নবীজিকে ইহুদি নারীর বিষ প্রয়োগের ঘটনা

৩ সপ্তাহ আগে
মহান আল্লাহ ইহুদিদের মাঝে বহু নবী-রসুল পাঠিয়েছেন। তাদেরকে আসমানি কিতাবও দিয়েছেন। তাই তাদের বলা হয় আহলে কিতাব। যারা মুসা (আ.)-এর পর প্রেরিত আল্লাহর দুজন নবী ঈসা (আ.) ও মুহাম্মাদ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে নবী হিসেবে স্বীকার করে না, তারা ‘ইহুদি’ নামে পরিচিত।

ইহুদিদের নাম ‘ইহুদি’ হলো যেভাবে!

 

ইহুদি শব্দটি পবিত্র কোরআনে ৯ বার উল্লেখ করা হয়েছে। ইহুদিরা হজরত ইয়াকুব আলাইহিস সালামের বংশধর। ইহুদি শব্দটি এসেছে ইয়াহুদা থেকে, যিনি ছিলেন হজরত  ইয়াকুব আলাইহিস সালামের জ্যেষ্ঠপুত্র ও হজরত ইউসুফ আলাইহিস সালামের ভাই। মূলত শব্দটি ছিল ইয়াহুজা। জালকে দাল দিয়ে পরিবর্তন করে আরবি করা হয়েছে।

 

নবীজিকে ইহুদি নারীর বিষ প্রয়োগের ঘটনা!

 

খায়বর বিজয়ের পর নবীজি সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একটু নিশ্চিন্ত হলেন। এ সময় বিতাড়িত বনু নাজির গোত্রের অন্যতম নেতা ও কোষাধ্যক্ষ সাল্লাম বিন মিশকামের স্ত্রী যয়নব বিনতুল হারেছ বিষপ্রয়োগ করে নবীজি সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে হত্যা করার চেষ্টা করে। নবীজিকে কিছু ভুনা গোশত হাদিয়া পাঠায়। কিন্তু তার উদ্দেশ্য ছিল খারাপ। সে বিষ মিশ্রিত গোশত পাঠিয়েছিল।

 

ইহুদিদের একটি স্বভাব হল নবীদের কষ্ট দেওয়া। তারা মুসা আলাইহিস সালামকে কষ্ট দিয়েছে। ঈসা আলাইহিস সালামকে কষ্ট দিয়েছে। এমনকি আমাদের নবীজি সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকেও অনেক কষ্ট দিয়েছে।

 

আরও পড়ুন: নামাজের উপকারিতা ও ফজিলত

 

ইহুদি নারীর ভয়ংকর দুরভিসন্ধির কথা তো আর নবীজির জানা ছিল না। আর জানবেনই বা কীভাবে; নবীজি তো গায়েব জানতেন না। ভবিষ্যতের যে বিষয় আল্লাহ জানাতেন তাই তিনি জানতেন। ভবিষ্যতের যে কথা আল্লাহ তাকে বলে দিতেন তাই তিনি বলতেন; নিজে থেকে গায়েবের কোনো বিষয় জানা তাঁর পক্ষে সম্ভব ছিল না। কারণ, গায়েবের খবর জানেন একমাত্র মহান আল্লাহ; একথা মহান আল্লাহ কোরআনে বলেছেন।

 

যাইহোক, তার পাঠানো ভুনা গোশত নবীজি ও তার কয়েকজন সাহাবি খাওয়া শুরু করলেন। পরক্ষণেই নবীজি বললেন, সবাই গোশত থেকে হাত উঠিয়ে নাও; কেউ আর একটু গোশতও মুখে দেবে না! সবাই তো অবাক! হল কী?

 

নবীজি সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন,

 

إنَّ هَذَا الْعَظْمَ لَيُخْبِرُنِي أَنَّهُ مَسْمُومٌ 

 

অর্থ: এই গোশতই আমাকে বলে দিয়েছে- তাতে বিষ মেশানো। সুতরাং খবরদার তোমরা তাতে হাত দিবে না।

 

এ গোশত খেয়ে ফেলার কারণে বিশর বিন বারা বিন মারুর এক টুকরা চিবিয়ে খেয়ে ফেলেছিলেন। যাতে তিনি মারা যান। কিন্তু আল্লাহ নবীজিকে রক্ষা করলেন। নবীজির কিছু হল না।

 

এরপর নবীজি ওই ইহুদি নারীকে ডেকে পাঠালেন। বললেন, তুমি কেন এতে বিষ মিশিয়েছ? সে বলল, আপনাকে কে বলল- আমি এতে বিষ মিশিয়েছি? নবীজি বললেন, তুমি যে গোশতে বিষ মিশিয়েছ সেই গোশতই আমাকে বলে দিয়েছে!

 

তো কী উদ্দেশ্যে এতে বিষ মিশ্রিত করেছ? সে বলল, 

 

إنْ كَانَ مَلِكًا اسْتَرَحْتُ مِنْهُ، وَإِنْ كَانَ نَبِيًّا فَسَيُخْبَرُ

 

অর্থ: আপনি যদি সত্য নবী হন তাহলে আমার জানামতে এ বিষ আপনার কোনো ক্ষতি করতে পারবে না। আর যদি তা না হন; সাধারণ রাজা-বাদশা হন তাহলে আপনার থেকে মানুষেরা নিষ্কৃতি পাবে।

 

আরও পড়ুন: দেশে ফিরেছেন ২৬ হাজার ১০৯ হাজি

 

হ্যাঁ, ওই ইহুদি নারীর ধারণা সত্য প্রমাণিত হয়েছে। বিষ নবীজির কোনো ক্ষতি করতে পারেনি। বরং নবীজির মুজেজা প্রকাশ পেয়েছে; মুমিনের ঈমান মজবুত হয়েছে, কাফেরের সামনে নবীজির সত্যতা প্রমাণিত হয়েছে। (আবু দাউদ, হাদিস: ৪৫১২; মুসতাদরাকে হাকেম, হাদিস: ৪৯৬৭)

]]>
সম্পূর্ণ পড়ুন