সোমবার (১৬ ডিসেম্বর) বেলা এগারোটার দিকে উপজেলা পরিষদ কার্যালয়ের স্মৃতিস্তম্ভে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদনের সময় সোনারগাঁ থানা বিএনপির সভাপতি আজহারুল ইসলাম মান্নান ও বিএনপির সাবেক মন্ত্রী রেজাউল করিমের সমর্থকদের মধ্যে এই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
আহতরা হলেন: আজহারুল ইসলামের অনুসারী যুবদল কর্মী মো. রতন, মামুন মোল্লা, রনি মোল্লা, মোবারক মোল্লা, রিফাত মোল্লা ও মো. ভুবন এবং রেজাউল করিমের অনুসারী কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার হোসেন, সোনারগাঁ যুবদলের জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক নূর ইয়াসিন, যুবদল নেতা আতাউর রহমান, হাবিবুর রহমান, যুবদল কর্মী শাহ পরান ও শাহ আলম।
আহতদের মধ্যে যুবদল কর্মী মো. রতনকে কুপিয়ে জখম করা হয়েছে। মুমূর্ষু অবস্থায় তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। বাকিরা ইটপাটকেলের আঘাতে আহত হয়েছেন। তাদের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও স্থানীয় বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন: আধিপত্য বিস্তার নিয়ে বিএনপির দুপক্ষের সংঘর্ষ, গুলিবিদ্ধ ৩
জানা গেছে, দুই পক্ষই লাঠিসোঁটা ও ধারালো অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করে। দেশীয় অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে জখম করে। খবর পেয়ে অতিরিক্ত পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে এবং আহতদের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও বিভিন্ন বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে চিকিৎসা দেয়া হয়।
উভয়পক্ষের নেতা-কর্মী, পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শী লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সোনারগাঁ থানা বিএনপির এক সময়ের প্রভাবশালী নেতা ও সাবেক প্রতিমন্ত্রী রেজাউল করিম এবং থানা বিএনপির বর্তমান সভাপতি আজহারুল ইসলামের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে রাজনৈতিক বিরোধ চলছে।
সোমবার সকাল দশটায় আজহারুল ইসলাম মান্নান তার অনুসারী নেতা-কর্মীদের নিয়ে উপজেলা চত্বরে অবস্থিত সোনারগাঁ কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে বিজয় দিবসের শ্রদ্ধা জানান। পরে উপজেলা কার্যালয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফারজানা রহমান ও সোনারগাঁর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ আব্দুল বারীর সঙ্গে বৈঠক করছিলেন আজহারুল ইসলাম। আজহারুল ইসলামের অধিকাংশ নেতা-কর্মী শহীদ মিনার থেকে চলে গেলেও কিছু নেতা-কর্মী উপজেলা চত্বরে অপেক্ষমাণ ছিলেন।
এসময় নেতা-কর্মীদের নিয়ে শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা জানাতে আসেন রেজাউল করিম। তখন উপজেলা চত্বরে থাকা আজহারুল ইসলামের সমর্থক ও রেজাউল করিমের সমর্থকদের মধ্যে পাল্টাপাল্টি স্লোগান, কটূক্তি ও ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া হয়। এসময় পুরো এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়।
আরও পড়ুন: হরিণাকুন্ডুতে বিএনপির কর্মীসভায় অপর গ্রুপের হামলা, আহত ৭
এ বিষয়ে সোনারগাঁ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ আব্দুল বারী বলেন, ‘ঘটনার সময় আমি সেখানেই ছিলাম। পূর্ববিরোধ থেকে দুই পক্ষের মধ্যে হাতাহাতি ও ইটপাটকেল নিক্ষেপ হয়েছে। আমরা দ্রুত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয়েছি। পরে শুনেছি একজন যুবদল নেতাকে কুপিয়ে জখম করা হয়েছে। এ ঘটনায় কেউ অভিযোগ দিলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
]]>