকা মা সাবিনা খাতুনের কাছে ফোন করে দুর্বৃত্তরা। তারা সিফাতকে জীবিত ফিরে পেতে চাইলে প্রথমে ২ হাজার ও পরে ১৫ হাজার টাকা মুক্তিপণ দাবি করে। কিন্তু বিষয়টি পুলিশকে জানালে পুলিশ প্রযুক্তির ব্যবহার করে তৎপরতা চালিয়ে দেখতে পারে একটি ঢাকার ধামরাই ও একটি ফোন ফরিদপুর থেকে করা হয়। ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া নম্বর দেখে প্রতারণার মাধ্যমে টাকা নেয়ার চেষ্টা করেছিল চক্র।
এদিকে শনিবার সকাল ৯টার দিকে বাড়ি থেকে প্রায় ৫০০ গজ দূরের একটি পরিত্যক্ত পুকুরে ভেসে উঠে শিশু সিফাতের মরদেহ। খবর পেয়ে দুপুর ২টার দিকে ঘটনাস্থল থেকে মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। পরে ময়নাতদন্তের জন্য ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজের মর্গে পাঠানো হয়।
অপরদিকে প্রায় একই সময় একই ইউনিয়নের দিঘীরপাড় গ্রামে নিখোঁজ হয় সাদাব হোসেন নামে এক শিশু। সাদাব নিখোঁজ হওয়ার ঘটনায় শুক্রবার রাতে পাগলা থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়।
আরও পড়ুন: ঘুরতে গিয়ে নৌকাডুবি, বড় বোনের পর পাওয়া গেল শিশু ফারিয়ার মরদেহ
শনিবার শিশু সিফাতের মরদেহ পুকুরে পাওয়ার খবরে সাদাব হোসেনের সন্ধানেও বাড়ির আশপাশের পুকুরে জাল ফেলে তল্লাশি চালানো হয়, কিন্তু খোঁজ মেলেনি। তবে বেলা ১২টার দিকে অপরিচিতি একটি ফোন নম্বর থেকে সাদাবের মা সুমি আক্তারের মুঠোফোনে প্রথমে ২০ হাজার টাকা ও পরে ৫০ হাজার টাকা মুক্তিপণ চাওয়া হয়।
শিশু সাদাবের স্বজনরা জানায়, দুই দফায় ২৮ হাজার টাকা পাঠানোর পর মুঠোফোনৱগুলো বন্ধ করে দিয়েছে মুক্তিপণ চাওয়া চক্রটি।
শিশু সাদাবের নানা সুলতান মিয়া বলেন, ‘আমার নাতিকে অপহরণ করা হয়েছে। ২৮ হাজার টাকা মুক্তিপণও দিয়েছি। কিন্তু ফেরত পাচ্ছি না।’
পাগলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ফেরদৌস আলম বলেন, ‘আমরা ধারণা করছি, শিশুটির ঘাড় মটকে হত্যার পর মরদেহ পুকুরে ফেলা হতে পারে। কারা কী কারণে হত্যা করেছে সে রহস্য উদঘাটনে আমরা কাজ করছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘অপর শিশু নিখোঁজের ঘটনায় জিডি হয়েছে, শিশুটি বাড়ির আশপাশের পুকুরে পড়ে থাকতে পারে।’