সোমবার (২৬ মে) রাতে রাজধানীর গুলশানে বিএনপির চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে প্রায় দেড় ঘন্টাব্যাপী রুদ্ধদ্বার বৈঠক হয়। সেখানে ঢাবি সাদা দলের আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. মোর্শেদ হাসান খান ও যুগ্ম আহ্বায়কদ্বয় অধ্যাপক ড. আব্দুস সালাম ও অধ্যাপক ড. মো. আবুল কালাম সরকারের নেতৃত্বে বৈঠকে সাদা দলের দেড় শতাধিক শিক্ষক অংশগ্রহণ করেন।
এতে দেশের সাম্প্রতিক নানা পরিস্থিতিতে খোলামেলা আলোচনা করেন ঢাবি সাদা দলের শিক্ষকেরা। তারা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে বিগত ১৬ বছরে ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার সরকারের দু:শাসনের চিত্র তুলে ধরেন এবং বিরোধী দলের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের নানাভাবে হয়রানির বর্ণনা দেন।
ভিন্নমত দমনে আওয়ামী লীগ সমর্থিত ঢাবি প্রশাসন কিভাবে নির্যাতন-নিপীড়ন চালিয়েছে তার বিবরণ তুলে ধরেন সাদা দলের শিক্ষক নেতারা। এছাড়া চব্বিশের ৫ আগস্ট রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের বর্তমান পরিস্থিতিও তুলে ধরে বক্তব্য দেন তারা।
আরও পড়ুন: রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় কোনো গুম দেখতে চাই না: তারেক রহমান
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ঢাবি সাদা দলের শিক্ষকদের বক্তব্যগুলো মনযোগ সহকারে শোনেন এবং ধন্যবাদ জানান। বৈঠক সূত্র জানায়, ঢাবি সাদা দলের শিক্ষকরা বক্তব্য দেয়ার সময় তারেক রহমান খুবই মনযোগ সহকারে শুনেছেন। শিক্ষকদের বক্তব্য দেয়া শেষ হলে তিনি মতবিনিময় সভার জন্য সংশ্লিষ্ট সবাইকে ধন্যবাদ জানান।
বৈঠকে তারেক রহমান বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক সকল আন্দোলনের সূতিকাগার। অতীতে দেশের সকল গণতান্ত্রিক আন্দোলনে ঢাবির শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের অবদান অনস্বীকার্য ও অবিস্মরণীয়। সর্বশেষ ২০২৪ সালে ছাত্রজনতার গণআন্দোলনেও তাদের ভুমিকা অতুলনীয়।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, ঢাবি ক্যাম্পাস থেকেই আন্দোলনের স্ফূলিঙ্গ সারাদেশে ছড়িয়ে পড়েছিল। যে কারণে সকলের ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের মাধ্যমে বাংলাদেশ ফ্যাসিবাদ মুক্ত হয়েছে। তবে দেশ নিয়ে এখনও ষড়যন্ত্র চলছে। দেশে এখনও গণতন্ত্র ও ভোটাধিকার পুন:প্রতিষ্ঠিত হয়নি।
আরও পড়ুন: বাড্ডায় বিএনপি নেতাকে প্রকাশ্যে গুলি করে হত্যা, ২ ব্যক্তি শনাক্ত: পুলিশ
এজন্য অতীতের মতোই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের আবারও ঐক্যবদ্ধ ও সতর্ক থাকতে হবে। আগামীতে একটি সুষ্ঠু নির্বাচন হওয়ার আগ মুহুর্ত অবধি দেশ ও জাতির প্রয়োজনে সকলকে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানান তারেক রহমান।
বৈঠকে আরও উপস্থিত ছিলেন ঢাবি সাদা দলের সাবেক আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. আখতার হোসেন খান, অধ্যাপক ড. এবিএম ওবায়দুল ইসলাম, অধ্যাপক মো. লুৎফর রহমান, অধ্যাপক ড. আব্দুর রশিদ, সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ ছিদ্দিকুর রহমান খান ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. সাইফুদ্দিন আহমেদ।
এছাড়া সাদা দলের নেতা অধ্যাপক ড. সুকোমল বড়ুয়া, অধ্যাপক ড. মো. মহিউদ্দিন, মো. সাইফুদ্দিন আহমেদ, অধ্যাপক ড. তাহমিনা আক্তার টফি, অধ্যাপক মো. আবুল কাওছার, অধ্যাপক ড. মো. শফিকুর রহমান, অধ্যাপক ড. মো. আব্দুস সালাম, অধ্যাপক ড. মো. শহিদুল ইসলাম জাহিদ, মো. আল-আমিন, অধ্যাপক ড. মো. জসীম উদ্দিন, অধ্যাপক ড. আবু আসাদ চৌধুরী, অধ্যাপক ড. আ ফ ম মোস্তাফিজুর রহমান, অধ্যাপক শাহ শামীম আহমেদ, মো. ইস্রাফিল প্রামাণিক রতন, আইন অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইকরামুল হক, চারুকলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. আজহারুল ইসলাম শেখ, জগন্নাথ হলের প্রভোস্ট দেবাশীষ পাল, রোকেয়া হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. হোসনে আরা বেগম, শামসুন্নাহার হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. নাসরিন সুলতানা, মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউর রহমান হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. মো. নাজমুল হোসেন, বাংলাদেশ-কুয়েম মৈত্রী হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. মাহবুবা সুলতানা ও বিজয় একাত্তর হলের প্রভোস্ট ড. এসএম আলী রেজা উপস্থিত ছিলেন।