আয় বৈষম্য বেড়ে যেমন দেশের মোট সম্পদের ৩০ শতাংশের বেশি (৩০ দশমিক শূন্য ৪ শতাংশ) পুঞ্জিভূত হয়েছে ৫ শতাংশ শীর্ষ ধনীর হাতে; তেমনি সবচেয়ে গরীব ৫ শতাংশ মানুষের মোট সম্পদের পরিমাণ শূন্য দশমিক ৭৮ শতাংশ থেকে নেমেছে শূন্য দশমিক ৩৭ শতাংশে। বিবিএসের দেয়া আয় বৈষম্য বৃদ্ধির এই চিত্র আরও ফুটে উঠেছে বাংলাদেশ ব্যাংকের হাল-নাগাদ পরিসংখ্যানে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য, কোটি টাকার বেশি অর্থ রয়েছে; গেল জুন শেষে দেশে এমন ব্যাংক হিসাবধারীর সংখ্যা ঠেকেছে ১ লাখ ২৭ হাজার ৩৩৬টিতে। মাত্র তিন মাসে বেড়েছে প্রায় ৬ হাজারটি ৫ হাজার ৯৭৪টি। অথচ ২০২০ সালে ব্যাংকে কোটি টাকার অ্যাকাউন্টধারীর সংখ্যা ৯৩ হাজার ৮৯০টি আর ২০১৮ সালে ছিল মাত্র ১৯ হাজার ১৬৩টি।
অগ্রণী ব্যাংকের চেয়ারম্যান সৈয়দ আবু নাসের বখতিয়ার আহেমদ বলেন, যার ধনী ছিলেন, তারা আরও ধনী হয়েছেন। আর তারাই কিন্তু সব রকম সুযোগ-সুবিধা পান। মধ্যবিত্ত পরিবার বা নিম্ন আয়ের লোকদের কোনো রকম উন্নতি দেখিনি।
আরও পড়ুন: ‘অপমান’ আর ‘অসহায়ত্ব’ নিয়ে ব্যাংক থেকে ফিরছেন আমানতকারীরা, সমাধান কী?
বাংলাদেশ ব্যাংক বলছে, রাজনৈতিকসহ বেশ কিছু কারণে ব্যাংকবিমুখ আমানতকারী আবার সঞ্চয়ী হিসাবে জমাতে শুরু করেছেন তাদের অর্থ- আর এতেই বাড়ছে কোটিপতি।
বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র আরিফ হোসেন খান বলেন, ব্যবসায়ীরা ব্যবসায় ভালো মুনাফা করলে সেটা স্বাভাবিকভাবে ব্যাংকের অ্যাকাউন্টে প্রতিফলন করবে। তাই দেখা যায়, আগে তারা কোটিপটির তালিকায় ছিলেন না, এখন তারা সেই তালিকায় এসেছেন।
রকেট গতিতে দেশে কোটিপতির সংখ্যা বৃদ্ধির হিসাব দেখে, হঠাৎ কারও ভ্যগ্যের পরিবর্তন হলো কি-না, তা খতিয়ে দেখার তাগিদ দিচ্ছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক এই প্রধান অর্থনীতিবিদ।
আরও পড়ুন: অর্থবছরের প্রথম ৩ মাসে কত রেমিট্যান্স এলো?
বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক প্রধান অর্থনীতিবিদ মুস্তফা কে মুজেরি বলেন, টাকার উৎস পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে খতিয়ে দেখা উচিত। বৈধ উৎস থেকে আসলে সেটা নিয়ে শঙ্কার কোনো কারণ নেই। কিন্তু সেটা অবৈধ উৎস থেকে এসে থাকলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া উচিত।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য, গেল মার্চ শেষে ব্যাংকে মোট আমানতের পরিমাণ ছিল ১৯ লাখ ২৩ হাজার ৫০৪ কোটি টাকা। জুন শেষে তা দাঁড়িয়েছে ১৯ লাখ ৯৬ হাজার ৫৮৩ কোটি টাকায়। এ সময় নতুন ব্যাংক হিসাব খোলা হয়েছে প্রায় ৩২ লাখ ৯৫ হাজার।
]]>