ঢেউয়ে দোকানপাট তলিয়ে গেলেও সাগর পাড় ছাড়ছে না পর্যটকরা

৩ দিন আগে
ভয়ংকর এখন কক্সবাজার সমুদ্রসৈকত, একের পর এক ঢেউয়ের আঘাতে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে দোকানপাট। এরই মধ্যে শুক্রবার (৩০ মে) সাপ্তাহিক ছুটির দিনে নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে সাগরের রূপ দেখতে ভিড় করেছে হাজারো ভ্রমণপিপাসু। তবে মাইকিং কিংবা সতর্ক করে তাদের সরিয়ে দিতে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন লাইফ গার্ড ও ট্যুরিস্ট পুলিশ।

স্থল নিম্নচাপ, যার প্রভাবে সাগর হয়ে উঠেছে উত্তাল। একের পর এক বড় ঢেউ এসে আঘাত করছে উপকূলে। ঢেউয়ের আঘাতে তলিয়ে যাচ্ছে সাগরপাড়ের দোকানপাট ও ট্যুরিস্ট পুলিশের বক্স। মাঝে মাঝে ঢেউয়ের পানি চলে যাচ্ছে সড়কে।

 

বেলা ১১টা; সুগন্ধা বিচে সরেজমিন দেখা যায় সাগর উত্তাল, জোয়ারের সময় সাগরের পানি স্বাভাবিকের চেয়ে অনেক বেশি উচ্চতায় প্রবাহিত হচ্ছে। এরমধ্যেও সাপ্তাহিক ছুটির দিন হওয়ায় সাগরপাড়ে ছুটে গেছেন হাজারো পর্যটক। উপভোগ করছেন সাগর। অনেকেই বলছেন, ভয়ংকর এমন সাগর আগে দেখা হয়নি।

 

ঢাকার মিরপুর থেকে আসা পর্যটক হোসাইন ইব্রাহীম বলেন, সাগরের ঢেউ দেখে ভয়ংকর লাগছে। ভয়ে সাগরে গোসলে নামছি না। আবার পুরো মেঘলা, এটা আবার দারুণ লাগছে।

 

আরও পড়ুন: কক্সবাজার সৈকতে নারী পর্যটককে উত্ত্যক্তের অভিযোগে ৫ যুবক আটক

 

আরেক পর্যটক সৈয়দুল করিম বলেন, কক্সবাজারে অনেকবার আসা হয়েছে। কিন্তু দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ায় এবার প্রথম আসা। সাগর দেখে অনেক সুন্দর লাগছে আবার ভয় করছে। এত বড় বড় বিশাল ঢেউ আগে কখনো দেখিনি।

 

পর্যটক সানজিদা খানম বলেন, কক্সবাজার সমুদ্রসৈকত দেখতে ছুটে আসা। এতো বড় বড় ঢেউ খুব ভয় লাগছে। মনে হচ্ছে, এখনি ঢেউগুলো সব ভাসিয়ে নিয়ে যাবে। তবে, লাইফ গার্ড ও ট্যুরিস্ট পুলিশ সতর্ক করছে।

 

এদিকে পর্যটকদের সামাল দিতে বেগ পেতে হচ্ছে লাইফ গার্ড কর্মী ও ট্যুরিস্ট পুলিশের। নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে অনেক পর্যটক নেমে পড়েছেন উত্তাল সাগরে। মাইকিং কিংবা সতর্ক করলেও মানছেন না পর্যটকরা। লাইফ গার্ড কর্মীরা বলছেন, উচ্চ জোয়ারে ঝুঁকিতে পড়েছে সৈকতের নানা স্থাপনা।

 

সী সেফ লাইফ গার্ড সংস্থার ইনচার্জ মোহাম্মদ শুক্কুর বলেন, সৈকতের মাদ্রাসা পয়েন্ট থেকে শুরু শৈবাল পয়েন্ট পর্যন্ত ঝাউগাছ উপড়ে যাচ্ছে জোয়ারের পানির আঘাতে। এরপর লাবনী পয়েন্ট সরকারি-বেসরকারি নানা স্থাপনা, ট্যুরিস্ট পুলিশের বক্স ও দোকানপাট পানিতে ক্ষতিগ্রস্ত। একই সঙ্গে সুগন্ধা পয়েন্টে জোয়ারের পানিতে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে দোকানপাট। এখানে বেশ কিছু দোকানপাট পানিতে তলিয়ে গেছে এবং ট্যুরিস্ট পুলিশের বক্সে পানি আঘাত করেছে। এছাড়া কলাতলী পয়েন্টেও একই অবস্থা।

 

মোহাম্মদ শুক্কুর আরও বলেন, সাপ্তাহিক ছুটির দিন হওয়ায় কয়েক হাজার পর্যটক সুগন্ধা পয়েন্টে ভিড় করেছে। সাগরের বড় বড় ঢেউ এর আগে দেখা যায়নি। পর্যটকদের সতর্ক করছি, মাইকিং করছি। কিন্তু কর্ণপাত করছেন অনেক পর্যটক। আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি পর্যটকদের নিরাপদ রাখার।

 

বৈরী আবহাওয়ার কারণে গেল ২ দিন ধরে বিপাকে সৈকতপাড়ের ব্যবসায়ীরা। অনেকের দোকান তলিয়ে গেছে জোয়ারের পানিতে। আর বাকি দোকানপাটগুলোও বন্ধ রাখা হয়েছে।

 

আরও পড়ুন: কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে গোসলে নেমে পর্যটকের মৃত্যু

 

সুগন্ধা পয়েন্টের ব্যবসা করিম বলেন, দোকানে অনেক মালামাল ছিল। সাগরের জোয়ারের পানি এসে সব নষ্ট হয়ে গেছে। আনুমানিক ২০ হাজার টাকার বেশি মালামাল ছিল।

 

আরেক ব্যবসায়ী আলমগীর বলেন, ৫০০-এর বেশি দোকান রয়েছে সুগন্ধা পয়েন্টে। বৈরী আবহাওয়ার কারণে ব্যবসা করা যাচ্ছে না। তাই সব দোকান এখন বন্ধ রয়েছে। আবার অনেক দোকান পানিতে তলিয়ে গেছে। সাগরের পানি সুগন্ধা পয়েন্টের সড়কে পর্যন্ত চলে এসেছে।

]]>
সম্পূর্ণ পড়ুন