দহনকালে পুড়ছে দেশ। প্রতিদিনই যেন রেকর্ড গড়ছে তাপমাত্রা। দিনে-রাতে এক অস্বস্তির সময় পার করছে দেশবাসী। তীর্থের কাকের মতো অপেক্ষা বর্ষণের। আর আবহাওয়া দফতরের পূর্বাভাসে ২ মে থেকে টানা পাঁচদিন থাকতে পারে বৃষ্টি। মিলতে পারে ক্ষণিকের স্বস্তিও।
আবহাওয়া অধিদফতর জানিয়েছে,
মূলত বর্জ্রবৃষ্টির পরিমাণ কমে যাওয়ায় এই অঞ্চলে দীর্ঘ হচ্ছে দাবদাহ। স্বাভাবিক সময় এপ্রিলে গড়ে ৯টি বর্জ্রঝড় হওয়ার কথা ছির। এর আগে ১৯৯৭ সালে হয়েছিল ১৪টি। ২০০৪ সালে ১২টি, ২১ সালে ৮টি গত বছর ৭টি বর্জ্রঝড় রেকর্ড হয়েছে। সেখানে চলতি বছর এপ্রিলে হয়েছে মাত্র ৪টি। যার একটি মাত্র ছিল বড় পরিসরে। তাই হাসফাসের এমন হিসেবটা মিলে যাচ্ছে শতভাগ।
আবহাওয়াবিদ ড. আব্দুল কালাম মল্লিক সময় সংবাদকে বলেন,
ক্রমাগতভাবে ২০১৮ সালের পর বর্জ্রঝড় কমে যাওয়ার কারণে, বাংলাদেশ এবং তার পাশের দেশে তাপপ্রবাহ দীর্ঘায়িত হচ্ছে।
দেশে এমন দহনকালের আশঙ্কা ছিল আরও আগে থেকেই। নব্বইয়ের দশক থেকেই আলোচনায় ছিল গ্রিন হাউজ অ্যাফেক্ট। তবু ১৯৯৭ সালে রাজধানীর সাড়ে ১৪ ভাগ জলাভূমি এখন নেমে এসেছে মাত্র চার ভাগে। কংক্রিটে ঢেকেছে ৮৫ ভাগ। আর সবুজের আয়তন আট ভাগ। তাহলে আগাম পূর্বাভাসের লাভটা হলো কী?
ভুক্তভোগীরা জানান, ঢাকায় গাড়ি বেশি এবং বাড়িওয়ালারা যে যেভাবে পারছেন, তার বাড়ির প্লান পাস করছেন। এতে রাজউক, সিটি করপোরেশন এবং সর্বোপরি সবারই দায় আছে। ঢাকায় এখন গাছের ছায়া খুঁজতে হয়।
বৈষ্ণিক উষ্ণতার পাশাপাশি নিজেদের ভুলের খেসারত যে এমন পরিস্থিতি তা মানছেন খোদ পরিবেশমন্ত্রীও। সমন্বয় করে এগিয়ে যাবার সামনের পথটা সহজ নয় বলছেন তিনিও।
পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তনমন্ত্রী সাবের হোসেন চৌধুরী বলেন,
বর্তমানে দেশব্যাপী যে তাপপ্রবাহ বয়ে চলেছে, সেটা তো কোনো মৌসুমী বিষয় নয়। এটা এখন মনে হচ্ছে যে, সারা বছরই থাকবে। যেখানে তাপমাত্রাটা কম থাকার কথা, সেখানে বেশি থাকছে। বিষয়টি এখন জাতীয় পরিকল্পনার মধ্যে নিয়ে আসতে হবে। কাজ করতে হবে। সময় লাগবে।
ধীরে ধীরে বিপজ্জনক হয়ে ওঠা তাপপ্রবাহ দিনে দিনে পরিণত হচ্ছে নীরব ঘাতকে। যার ভুক্তভোগী শুধু বাংলাদেশই নয়, দক্ষিণ ও দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার বেশ কয়েকটি দেশও।
]]>