দক্ষিণ কোরিয়ার আদালত প্রাঙ্গণ রণক্ষেত্র

১ সপ্তাহে আগে
দক্ষিণ কোরিয়ার সিউল জেলা আদালত প্রাঙ্গণ রীতিমতো রণক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে। টানা ৩ ঘন্টা ধরে চলছে সংঘর্ষ। সাবেক প্রেসিডেন্ট ইউন সুক ইওলের বিরুদ্ধে অভিযোগের সত্যতা পাওয়ায় রোববার (১৯ জানুয়ারি) আনুষ্ঠানিকভাবে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে। এরপরই আদালত চত্ত্বরে পুলিশ ও ইওল সমর্থকদের মধ্যে শুরু হয় সংঘর্ষ।

ইওলের সমর্থকরা বিক্ষোভ করে আদালতে প্রবেশ করে। তারা আদালতের প্রধান ফটক ও জানালা ভেঙে ফেলে এবং বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে। এ সময় আদালত ভবনের ভেতর এবং বাইরের ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ চালায় ইওল সমর্থকরা। 

 

এদিকে সহিংসতার ঘটনায় আটক অভিযান শুরু করেছে পুলিশ। সংঘর্ষে জড়িত ৮৬ জনকে অটক করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে সিউলের ১৮টি ভিন্ন থানায় তদন্ত চলছে। পুলিশ জানিয়েছে, ৯ জন পুলিশ কর্মকর্তা আহত হয়েছেন। এর মধ্যে পাঁচজনের অবস্থা খুবই গুরুতর। 

 

পুলিশ আরও জানিয়েছে, ঘোষণার আগে আদালতের কাছে জড়ো হওয়া বিক্ষোভকারীরা ইওলের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির কয়েক মিনিট পরেই ভবনে ঢুকে পড়ে। 

 

আরও পড়ুন: দক্ষিণ কোরিয়ার অভিশংসিত প্রেসিডেন্ট ইউন গ্রেফতার

 

সংঘর্ষের একাধিক ভিডিও ফুটেজ বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে। তাতে দেখা গেছে, বিক্ষুব্ধ বিক্ষোভকারীরা আদালতের দেয়াল বেয়ে উঠে, জানালা ও দরজা ভেঙে ফেলছে। অগ্নিনির্বাপক যন্ত্র ছুঁড়ে মারছে। এর ফলে আদালতের ভেতরে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।

 

সংঘর্ষ হওয়ার পর ইওলের পরোয়ানা জারি করা বিচারক চা ইউন-কিউংকে নিরাপদে নিতে সক্ষম হয় পুলিশ। এদিকে সুপ্রিম প্রসিকিউটর অফিস জানিয়েছে, আদালত প্রাঙ্গণের ঘটনায় দ্রুত তদন্তের জন্য নয়জন প্রসিকিউটরের সমন্বয়ে একটি তদন্ত দল গঠন করা হয়েছে। 

 

সংঘবদ্ধ সহিংস কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার প্রমাণ পাওয়া গেলে দাঙ্গার অভিযোগ আনা হবে। ফৌজদারি আইনের অধীনে, দাঙ্গার জন্য দোষী সাব্যস্ত ব্যক্তিদের ১০ বছরের কারাদণ্ড বা ১৫ মিলিয়ন উয়ন ( ১০২৮০ ডলার) পর্যন্ত জরিমানা হতে পারে।

 

গত ৩ ডিসেম্বর সবাইকে অবাক করে দিয়ে ইউন সুক-ইওল দক্ষিণ কোরিয়ায় সামরিক আইন জারি করেন। কিন্তু জনগণের তীব্র প্রতিবাদ ও চাপের মুখে মাত্র ছয় ঘণ্টার মাথায় তাকে এই আদেশ প্রত্যাহার করতে বাধ্য হতে হয়। এরপর ১৪ ডিসেম্বর পার্লামেন্টে তাকে অভিশংসন করা হয় এবং প্রেসিডেন্টের পদ থেকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।

 

আরও পড়ুন: দক্ষিণ কোরিয়া / হেফাজতে রাখার সময় বাড়ানোর বিরুদ্ধে লড়তে আদালতে অভিশংসিত প্রেসিডেন্ট

 

ইওলের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহ ও ক্ষমতার অপব্যবহারসহ গুরুতর অভিযোগ আনা হয়েছে। তদন্তের অংশ হিসেবে তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডাকা হলেও তিনি আদালতে হাজির হতে অস্বীকৃতি জানান। 

 

এই পরিস্থিতিতে ৩১ ডিসেম্বর দক্ষিণ কোরিয়ার আদালত তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করে। গত বুধবার (১৫ জানুয়ারি) ইওলকে রাজধানী সিউলে তার ব্যক্তিগত বাসভবন থেকে গ্রেফতার করা হয়। শনিবার (১৮ জানুয়ারি) প্রথম আদালতের শুনানিতে হাজিরা দেন ইওল।

]]>
সম্পূর্ণ পড়ুন