দুর্নীতি দমনে কোরআন যা বলছে

৩ সপ্তাহ আগে
ইসলাম অন্যায়কে কখনোই প্রশ্রয় দেয় না। অন্যের ধন-সম্পদ অন্যায়ভাবে গ্রাস করাকে ইসলাম হারাম বলে ঘোষণা ‍দিয়েছে। অন্যের সম্পদ অন্যায়ভাবে বক্ষণ করাকে ইসলাম খেয়ানত হিসেবে দেখে। আল্লাহ রাব্বুল আলামিন মহাগ্রন্থ আল কোরআনে ঘোষণা করেন, ‘কোনো নবীর জন্য শোভনীয় নয় যে তিনি খেয়ানত করবেন। আর যে ব্যক্তি খেয়ানত করবে, সে কিয়ামতের দিন ওই খেয়ানত করা বস্তু নিয়ে উপস্থিত হবে। এরপর প্রত্যেকেই পরিপূর্ণভাবে পাবে যা সে অর্জন করেছে। আর তাদের প্রতি কোনো অন্যায় করা হবে না।’ (সুরা: আলে ইমরান, আয়াত ১৬১)

রাসুল সা.ও কারো সম্পদ, অর্থকড়ি আত্মসাতের বিষয়ে সতর্ক করেছেন। রাসুলুল্লাহ সা. বলেছেন, ‘আমি যাকে তোমাদের কোনো কাজের দায়িত্বশীল করি, এরপর সে সুই পরিমাণ বস্তু বা তার চেয়ে বেশি সম্পদ আত্মসাৎ করল, সেটাই হবে খেয়ানত। কিয়ামতের দিন সেই বস্তু নিয়ে সে উপস্থিত হবে।’ (মুসলিম, হাদিস ১৮৩৩)

 


নীতি-নৈতিকতা, ধর্মীয় অনুশাসন না থাকায় বেড়ে গেছে দুর্নীতি। দুর্নীতি মানুষের জীবনকে বিষিয়ে তুলছে। পদে পদে দুর্নীতি থাকায় দেশের মানুষ সফল হতে পারছে না। উন্নতিতে বাধা হয়ে দাঁড়াচ্ছে দুর্নীতি। অবৈধ সম্পদের মোহই মানুষকে দুর্নীতিগ্রস্ত করছে। ধর্মীয় অনুশাসনের পাশাপাশি মানবকল্যাণের বিষয়টি মাথায় থাকলে দুর্নীতির হাত থেকে মুক্তি পাবে সমাজ, দেশ।

 

আরও পড়ুন: চন্দ্রগ্রহণের সময় নবীজির আমল

 

হালাল খাদ্য গ্রহণের নির্দেশ দিয়ে মহাগ্রন্থ আল কোরআনে আল্লাহ তাআলা বলেন, 

‘আল্লাহ তোমাদেরকে যে হালাল ও উৎকৃষ্ট জীবিকা দিয়েছেন তা থেকে ভক্ষণ কর, ভয় কর আল্লাহকে, যার প্রতি তোমরা বিশ্বাসী। (সুরা: মায়েদা, আয়াত ৮৮)

 

ঘুষ ছাড়া অফিস-আদালতে কাজ করা যদি কঠিন হয়, তাহলে আল্লাহ তাআলার ধমক তাদের জন্য। আল্লাহ তাদের নিকৃষ্ট বলে অভিহিত করেছেন। আল্লাহ বলেন, ‘তাদের অনেককেই তুমি দেখবে পাপে, সীমা লঙ্ঘনে ও অবৈধ (অসৎ উপায়ে লব্ধ বস্তু: সুদ, ঘুষ প্রভৃতি) ভক্ষণে তৎপর; তারা যা করে নিশ্চয় তা নিকৃষ্ট। (সুরা: মায়েদা ৬২)

 

দুর্নীতিতে আপনি সরাসরি জড়িত না হলেও শক্তি থাকা সত্ত্বেও বাধা না দিলে সমান গুনাহগার হবেন। আল্লাহ তাআলা কঠোর শাস্তির কথা উল্লেখ করে কোরআনে ঘোষণা করেন, ‘সৎকর্ম ও তাকওয়ায় (আল্লাহভীতি) তোমরা পরস্পর সাহায্য করবে। পাপ ও সীমা লঙ্ঘনে একে অন্যের সাহায্য করবে না। আল্লাহকে ভয় কর। নিশ্চয় আল্লাহ শাস্তিদানে কঠোর।’ (সুরা: মায়েদা ০২)

 


শতভাগ ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা হলে দুর্নীতি প্রতিরোধ সম্ভব। বিচারে প্রশ্রয় পেলেই দুর্নীতি বেড়ে যায়। আল্লাহ তাআলা বলেন, 

‘হে মুমিনগণ! তোমরা ন্যায়বিচারে দৃঢ় থাকবে আল্লাহর সাক্ষীস্বরূপ। যদিও তা তোমাদের নিজেদের, অথবা পিতা-মাতা এবং আত্মীয়স্বজনের বিরুদ্ধে হয়; সে বিত্তবান (যার বিচার করা হয়) হোক বা বিত্তহীন হোক আল্লাহ উভয়েরই ঘনিষ্ঠতর। সুতরাং তোমরা ন্যায়বিচার করতে প্রবৃত্তির অনুগামী হয়ো না। যদি তোমরা পেঁচালো কথা বল অথবা পাশ কাটিয়ে যাও (ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করার ক্ষেত্রে), তবে তোমরা যা কর আল্লাহ তো তার সম্যক খবর রাখেন।’ (সুরা: মায়েদা ৮)

 

 

জোরপূর্বক অন্যের জমি দখল, সম্পদভোগ, আত্মসাৎ মারাত্মক গুনাহ। এ দুর্নীতি রোধে আল্লাহ বলেন, 

‘হে মুমিনগণ! তোমরা একে অপরের সম্পত্তি অন্যায়ভাবে গ্রাস করো না। কিন্তু তোমাদের পরস্পর রাজি হয়ে ব্যবসায় করা বৈধ। একে অপরকে হত্যা করো না। নিশ্চয় আল্লাহ তোমাদের প্রতি পরম দয়ালু। আর যে সীমা লঙ্ঘন করে অন্যায়ভাবে তা করবে তাকে অগ্নিতে দগ্ধ করব, এটি আল্লাহর পক্ষে সহজ। (সুরা: নিসা ২৯-৩০)

 

আরও পড়ুন: যেভাবে আল আকসা বিজয় করেছিলেন সালাহউদ্দীন আইয়ুবি রহ.


 

অন্য আয়াতে আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘তোমরা নিজেদের মধ্যে একে অন্যের অর্থ-সম্পদ অন্যায়ভাবে গ্রাস করো না। মানুষের ধন-সম্পত্তির কিয়দংশ জেনে-শুনে অন্যায়ভাবে গ্রাস করার উদ্দেশ্যে তা বিচারকগণের নিকট পেশ করো না। (সুরা: বাকারা ১৮৮)

]]>
সম্পূর্ণ পড়ুন