বাংলাদেশ টি-টোয়েন্টি দলের নিয়মিত মুখ শেখ মেহেদী হাসান। ক’দিন আগে দুই সিরিজের জন্য দায়িত্ব পেয়েছিলেন সহ-অধিনায়কের। তবে শ্রীলঙ্কা সিরিজে একাদশে জায়গা হয়নি শেখ মেহেদীর, তার জায়গায় খেলেছেন মেহেদী হাসান মিরাজ।
শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজে খুব একটা সুবিধা করতে পারেননি মেহেদী হাসান মিরাজ। ক্রিকেটের ছোট ফরম্যাটে অবশ্য মিরাজের পারফরম্যান্স একেবারেই বাজে। এমন পারফরম্যান্সেরও পরও কীভাবে একাদশে জায়গা পান মিরাজ, তা অবশ্য চিন্তার বিষয়।
এ বছর মোট ৪টি টি-টোয়েন্টি খেলেছেন মিরাজ। চার ম্যাচে তার ব্যাট থেকে এসেছে মাত্র ৫৪ রান, তার জন্য অবশ্য তিনি বল খরচ করেছেন ৪৫টি, টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে যা একেবারেই বেমানান। এর মধ্যে এক ইনিংসেই করেছেন ২৯ রান। বাউন্ডারির সংখ্যাও খুব কম, এখন পর্যন্ত ৪ ম্যাচে ৪৫ বল খেললেও বাউন্ডারি মেরেছেন মাত্র ৬।
চলতি বছর এই চার ম্যাচে বল হাতেও তেমন সুবিধা করতে পারেননি মেহেদী হাসান মিরাজ। ১৪ ওভার বল করে রান দিয়েছেন ১১৪, ইকোনমি ৮-এর ওপরে। উইকেট নিয়েছেন মাত্র ৪টি, তার মধ্যে আবার ৪টি বাউন্ডারি ও ৮টি ওভার বাউন্ডারি হজম করেছেন তিনি।
আরও পড়ুন: মিরপুরের উইকেটের কারণে অনেক ব্যাটারের ক্যারিয়ারই নিচে নেমেছে: লিটন
সব মিলিয়ে যদি মিরাজের টি-টোয়েন্টি পরিসংখ্যান দেখেন, সেখানেও বলার মতো কোনো কিছুই করতে পারেননি তিনি। ২৮ ইনিংসে তার রান ৪০৮, এই রান করতে মিরাজ বল খেলেছেন সাড়ে তিনশ! এর মধ্যে নেই কোনো হাফ-সেঞ্চুরি, গড় রান মাত্র ১৭.০।
অন্যদিকে শেখ মেহেদী হাসান জাতীয় দলের হয়ে টি-টোয়েন্টি খেলেছেন ৫৮টি। তার মধ্যে ৪১ ইনিংসে ব্যাট করে রান করেছেন ৩৬৮, স্ট্রাইকরেটও প্রায় একশ। বল হাতেও বেশ কার্যকরী এই স্পিনার। ৫৮ ম্যাচে বল করেছেন মোট ১ হাজার ১৭৮টি, রান দিয়েছেন ১ হাজার ৩১৬, আর উইকেট নিয়েছেন ৫৩টি।
ব্যাটিং অলরাউন্ডার হিসেবে মিরাজের কাছ থেকে দলের বাড়তি কিছু রানের প্রত্যাশা থাকে। অন্যদিকে বোলিং অলরাউন্ডার ধরা হয় মেহেদীকে। বল হাতে নিয়মিত পারফর্ম করেন এই স্পিনার। এই দুজনের মধ্যে বাংলাদেশের একাদশে এখন কে থাকবেন তা নিয়ে প্রতি ম্যাচেই থাকে জল্পনা-কল্পনা।
শ্রীলঙ্কায় অবশ্য এক ম্যাচ মাঠে নেমেই দুর্দান্ত পারফর্ম করেছেন শেখ মেহেদী। প্রথম টি-টোয়েন্টিতে ২৩ বলে ২৯ রান করেছিলেন মিরাজ। এরপর দ্বিতীয় ম্যাচে মিরাজ আউট হন ২ বলে ১ রান করে। বল হাতে দুই ম্যাচেই একটি করে উইকেট নেন তিনি। তবে সিরিজের শেষ ম্যাচে মিরাজের বদলে খেলতে নেমে মাত্র ১১ রানে ৪ উইকেট নিয়ে বাংলাদেশকে ম্যাচ জেতান মেহেদী।
আরও পড়ুন: ম্যাচের দিনও অনলাইনে কিনতে হবে পাকিস্তান-বাংলাদেশ সিরিজের টিকিট
দুই জনের প্রতিদ্বন্দ্বিতা তাই জমে উঠেছে। পাকিস্তানের বিপক্ষে সিরিজের আগে দুই মেহেদীকে নিয়ে প্রশ্ন করা হয়েছিল অধিনায়ক লিটন দাসকে। তিনি জানিয়েছেন দলের কম্বিনেশন বুঝেই তাদের নিয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন তারা। আর মেহেদীর প্রমাণের কিছু নেই সেটাও স্পষ্ট করেছেন লিটন।
সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেছেন, ‘শেখ মেহেদীর বিষয়টা যেটা, সেটা আমরা জানি যে ও কতখানি সামর্থ্য আছে। আর এটা ও অনেক আগেই নিজেকে প্রমাণ করেছে। এখানে কোনো কিছু প্রুভ করার নাই। কিন্তু আমি আগেও বলেছি যে আমরা টিম কম্বিনেশনে ব্যাটসম্যান, টিম যেটা আগে মনে করবে যে প্লেয়ারটাকে আমাদের দরকার, আমরা তাকেই খেলাব।’
পাকিস্তানের বিপক্ষে সিরিজে শ্রীলঙ্কা সিরিজের স্কোয়াডটাই রেখে দিয়েছেন বাংলাদেশ দলের নির্বাচকরা। শ্রীলঙ্কা সিরিজে নাসুম আহমেদ ছাড়া প্রায় সবাইকে ঘুরিয়ে ফিরিয়ে খেলানো হয়েছে। পাকিস্তান সিরিজ শুরুর আগে লিটন জানিয়েছেন বেঞ্চের শক্তিতেও আস্থা আছে তাদের। টিম ম্যানেজমেন্টই সিদ্ধান্ত নেবে নির্দিষ্ট ম্যাচে কাদের খেলানো হবে।
তিনি বলেছেন, ‘নির্দিষ্ট দিনে, নির্দিষ্ট কন্ডিশনের ওপর আমরা সিদ্ধান্ত নেব (একই একাদশ নাকি বেঞ্চ দেখব)। আমাদের দলের যে, বেঞ্চের শক্তি আছে, সবাই খেলার মতো সামর্থ্যবান। আমরা টিম ম্যানেজমেন্ট থেকে ঠিক করব, কোন সময় কাকে খেলানো যায়। আমরা সেভাবেই চেষ্টা করব।’
]]>