পর্যবেক্ষণে দেখা গেছে, কোভিড-১৯ পরবর্তী মানসিক চাপ হৃদরোগ বৃদ্ধির অন্যতম কারণ। বিশেষ করে করোনা মহামারির সময়ে চাকরি হারানো, ব্যবসায় ধস এবং অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তা তরুণদের মধ্যে প্রবল মানসিক চাপের জন্ম দিয়েছে, যা হার্টের স্বাস্থ্যের ওপর বিরূপ প্রভাব ফেলছে।
চিকিৎসকদের মতে, শুধু মানসিক চাপই নয়, তরুণ সমাজের অনিয়ন্ত্রিত জীবনযাপন, অতিরিক্ত চর্বিযুক্ত খাদ্যগ্রহণ, পর্যাপ্ত ঘুমের অভাব এবং অনিয়মিত শারীরিক কর্মকাণ্ড-ও হৃদরোগের ঝুঁকি বহুগুণে বাড়িয়ে দিচ্ছে।
সোমবার (২৯ সেপ্টেম্বর) সকাল ৯টায় বিশ্ব হার্ট দিবস উপলক্ষে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন হাসপাতাল হার্ট অ্যান্ড ভাসকুলার সেন্টারের উদ্যোগে এক বর্ণাঢ্য র্যালির আয়োজন করা হয়। 'ছন্দে থাকুক আপনার হৃদয় স্পন্দন' এই প্রতিপাদ্যে আয়োজিত র্যালিটি হাসপাতাল চত্বর থেকে শুরু হয়ে জিইসি মোড় ও গোলপাহাড় মোড় প্রদক্ষিণ করে পুনরায় হাসপাতাল চত্বরে এসে শেষ হয়। র্যালি পরবর্তী সমাবেশে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা হৃদরোগ নিয়ে আলোচনা করেন।

বিশেষজ্ঞ চিকিৎকরা তাদের বক্তব্যে বলেন, বর্তমান তরুণ প্রজন্ম অতিমাত্রায় স্মার্টফোন ও অনলাইন নির্ভরতায় অভ্যস্ত হয়ে পড়েছে, ফলে তাদের শারীরিক গতিশীলতা কমে গেছে। অনেকেই রাতে কম্পিউটারে কাজ করে বা অনলাইন গেমে রাত জাগে, যার ফলে হরমোনের ভারসাম্য হারায়, ঘুমের অভাব দেখা দেয় এবং শরীরের শক্তি উৎপাদন ক্ষমতা কমে যায়।
এই প্রবণতা ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ ও অনিয়মিত হৃদস্পন্দনসহ নানা হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়ায়। চিকিৎসকরা সতর্ক করে বলেন, এখনই যদি এর প্রতিকার না করা হয়, তাহলে আগামী দিনগুলোতে তরুণদের হৃদরোগ ভয়াবহ রূপ নিতে পারে।
আরও পড়ুন: বুকের ঠিক কোন জায়গায় ব্যথা হলে বুঝবেন হার্ট অ্যাটাক
বিশেষজ্ঞরা পরামর্শ দেন, হৃদরোগ প্রতিরোধে তরুণদের নিয়মিত শরীরচর্চা, সুষম খাদ্য গ্রহণ, পর্যাপ্ত ঘুম, এবং মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণে রাখার অভ্যাস গড়ে তোলা উচিত। প্রযুক্তির সঠিক ব্যবহার এবং সময়মতো স্বাস্থ্য পরীক্ষা হৃদযন্ত্র সুস্থ রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।
র্যালিতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সাবেক সংসদ সদস্য ও চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন হাসপাতালে হার্টের বাইপাস সার্জারি করা আলহাজ্ব শাহজাহান চৌধুরী।
আরও পড়ুন: হার্ট ভালো রাখতে কত ঘণ্টা ঘুম দরকার?
সমাবেশে বক্তব্য রাখেন- চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন হাসপাতালের চিফ কার্ডিওভাসকুলার সার্জন ডা. সারওয়ার কামাল, চিফ কার্ডিওলজিস্ট ডা. আবদুল মোত্তালিব, ডা. আখতার হোসেন, ডা. সোহেল ছিদ্দিকী, মেডিকেল ডিরেক্টর ডা. মুজিবুল হক, ডা. কাউসার আলম, চিফ কার্ডিয়াক এনেস্থেসিওলজিস্ট ডা. বাবর তালুকদার, হাসপাতালের সিওও এইচ এম লতিফ উদ্দিন চৌধুরী প্রমুখ।