দুয়ারে পহেলা বৈশাখ, ইলিশ ছোঁয়ার সাধ্য নেই!

৬ দিন আগে
সরকারি নিষেধাজ্ঞার আগমুহূর্তে কক্সবাজার উপকূলে ফিরছে মাছ ধরার ট্রলারগুলো। কিন্তু ট্রলারে নেই কাঙ্ক্ষিত ইলিশ। আর যা ইলিশ মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে নামছে তাও আবার পহেলা বৈশাখের কারণে বিক্রি হচ্ছে আকাশচুম্বী দামে। ব্যবসায়ীরা বলছেন, পহেলা বৈশাখে চাহিদার তুলনায় ঘাটতির কারণে প্রতিটি ইলিশ বিক্রি হচ্ছে দ্বিগুণ দামে।

রোববার (১৩ এপ্রিল) বেলা ১১টায় দেখা যায়, সাগর থেকে বাঁকখালী নদীর হয়ে উপকূলে ফিরছে একের পর এক মাছ ধরার ট্রলার। যা ভিড়ছে কক্সবাজার মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে। মূলত সরকারি ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞার আগমুহূর্তে জেলেরা ফিরছেন উপকূলে।


দেখা যায়, ঝুঁড়ি ভর্তি ইলিশ; যা ট্রলার থেকে নামানো হচ্ছে ঘাটে। প্রতিটি ট্রলার থেকে নামছে ১০ হতে ১৫ ঝুঁড়ি ইলিশ। যা দ্রুত শ্রমিকরা নিয়ে যাচ্ছে মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পন্টুনে। জেলেরা বলছেন, সাগরে ধরা পড়ছে না কাঙ্ক্ষিত ইলিশ।


এফবি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি রহিম বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার আগমুহূর্তে সাগর থেকে ফিরেছি। কিন্তু ট্রলারে ইলিশ রয়েছে মাত্র ২শ’। মনে করেছিলাম, সাগরে গিয়ে জাল ফেলে ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ পাব। তা পহেলা বৈশাখের আগে ঘাটে বিক্রি করে ভালো দাম পাব। কিন্তু ট্রলার সাগরে যেতে যে ৩ লাখ টাকা খরচ হয়েছে তার অর্ধেক টাকাও মাছ বিক্রি করে উঠে আসেনি।’

আরও পড়ুন: আকাশছোঁয়া দামে পহেলা বৈশাখে পান্তা-ইলিশ এখন বিলাসিতা

আরেক জেলে ইব্রাহিম খালেদ বলেন, ‘সাগরে মাছের আকাল চলছে। এবছর তেমন সাগরে ইলিশ ধরা পড়েনি। যার কারণে ট্রলার মালিকরা সবাই লোকসানে রয়েছে। এছাড়া আমাদেরও ধার-দেনা করে চলতে হচ্ছে।’


মানুষের হাঁকডাকে সরগরম কক্সবাজার মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পল্টুন। ইলিশ পন্টুনে রাখতেই ঘিরে ধরছেন ব্যবসায়ীরা। মুহূর্তেই বিক্রি হয়ে যাচ্ছে ইলিশগুলো। আর দ্রুত ওজন করে ইলিশগুলো করা হচ্ছে প্যাকেটজাত, সরবরাহ করা হচ্ছে ঢাকায়। ব্যবসায়ীরা বলছেন, পহেলা বৈশাখের কারণে ইলিশের চাহিদা তুঙ্গে। দ্বিগুণ দামেও কিনতে বাধ্য হচ্ছে তারা।


মৎস্য ব্যবসায়ী ফারুক বলেন, ‘১ কেজি ওজনের প্রতিটি ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ২৫০০ টাকা, ১২০০ গ্রামের প্রতিটি ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ৩০০০ টাকায় এবং ১৫০০ গ্রামের প্রতিটি ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ৩৫০০ টাকায়। গেলবছরের তুলনায় এবছর ইলিশের দাম দ্বিগুণ। মূলত চাহিদা তুলনায় ইলিশ কম হওয়ায় এমন অবস্থা।’


আরেক ব্যবসায়ী ফেরদৌস আলী বলেন, ‘ঢাকায় ইলিশের চাহিদা বেশি। তাই কক্সবাজার মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে যা ইলিশ পাচ্ছি তা দ্রুত কিনে প্যাকেটজাত করছি। এর পরপরই ট্রাকে তুলে দিয়ে ঢাকায় পাঠিয়ে দিচ্ছি।’


আর ট্রলার মালিক সমিতির নেতারা বলছেন, সাগরে কাঙ্ক্ষিত ইলিশ না পাওয়ায় নানা সমস্যায় জর্জরিত জেলে ও ট্রলার মালিকরা।

আরও পড়ুন: গরমে পান্তা ভাত খাওয়ার ১০ উপকারিতা

ট্রলার মালিক সমিতির মুখপাত্র মো. আলমগীর বলেন, ‘চাহিদার তুলনায় ইলিশ কম। তাই ঘাটতি হচ্ছে। এজন্য স্থানীয় বাজারে ইলিশ বিক্রি হচ্ছে। সব ইলিশ ঢাকায় সরবরাহ করা হচ্ছে। এছাড়াও সাগরে ডাকাতের উপদ্রব বৃদ্ধি, সাগরে মাছের আকাল এবং ট্রলার মালিকরা সাগরে ট্রলার পাঠাচ্ছে না, যার দরুণ কক্সবাজার মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে ইলিশের পরিমাণ কম। আর যা বিক্রি হচ্ছে তার দাম দ্বিগুণ। একই সঙ্গে পহেলা বৈশাখকে উপলক্ষ করেও দাম বৃদ্ধি পেয়েছে।’


কক্সবাজার উপকূলে লাখেরও বেশি জেলে থাকলেও এখনও পর্যন্ত নিবন্ধনের আওতায় এসেছে ৬৫ হাজারের মতো।

]]>
সম্পূর্ণ পড়ুন