ধর্ষণের শিকার শিশুর অভিভাবকের সঙ্গে দুর্ব্যবহার, বরখাস্ত হলেন সেই চিকিৎসক

১ সপ্তাহে আগে
ধর্ষণের শিকার এক শিশুর পরিবারের সঙ্গে অশোভন আচরণের অভিযোগে পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) ডা. আবুল কাশেমকে সাময়িক বরখাস্ত করেছে স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয়।

সোমবার (২২ সেপ্টেম্বর) স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব মো. সাইদুর রহমান স্বাক্ষরিত আদেশে এই সিদ্ধান্ত জানানো হয়। পঞ্চগড় সিভিল সার্জন ডা. মিজানুর রহমান সময় সংবাদকে বলেন, ‘বরখাস্তের আদেশটি বেলা তিনটার দিকে ই-মেইলের মাধ্যমে পেয়েছি।’

 

মন্ত্রণালয়ের বরখাস্তের আদেশে বলা হয়েছে, ডা. আবুল কাশেমের আচরণ সরকারি কর্মচারী আচরণবিধির পরিপন্থী। এটি সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা ২০১৮-এর ৩(খ) ধারা অনুযায়ী ‘অসদাচরণ’ হিসেবে গণ্য হবে।

 

এর আগে গত বৃহস্পতিবার (১৮ সেপ্টেম্বর) হাসপাতালের মহিলা ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন ধর্ষণের শিকার পাঁচ বছর বয়সী শিশুর বাবার কাছ থেকে মামলাসংক্রান্ত কাগজপত্র না পাওয়ায় ক্ষিপ্ত হন ডা. আবুল কাশেম। তিনি শিশুটির বাবাকে গালিগালাজ করেন এবং ক্ষিপ্ত হয়ে শিশুকে ছাড়পত্র দিয়ে দেন। সেই ঘটনার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দ্রুত ছড়িয়ে পড়লে ব্যাপক সমালোচনা শুরু হয়। ভিডিওতে দেখা যায়, চিকিৎসক শিশুর বাবা-স্বজনের সঙ্গে অশালীন, অপমানজনক আচরণ করেছেন এবং হুমকিস্বরূপ আক্রমণাত্মক ভাষা ব্যবহার করেছেন।

 

আরও পড়ুন: ধর্ষণের শিকার শিশুর অভিভাবককে চিকিৎসকের গালিগালাজ, ভিডিও ভাইরাল!

 

ঘটনার পরপরই সিভিল সার্জন ডা. মিজানুর রহমান অভিযুক্ত চিকিৎসককে কারণ দর্শানোর নোটিশ (শোকজ) দেন এবং তাৎক্ষণিকভাবে আরএমও পদ থেকে সরিয়ে দেন। গত শনিবার (২০ সেপ্টেম্বর) ডা. আবুল কাশেম শোকজের জবাব দেন। এরপর স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে প্রতিবেদন পাঠানো হয় এবং মন্ত্রণালয় তাকে সাময়িক বরখাস্তের আদেশ দেয়। সিভিল সার্জন জানান, তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা দায়ের করা হবে।

 

তবে বরখাস্ত চিকিৎসকের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তার ফোন বন্ধ পাওয়া গেছে।

 

এর আগে গত রোববার (১৪ সেপ্টেম্বর) দেবীগঞ্জ পৌরসভার একটি এলাকায় পাঁচ বছর বয়সী এক শিশুকে ধর্ষণের অভিযোগ ওঠে প্রতিবেশী কণিক রায় (১৭) নামে এক কিশোরের বিরুদ্ধে। শিশুটিকে প্রথমে দেবীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এবং পরে পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। বৃহস্পতিবার রাতে শিশুর বাবা দেবীগঞ্জ থানায় মামলাটি দায়ের করেন।

 

এর মাঝে হাসপাতালে অনাকাঙ্ক্ষিত সেই ঘটনাটি ঘটে। এদিকে ডা. আবুল কাশেমের দাবি, কাজের চাপের কারণে ওইদিন তিনি ভুল করেছেন এবং পরে শুক্রবার (১৯ সেপ্টেম্বর) পরিবারের কাছে ক্ষমা চেয়েছেন।

 

দেবীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সোয়েল রানা সময় সংবাদকে বলেন, অভিযুক্ত কিশোর রোববার (২১ সেপ্টেম্বর) দুপুরে পঞ্চগড় আদালতে আত্মসমর্পণ করেছেন। আদালতের নির্দেশে তাকে যশোর কিশোর সংশোধনাগারে পাঠানো হয়েছে।

]]>
সম্পূর্ণ পড়ুন