সোমবার (১২ মে) জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত এক বৈঠকে আম সংগ্রহের সময়সূচি নির্ধারণ করা হয়। এতে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আবদুল আউয়ালের সভাপতিত্বে উপস্থিত ছিলেন আমচাষি, ব্যবসায়ী, কৃষি কর্মকর্তা ও অন্যান্য প্রশাসনিক কর্মকর্তারা।
প্রশাসনের বেঁধে দেওয়া সময়সীমা অনুযায়ী, চলতি মাসের ২২ মে থেকে গুঁটি আম, ২৮ মে থেকে গোপালভোগ, ২ জুন ক্ষীরসাপাতি বা হিমসাগর, ৫ জুন নাক ফজলি, ১০ জুন ল্যাংড়া ও হাঁড়িভাঙা, ২৫ জুন ফজলি, ১৮ জুন আম্রপালি, ব্যানানা ম্যাঙ্গো ২৫ জুন এবং আগামী ১০ জুলাই থেকে আশ্বিনা, বারি আম-৪, গৌড়মতি ও কাটিনা আম সংগ্রহ করা যাবে।
চলতি বছর নওগাঁয় ৩০ হাজার ৩০০ হেক্টর জমিতে আম চাষ হয়েছে। প্রতি হেক্টরে ১২ দশমিক ৭৮ টন হিসাবে জেলায় আম সংগ্রহের মোট লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৩ লাখ ৮৭ হাজার ২৩৪ টন। চলতি মৌসুমে এ জেলায় প্রায় ৩ হাজার কোটি টাকার আম-বাণিজ্য হতে পারে বলে ধারণা করছে স্থানীয় প্রশাসন ও কৃষি বিভাগ।
জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আবদুল আউয়ালের সভাপতিত্বে আয়োজিত ওই সভায় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন নওগাঁর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর নওগাঁর উপপরিচালক আবুল কালাম আজাদ।
জেলা প্রশাসক আবদুল আউয়াল বলেন, নির্ধারিত সময়ের আগে কোনোভাবেই অপরিপক্ব আম সংগ্রহ কিংবা বাজারে তোলা যাবে না। তবে সময়ের আগে আবহাওয়ার কারণে আম পরিপক্ব হলে সংশ্লিষ্ট উপজেলা প্রশাসন ও কৃষি বিভাগের নির্দেশনা অনুযায়ী আমচাষিরা তারিখ পুনর্নির্ধারণ করে সময়ের আগে আম সংগ্রহ করতে পারবেন।
আরও পড়ুন: সাতক্ষীরার বাজারে আমের সরবরাহ বেড়েছে, দাম না পেয়ে হতাশ চাষিরা
আম পাকানো ও সংরক্ষণ বা বাজারজাতে কোনো রাসায়নিক মেশানো যাবে না। আমে ভেজাল ঠেকাতে পরিবহনের আগে এই অঞ্চলের সবচেয়ে বড় আমের বাজার সাপাহার উপজেলা সদর ব, পোরশার নোচনাহার, সরাইগাছি পত্নীতলা এবং বদলগাছী ।
নওগাঁয় চাষ হওয়া আমের প্রায় ৭০ শতাংশ আম্রপালি আম চাষ হয়ে থাকে। সারা দেশে নওগাঁয় উৎপাদিত আম্রপালি আমের ব্যাপক সুখ্যাতি আছে। এ ছাড়া নাক ফজলি, বারি আম-৪, গৌড়মতি, ব্যানানা ম্যাঙ্গো ব্যাপক পরিমাণে চাষ হয়ে থাকে।
নওগাঁ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপপরিচালক আবুল কালাম আজাদ বলেন, তারিখ অনুযায়ী আম সংগ্রহ করতে জেলাজুড়ে ব্যাপক প্রচারণা চালানো হবে। মূলত ভোক্তাদের পরিপক্ব ও ক্ষতিকারক রাসায়নিক দ্রব্যমুক্ত আম খাওয়াতে জাতভেদে আম সংগ্রহের সময়সীমা বেঁধে দেওয়া হয়েছে।
স্থানীয় ভোক্তাদের ভেজালমুক্ত আম খাওয়ানো নিশ্চিতের পাশাপাশি বিদেশে আম রপ্তানি বৃদ্ধির জন্য প্রশাসন ও কৃষি বিভাগ তৎপর রয়েছে। গত বছর এ জেলা থেকে প্রায় ৩০০ মেট্রিক টন আম মধ্যপ্রাচ্য ও ইউরোপের বিভিন্ন দেশে রফতানি করা হয়েছে। এবার চীনে আম রপ্তানি হওয়ার সম্ভাবনা আছে। এ বছর রপ্তানির পরিমাণ বাড়ানোর বিষয়ে নানা ধরনের উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে।