১৯৫০ সালের এই দিনে যাত্রা শুরু করে প্রাকৃতিকভাবে গড়ে ওঠা সুন্দরবনের কোল ঘেঁষে তৈরা করা এ সমুদ্র বন্দরটি। দীর্ঘ এই যাত্রায় নানা সংকটের মধ্যেও দেশের আমদানি-রফতানি বাণিজ্যে কমবেশি ভূমিকা রেখে চলেছে বন্দরটি। নৌ, সড়ক ও রেলপথ এসব অবকাঠামো তৈরি থাকায় দেশের বিভিন্ন প্রান্তে সহজে পণ্য পাঠানোর পাশাপাশি প্রতিবেশী ভারত, নেপাল ও ভুটানের জন্যও এই বন্দরের ব্যবহার দারুণ সম্ভাবনাময়।
মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের উপ-পরিচালক (জনসংযোগ) মো. মাকরুজ্জামান জানান, ৭৪ বছরে পদার্পণ উপলক্ষে বন্দর কর্তৃপক্ষ নানা কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। এর মধ্যে রয়েছে সকাল ৯টা ৩০ মিনিটে বন্দর জেটি থেকে স্বাধীনতা চত্বর পর্যন্ত র্যালি, শান্তির প্রতীক কবুতর ও বেলুন উড়িয়ে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদ্বোধন।
সকাল ১০টায় পবিত্র কোরআন তেলাওয়াত, গীতা ও বাইবেল পাঠ ও পরে বন্দরের উন্নয়ন এবং অগ্রগতি নিয়ে মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল এম শাহীন রহমানের শুভেচ্ছা বক্তব্য।
আরও পড়ুন: মোংলাকে আন্তর্জাতিক বন্দরে রূপান্তরিত করা সম্ভব: উপদেষ্টা সাখাওয়াত
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির কেক কাটা, আলোচনা সভা, এরপর বেলা ১১টায় সর্বোচ্চ বন্দর ব্যবহারকারীদের ক্রেস্ট প্রদান, মুক্তিযোদ্ধাদের সংবর্ধনা, কৃতিত্বপূর্ণ কাজের জন্য নির্বাচিত কর্মকর্তা-কর্মচারী ও বিদায়ী কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ক্রেস্ট প্রদান।
এ সময় অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকবেন: নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের পদস্থ কর্মকর্তা, সামরিক-বেসামরিক কর্মকর্তা, বিভিন্ন আমদানি রফতানিকারক ব্যবসায়ী ও তাদের প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি, বন্দরের পদস্থ কর্মকর্তা, বন্দর ব্যবহারকারী, খুলনা ও বাগেরহাটের চেম্বার অব কমার্স সংগঠনের নেতৃবৃন্দ, বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশনের প্রতিনিধি, শিপিং এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের নেতৃবৃন্দ, সিবিএ ,স্থানীয় জনপ্রতিনিধি এবং বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকরা।
দুপুর ১টা ১৫ মিনিটে মোংলা বন্দরের অগ্রগতি কামনায় দোয়া অনুষ্ঠান এবং দুপুর দেড়টায় মধ্যাহ্ন ভোজের মধ্যদিয়ে শেষ হবে বন্দরের ৭৪তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর সব আনুষ্ঠানিকতা।
আরও পড়ুন: খুলনা-মোংলা রেলপথে পণ্যবাহী ট্রেন চলবে কবে?
উল্লেখ্য, ১৯৫০ সালের ১ ডিসেম্বর চালনা বন্দর নামে মোংলায় যাত্রা শুরু করে দেশের দ্বিতীয় সমুদ্র বন্দর। ওই বছরের ১১ ডিসেম্বর বন্দরটি বিদেশি জাহাজ নোঙরের জন্য উন্মুক্ত করা হলে ব্রিটিশ বণিক জাহাজ ‘দি সিটি অব লিয়ন্স’ বন্দরে প্রথম নোঙর করে। সমুদ্রগামী জাহাজ নোঙরের ক্ষেত্রে মোংলা অধিকতর সুবিধাজনক হওয়ায় ১৯৫৪ সালে বন্দরটি চালনা থেকে মোংলায় স্থানান্তর করা হয়। তখন মোংলা বন্দর দীর্ঘদিন ধরে চালনা নামেই পরিচিত ছিল।
প্রতিষ্ঠার পর এটি প্রথমে চালনা অ্যাঙ্কর, পরবর্তীতে ১৯৭৮ সালে চালনা পোর্ট কর্তৃপক্ষ এবং সর্বশেষ ১৯৮৬ সাল থেকে মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষ হিসেবে যাত্রা শুরু করে এ মোংলা সমুদ্র বন্দর।