নতুন অধিনায়ক লিটনের ভাবনায় লম্বা সময়ের পরিকল্পনা

৫ দিন আগে
নাজমুল হোসেন শান্ত টি-টোয়েন্টির নেতৃত্ব ছাড়ার পর থেকেই এই ফরম্যাটে স্থায়ী সমাধানের কথা ভাবছিল বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড। ওয়েস্ট ইন্ডিজ সিরিজে পরীক্ষা দিয়ে সেই আস্থা অর্জন করেছেন লিটন দাস। ২০২৬ সাল পর্যন্ত তাকে এই ফরম্যাটের অধিনায়ক করেছে বিসিবি।

আগে কয়েকবার ক্ষণস্থায়ী অধিনায়কের দায়িত্ব পেলেও এবারই প্রথম পূর্ণাঙ্গ দায়িত্ব পেয়েছেন লিটন। আর নতুন দায়িত্ব পেয়ে লম্বা সময়ের পরিকল্পনা নিয়ে এগোনোর কথা ভাবছেন এই ওপেনার। অধিনায়ক হওয়ার পর আজ (১২ মে) প্রথমবার সংবাদ সম্মলেনে এসে জানালেন, ভবিষ্যতের কথা মাথায় রেখে পরিকল্পনা করছেন তিনি।

 

লিটন বলেন, ‘আগের যেই পরিকল্পনাগুলো ছিল সেটা তাৎক্ষণিক সেই সিরিজের জন্য। যেহেতু এখন লম্বা সময়ের জন্য সুযোগ এসেছে, আমার চিন্তাগুলো এখন ভবিষ্যতকেন্দ্রিক হবে। এখন আমি জানি আমার এতদিন পর্যন্ত (২০২৬ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ) একটা লক্ষ্য আছে। অবশ্যই সিরিজের বিষয়টা এখনও থাকবে কিন্তু ভবিষ্যতের বিষয়টাও মাথায় থাকবে।’

 

তিনি আরও বলেন, ‘লম্বা সময়ের জন্য সুযোগ পেলে অনেক কিছু চিন্তা করার সু্যোগ থাকে। এখন দেখার বিষয় হলো এই সময়ের মধ্যে আমি দলকে কতটা গুছিয়ে নিতে পারি। আমার জায়গা থেকে আমি অনেক আশাবাদী। লম্বা সময় এবং আমাদের যেসব খেলোয়াড় আছে তাদের নিয়ে আশা করি ভালো কিছু উপহার দিতে পারব।’ 

 

আরও পড়ুন: টেস্ট ক্রিকেটের ইতিহাসে অনন্য এক নক্ষত্র বিরাট কোহলি

 

এর আগেও অনেকবার বাংলাদেশ দলের অধিনায়ক হওয়ার আলোচনায় ছিলেন লিটন। তবে কোনোবারই পূর্ণাঙ্গ দায়িত্ব পাননি। সেই বিষয়টা মাথায় রেখে নিজেকে প্রমাণ করার কথা ভাবছেন কিনা, এমন প্রশ্নের উত্তরে লিটন বলেন, ‘এখানে জেদের কিছু নেই। প্রত্যেকটা আন্তর্জাতিক খেলোয়াড়ই চায় পারফর্ম করতে। আর প্রত্যেকটা বাংলাদেশের অধিনায়কই চায় দল জিতুক। আমিও ব্যতিক্রম কিছু নই। আমি চাই আমার হাত ধরেই বড় কিছু হোক বা আমার অধিনায়কত্বে আমরা সিরিজ জিততে পারি। লক্ষ্য একটাই।’  

 

দলকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে খেলোয়াড়দের বিষয়টিকেই প্রাধান্য দিচ্ছেন লিটন। সবার সঙ্গে ভালোভাবে মিশে গিয়ে তাদের প্রয়োজন এবং সমস্যাগুলো সমাধানের জন্য সর্বোচ্চটা দেয়ার অঙ্গীকার করেছেন টাইগার অধিনায়ক। 

