নবীজির আবির্ভাব যেভাবে

৩ সপ্তাহ আগে
পৃথিবীতে একটি বংশই প্রতিষ্ঠিত। আদম বংশ।পরম্পরায় অসংখ্য নবী পৃথিবীতে আগমন করেন।আদম আ: এর নিকটবর্তী নবী হলেন নূহ আ:। নূহ আ: এর যুগে যেই নবী পৃথিবী আলোকিত করেন,তিনি হজরত ইব্রাহিম আ:। তাঁর আগমন অঞ্চল ইরাক।

তৎকালীন শাসন ব্যবস্থা ও ধর্মীয় রীতি ছিল না বললেই চলে। ধর্ম কর্ম মনগড়া গড়ে উঠে। যার যা মন চায়,করে। বৈধ অবৈধ বলতে কিছু ছিল না।কেউ তারকার ইবাদত করছে। কেউ চাদকে লক্ষ করে লুটিয়ে পড়ছে।কেউ সূর্যকে ক্ষমতার অধিকারী ভাবছে। কেউ মূর্তিপুজা করছে।


কিন্তু হজরত ইব্রাহিম আ. ছিলেন ব্যতিক্রম। তার মনে প্রতিটি বিষয়ে প্রশ্ন জাগে। যদি নক্ষত্র প্রভু হয়ে থাকে, তাহলে ভোর হলেই মিলিয়ে যায় কেন? চাদ যদি ইবাদতের উপযুক্ত হয়, তবে দিনের আলোয় দেখা যায় না কেন? সূর্য যদি সকল ক্ষমতার অধিকারী হয়, তাহলে রাতে জ্বলতে পারে না কেন? আর এই মূর্তিগুলো, যারা দাড়ানোর বা কথা বলার শক্তিই রাখে না, তারা কি করে হবে সর্বশক্তিবান?

 

তিনি মনস্থির করলেন আসমান, জমিন, চাদ-সূর্য, নক্ষত্র, গ্রহ উপগ্রহ যার কথায় অচল সচল হয়, তিনিই আমার রব। হজরত ইবরাহিম আ. সকলকে বুঝাতে লাগলেন। এ সকল বস্তুর কোন আপন শক্তি নেই, তা মানুষের কানে পৌঁছে দিলেন। কিন্তু অন্ধকারের মানুষ আলো চিনলো না। এদিকে ইবরাহীম আ. থেমে থাকলেন না। চেষ্টা-প্রচেষ্টা বাড়িয়ে দিলেন। পরিকল্পনার পরিধি প্রসারিত করলেন। একবারের ঘটনা। 

 

তিনি সুযোগ বুঝে মন্দিরে প্রবেশ করে সমস্ত মূর্তি ভেঙে ফেললেন। ইবরাহিম আ. নামে বিচার বসলো মূর্তি ভাঙার দায়ে। সিদ্ধান্ত হলো তাকে আগুনে পুড়িয়ে হত্যা করা হবে। আল্লাহর কুদরতে এই মুসিবত হতে উদ্ধার পেল ইবরাহীম আ.।

 

আরও পড়ুন: ইনশাআল্লাহ ব্যবহারের নিয়ম


তিনি ইরাক ছেড়ে চলে আসলেন সিরিয়ায় তারপর মিশর। কোথাও কাজ হলো না। সঠিক পথের কোনো যাত্রী তিনি পেলেন না। ইত্যেবসরে তার দুটি ছেলে সন্তান জন্ম লাভ করে।বড় ছেলে ইসহাক। 

 

ছোট ছেলে ইসমাইল। হজরত ইসহাক আ. কে রাখলেন সিরিয়ায়। হযরত ইসমাইল আ:কে নিয়ে বসতি গাড়লেন আরবের মক্কায়। মক্কা তখন মরুভূমি। বসতি নেই।ফাঁকা অঞ্চল। তবে এদিক দিয়ে সিরিয়ার বনিকেরা বাণিজ্যিক উদ্দেশ্যে এ অঞ্চল দিয়ে আসা যাওয়া করতেন।


মক্কায় প্রথম বসতি হচ্ছে ইসমাইল গোত্রের। ধীরে ধীরে বসতি বাড়ে। অন্য জায়গায়ার লোকজন  এখানে বসতি স্থাপন করে। আল্লাহর নির্দেশে হজরত ইসমাইল আ: কাবা নির্মাণ করেন। যেন ইবাদতদের সুনির্দিষ্ট জায়গা ও প্রভুর দীশা মানুষ পায়।


ইসমাইল পরিবার কালপরিক্রমায় কয়েক ভাগে বিভক্ত হয়। তার মধ্যে একটি গোত্রের নাম বনু হাসেম। তিনি ছিলেন ধনাঢ্য ব্যক্তি। আত্মসম্মান ও মর্যাদায় নিজেকে দাড় করেছেন দারুণ উপমায়।

 

বাণিজ্যিক ব্যক্তিবর্গ ও মুসাফিরদের খাবার পানির ব্যবস্থা করতেন তিনি। পার্শ্ববর্তী অঞ্চল ইরাক সিরিয়া মিশর,এই দেশকর্তাদের সাথে এমন চুক্তি করলেন যে, মক্কার বাণিজ্যিক কাফেলাগুলো যেন সর্বক্ষেত্রে নিরাপত্তা পায়। তাদেরকে হত্যা করা না হয়।চুরি ডাকাতির হাত হতে রক্ষা পায়। পাশাপাশি আমরাও আপনারদের বাণিজ্যিক বহরের নিরাপত্তা নিশ্চিত করবো। পথ পাহাড় নিরাপদ রাখবো।

 

বনু হাসেমের রাজনৈতিক কৌশল ও চৌকস স্বভাব  মানুষের কাছে প্রিয় হয়ে উঠে। এই চৌকস ব্যক্তি বিয়ে করেন ইয়াসরিবের (মদিনা) বনু নাজ্জার গোত্রে। আল্লাহ পাক তাকে একটি মাত্র ছেলে সন্তান দান করেন। নাম শাইবা। পরবর্তীতে আব্দুল মুত্তালিব নামে পরিচিতি লাভ করেন। বনু হাসেম কাল অবসান হলো। আব্দুল মুত্তালিব সকল দায় দায়িত্ব বুঝে নিলেন। 

 

বিশেষত কাবা ঘরের পবিত্রতা রক্ষা করা, ভালো মন্দ দেখে শুনে রাখা;এই মহান দায়িত্ব তিনি পালন করেছেন। আব্দুল মুত্তালিবেরও সংসার হলো। বড় সংসার। দশজন ছেলে সন্তানের বাবা হলেন তিনি।তার দশজনের নাম ছিল আব্দুলাহ।যিনি নবী কারিম সা. এর পিতা হওয়ার সৌভাগ্য অর্জন করেন।

 

]]>
সম্পূর্ণ পড়ুন