নিখোঁজ তামিমের ছবি নিয়ে জাতীয় সংগীত গাইলেন তপু-হামজারা

৩ সপ্তাহ আগে
নিখোঁজের ২১ দিনেও সন্ধান মেলেনি রাজবাড়ীর পাংশা উপজেলার কলিমহর ইউনিয়নের সাঁজুরিয়া গ্রামের সপ্তম শ্রেণি পড়ুয়া শিশু আব্দুলাহ ওরফে তামিমের (১৩)।

মঙ্গলবার (১০ জুন) নিখোঁজ তামিমের ছবি হাতে নিয়ে মাঠে প্রবেশ করেন সিঙ্গাপুরের বিপক্ষে ম্যাচের বাংলাদেশ অধিনায়ক তপু বর্মন। জাতীয় স্টেডিয়ামে দুই দেশের জাতীয় সংগীত চলাকালীনও তামিমের ফ্রেম করা ছবিটি হাতে ধরে রেখেছিলেন তপু।


গত ২০ মে সকাল ৯টার দিকে স্কুলে যাওয়ার উদ্দেশে বাড়ি থেকে বের হয়ে আর ফিরে আসেনি তামিম। এরপর থেকে তাকে আর খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। নিখোঁজের দিন তার গায়ে গোলাপী রঙের স্কুল ড্রেসের জামা, পরনে টাউজার, হাতে একটি ঘড়ি ছিল এবং সে একটি বাইসাইকেল নিয়ে বের হয়েছিল।


নিখোঁজ স্কুলছাত্র আব্দুল্লাহ ওরফে তামিম পাংশা উপজেলা কলিমহর ইউনিয়নের সাঁজুরিয়া গ্রামের বাসিন্দা মো. নজরুল ইসলামের একমাত্র ছেলে। সে বাড়ির পা‌শের গ্রা‌মে সরিষা-প্রেমটিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণিতে পড়তো।

আরও পড়ুন: সিঙ্গাপুরের নাভিশ্বাস তুলেও হেরে গেলো বাংলাদেশ

ছেলে নিখোঁজের ঘটনায় পরিবারে নেমে এসেছে গভীর শোক ও উৎকণ্ঠা। ছেলের খোঁজে দিন-রাত প্রহর গুনছেন মা-বাবা। একমাত্র ছেলেকে ফিরে পাওয়ার আশায় সব সম্ভাব্য জায়গায় খোঁজাখুঁজি করা হয়েছে। আত্মীয়স্বজন, পাড়া-প্রতিবেশী, বন্ধু-বান্ধব এমনকি আশপাশের কয়েকটি জেলাতেও খোঁজ নেওয়া হয়েছে। তামিমের সন্ধান চেয়ে গত ৩ জুন মানববন্ধন ও সংবাদ সম্মেলনও করেছে পরিবার ও এলাকাবাসী। কিন্তু কোনো সুরাহা হয়নি।


নিখোঁজের পরদিন অর্থাৎ ২১ মে তামিমের বাবা পাংশা মডেল থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন (যার নম্বর-৯১৪)। পুলিশ অনুসন্ধান শুরু করেছে, তবে এখন পর্যন্ত কোনো অগ্রগতি হয়নি।


বিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, ঘটনার দিন সকাল ৭টা থেকে ৮টা পর্যন্ত তামিম গণিত শিক্ষক কবিরুল ইসলামের কা‌ছে প্রাইভেট পড়তে যায়। এরপর সে বাড়িতে ফিরে আবার প্রস্তুত হ‌য়ে স্কুলে যাওয়ার পথে নিখোঁজ হয়।
বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা জানিয়েছেন, তামিম অত্যন্ত শান্ত ও বিনয়ী ছাত্র ছিল। তার নিখোঁজ হওয়ায় তারাও মর্মাহত।


নিখোঁজ তামিমের বাবা নজরুল ইসলাম বলেন, ‘তামিম খুবই শান্ত ও নম্র স্বভাবের ছেলে। নিয়মিত নামাজ পড়ত, কোনো ঝামেলায় জড়াত না। আমরা তাকে ঘিরেই আমাদের জীবনের স্বপ্ন দেখতাম। তার এভাবে হঠাৎ হারিয়ে যাওয়া আমাদের মানসিকভাবে ভেঙে দিয়েছে। এখনও বিশ্বাস করতে পারছি না, সে আর বাড়ি ফিরছে না।’


নজরুল ইসলাম কান্নাজড়িত কণ্ঠে আরও বলেন, আমার একমাত্র ছেলেটিকে ফিরে পেতে আমি যে কোনো মূল্যে প্রস্তুত। কেউ যদি তার কোনো খোঁজ দিতে পারেন, তাকে উপযুক্ত পুরস্কার দেওয়া হবে।

আরও পড়ুন: ম্যাচের আগে বোদে পুড়ে বৃষ্টিতে ভিজে একাকার সমর্থকরা

এ বিষয়ে পাংশা মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ সালাউদ্দিন বলেন, ‘ছেলেটিকে উদ্ধারে আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা চালাচ্ছি। এখনও তার কোনো সুনির্দিষ্ট সন্ধান পাওয়া যায়নি। তামিম তার সাইকেলসহ নিখোঁজ রয়েছে, যা আমাদের কিছুটা বিভ্রান্তিতে ফেলেছে। যদি কেউ অপহরণ করত, তাহলে অন্তত বাইসাইকেলটি পাওয়া যেত। আমরা সবদিক বিবেচনায় নিয়ে তদন্ত করছি।’

 

]]>
সম্পূর্ণ পড়ুন