 

‘বাংলাদেশ দল এগিয়ে যেতে হলে সবচেয়ে বড় দায়িত্ব পালন করতে হবে ক্রিকেটারদের। আমরা ভালো খেললেই দল আগাবে। প্রথমত আমাদের খেলোয়াড়দের সবার নিজেদের দায়িত্ব ভালোভাবে পালন করতে হবে। যতটা বিসিবির সাথে আমি যোগাযোগ করব, তার চেয়ে বেশি করব খেলোয়াড়দের সাথে- তাদের চাওয়া কী, কোন জায়গায় উন্নতি করতে হবে। আমি তো কেবল আসলাম, যত সময় যাবে তত আমি বিষয়টার সাথে অভ্যস্ত হতে পারব।’ 

 

অধিনায়ক লিটনের সামনে বড় চ্যালেঞ্জ নিজের পারফরম্যান্স। ব্যাট হাতে গত দেড় বছর ধরে সময়টা ভালো যাচ্ছে না অধিনায়কের। অধিনায়ক হওয়াতে চাপটা আরও বাড়ল কিনা, সেই প্রশ্নের উত্তরে লিটন বলেন, ‘চাপের কিছু নেই। আমি যখন অধিনায়ক ছিলাম না তখনও পারফরম্যান্স খারাপ ছিল, এমন না যে এখনও খারাপ হবে। এটা (অধিনায়কত্ব) একটা প্লাস পয়েন্ট হতেই পারে। আমি বিশ্বাস করি, যারা ইতিবাচকভাবে চিন্তা করে, তাৎক্ষণিকভাবে ১-২ দিন ব্যর্থ হলেও ফলাফল আসে। আমি ওই জায়গায় আছি। আমি ইতিবাচকভাবে চিন্তা করছি যেন ফলাফলটা আমার দিকে নিয়ে আসতে পারি।’ 

 

আরও পড়ুন: শচীনের বিদায়ের দিনে যে উপহার দিতে চেয়েছিলেন কোহলি

 

লিটন আরও বলেন, ‘ক্রিকেটাররা ১-২ টা সিরিজ খারাপ খেলে, আবার কামব্যাক করে। আমি ওই চেষ্টাটাই করব....আমার যে খেলার ধরণ বা আমি যেরকম খেলোয়াড় সেরকমটা যেন বাংলাদেশকে দিতে পারি। আমি পারফর্ম করলে দলের অনেক উপকার হবে।’ 

 

সাকিব আল হাসান, মাশরাফী বিন মর্তুজাসহ অনেক বড় বড় তারকার নেতৃত্বে খেলেছেন লিটন। তাদের কাছ থেকে শেখা গুণগুলো মাঠে অধিনায়কত্বের সময় কাজে লাগাতে চান তিনি। ‘সবারই কিছু গুণ আছে। আমি যেহেতু অনেকদিন খেলেছি আমি চেষ্টা করব বড় ভাইদের (আগের অধিনায়কদের) যেসব গুণ ছিল সেগুলো অ্যাপ্লাই করতে হবে মাঠ এবং মাঠের বাইরে। তাহলে আমি খেলোয়াড়দের আরও কাছে যেতে পারব এবং পারফরম্যান্স আদায় করে নিতে পারব।’ 

 

‘মাঠে অনেক দায়িত্ব থাকবে। আপনি সবসময় বাহবা পাবেন এমন না। দুটো বিষয়কে নিয়েই এগোতে হবে’, লিটন যোগ করেন। 

 

দলের প্রস্তুতি কেমন চলছে, সেই প্রশ্নের জবাবে লিটন বলেন, ‘পাওয়ার হিটিংয়ের প্রস্তুতি চলছে। কারণ আমরা জানি টি-টোয়েন্টিতে বড় শট খেলতে হয়। সেই সঙ্গে যে যত ডট বল খেলতে পারে সেটাও তার জন্য সুবিধা। দুইভাবেই কাজ করছি।’

]]>
সম্পূর্ণ পড়ুন