তত্ত্বাবধায়ক সরকার ও আসন সীমানা নির্ধারণে রাজনৈতিক দলগুলোর ঐকমত্য

১ দিন আগে
তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা পুনর্বহাল ও নির্বাচনী এলাকার সীমানা নির্ধারণ নিয়ে সব রাজনৈতিক দল ও জাতীয় ঐকমত্য কমিশন ঐকমত্যে পৌঁছেছে বলে জানিয়েছেন কমিশনের সহ-সভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ। তিনি বলেছেন, আলোচনায় সীমানা নির্ধারণ নিয়ে বড় ধরনের অগ্রগতি হয়েছে। নির্বাচন কমিশনের চলমান কার্যক্রম এবং সংস্কার কমিশনের সুপারিশ অনুযায়ী আশু পদক্ষেপের ওপর জোর দেয়া হয়েছে।

আলোচনা ইতিবাচক ভাবে অগ্রসর হচ্ছে এবং এভাবে আলোচনা অগ্রসর হলে জুলাই মাসের মধ্যেই জুলাই সনদ ঘোষণা সম্ভব হবে বলেও আশাবাদ ব্যক্ত করেন আলী রীয়াজ।


বুধবার (২ জুলাই) ঢাকায় ফরেন সার্ভিস একাডেমির দোয়েল হলে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলোর দ্বিতীয় পর্যায়ের অষ্টম দিনের বৈঠক শেষে তিনি এসব কথা বলেন। 


বৈঠকে মূল আলোচ্য বিষয় ছিল তিনটি। সংসদীয় আসনের সীমানা নির্ধারণ, তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা পুনঃপ্রণয়ন এবং রাষ্ট্রপতি ক্ষমা প্রদর্শনের বিষয়টি।


তিনটি বিষয়ের মধ্যে প্রথম দুটি বিষয়ে আলোচনা সম্পন্ন হয়েছে। তারমধ্যে নির্বাচনী এলাকার সীমানা নির্ধারণ নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করে বড় ধরনের সাফল্য অর্জিত হয়েছে। নির্বাচনী এলাকার সীমানা নির্ধারণ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয় বলে জানিয়েছেন কমিশনের সহ-সভাপতি।


তিনি বলেন, দীর্ঘমেয়াদের প্রতি আদমশুমারির পর ১০ বছরের মধ্যে আসন পুনর্নির্ধারণে সাংবিধানিক সংশোধনের প্রস্তাব এসেছে। এতে একটি কমিটি গঠনের বিষয়েও ঐকমত্য হয়েছে।


সীমানা নির্ধারণ নিয়ে যে ঐকমত্য সৃষ্টি হয়েছে তা তুলে ধরে আলী রীয়াজ বলেন, নির্বাচন কমিশন থেকে নির্বাচন প্রক্রিয়া ও নির্বাচনী আসন নির্ধারণ নিয়ে কাজ চলমান দেখতে পাচ্ছি। এবং নির্বাচন সংস্কার কমিশন থেকে সুস্পষ্ট সুপারিশ ছিল সেখানে বলা হয় আশু ব্যবস্থা হিসেবে কি করা যেতে পারে। দ্বিতীয় বিষয় দীর্ঘমেয়াদী সাংবিধানিকভাবে কিছু করা। দীর্ঘমেয়াদী ও স্থায়ী সমাধানে যে ঐকমত্য হয়েছে তা হলো- প্রতি আদমশুমারি অনধিক ১০ বছর পরে সংসদীয় আসনের সীমানা নির্ধারণের জন্য সংবিধানের ১১৯ অনুচ্ছেদের দফা ১ এর ঘ শেষে আইনের দ্বারা একটি বিধান যুক্ত করা। এর অর্থ হচ্ছে সংসদীয় আসন নির্ধারণ করার জন্য একটি কমিটি গঠন করা।


আরও পড়ুন: সময়মতো জাতীয় সনদ তৈরিতে শঙ্কা দেখা দিয়েছে: আলী রীয়াজ


এই কমিটির ক্ষেত্রে আরও বলা হয়েছে, সংশ্লিষ্ট জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সীমানা নির্ধারণের আইন ২০২১ যেটা ২০২৫ সালে সংশোধিত হয়েছে। আমরা সংবিধানে কিছু বিষয় যুক্ত করার কথা বলেছি তার পাশাপাশি সেটাকে বাস্তবায়ন করার জন্য আইনের মধ্য দিয়ে কমিটির পরিধি ও কার্যপরিধি গঠন নিয়ে সুনির্দিষ্ট আইন থাকে তা বলেছি। দীর্ঘমেয়াদী স্থায়ী সমাধানের জন্য এই ব্যাপারে সব রাজনৈতিক দল একমত হয়েছে।


আলী রীয়াজ বলেন, আর আশু বিষয়ে বলা হয়েছে- ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য নির্বাচন কমিশনের সহায়তায় যথাযথ দক্ষতা সম্পন্ন ব্যক্তিদের নিয়ে বিশেষায়িত কমিটি গঠন। কমিটি গঠন হয়ে থাকে তাহলে পরিবর্তন সাধন করে সেই কমিটি দ্বারা সংসদীয় আসনের সীমানা নির্ধারণ করা। বর্তমান যে কমিটি করা সেটা যাতে পরিবর্তন করে রাজনৈতিক দলের ঐক্যমত্যের প্রতিফলন ঘটে। আমরা এই বিষয় সরকার ও নির্বাচন কমিশনকে অবহিত করবো।


তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বিষয়ে আলোচনা প্রসঙ্গ তুলে ধরে তিনি বলেন, বাংলাদেশের সব রাজনৈতিক দল তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রতিষ্ঠার জন্য অভিন্ন মত পোষণ করে দিয়ে সুনির্দিষ্ট ঐকমত্য আছে। এর গঠন এবং কাঠামোগত বিষয় ও সরকার কতদিন থাকবে তা নিয়ে আলোচনা করেছি। আলোচনায় বিভিন্ন রকম মতামত এসেছে। এ বিষয়ে দুটি সুপারিশ ছিল সংবিধান সংস্কার কমিশন থেকে ছিল ৯০ দিনের আর নির্বাচন কমিশন যে ছিল ১২০ দিনের। এই সমস্ত সময় ও পরিধি নিয়ে আলোচনা হয়েছে। 


কোন প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে প্রধান উপদেষ্টা নিয়োগ হবে তা নিয়েও আলোচনা হয়েছে বলে জানান আলী রীয়াজ। 


তিনি বলেন, এই আলোচনা রাজনৈতিক দলগুলো অনেক কাছাকাছি এসেছে। এ বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে যে আলোচনা হয়েছে তা অত্যন্ত ইতিবাচক। সরকার প্রতিষ্ঠার জন্য দীর্ঘদিন যাবত আমরা সবাই অনেক সংগ্রাম করেছি। আমরা আশা করি এ সব বিষয় নিয়ে খুব দ্রুত সময়ের মধ্যে একটি ঐক্যমত্যে পৌঁছাতে পারবো। রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে এই মর্মে সহযোগিতা থাকলে চলতি জুলাই মাসের মধ্যে আমরা একটি জুলাই সনদ তৈরি করতে পারব।

]]>
সম্পূর্ণ পড়ুন