বৃহস্পতিবার (১৬ জানুয়ারি) দুপুর দেড়টায় গোলচত্বর থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের করেন শিক্ষার্থীরা। মিছিলটি ক্যাম্পাস ঘুরে কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে সংক্ষিপ্ত সমাবেশের আয়োজন করা হয়।
মিছিলে শিক্ষার্থীরা ‘আদিবাসীদের ওপর হামলা কেন, ইন্টেরিম জবাব চায়,’ ‘পাহাড় থেকে সমতলে, লড়াই হবে সমান তালে,’ ‘হাসিনা গেছে যেই পথে, সন্ত্রাসী যাবে সেই,’ ‘হামলা করে আন্দোলন বন্ধ করা যাবে না,’ ‘জাতিগত/ সাম্প্রদায়িক বিভাজন, রুখে দাও জনগণ,’ ‘আমার ভাইয়ের রক্ত ঝরে, ইন্টেরিম কি করে,’ ‘বাঙালিত্বের ক্ষমতা, ভেঙে করো সমতা’ প্রভৃতি স্লোগান দেন।
আরও পড়ুন: শাবিপ্রবিতে ছাত্র আন্দোলনে হামলার দায়ে ছাত্রলীগের ২৯ শিক্ষার্থী বহিষ্কার
মিছিল পরবর্তী সংক্ষিপ্ত সমাবেশে ‘অ্যাসোসিয়েশন অব ইন্ডিজেনাস স্টুডেন্ট সাস্ট’র সাধারণ সম্পাদক ও পলিটিক্যাল স্টাডিজ বিভাগের (২০১৯-২০) শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী সুধীর খীসার সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন ইংরেজি বিভাগের অধ্যাপক ড. হিমাদ্রি শেখর বলেন, ‘এদেশে যারা বসবাস করে তারা সবাই বাংলাদেশি, এই পরিচয় নিয়ে সবাইকে স্বাধীনভাবে বসবাস করতে দিতে হবে। গতকাল আদিবাসী শিক্ষার্থীদের ওপর যে হামলা হয়েছে তার তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি। এ ধরনের ন্যক্কারজনক ঘটনা ভবিষ্যতে আর দেখতে চাই না। এ দেশে জাতি, ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে সবাই আমরা নিরাপত্তার সঙ্গে থাকতে চাই।’ এ সময় হামলায় জড়িতদের আইনের আওতায় নিয়ে এসে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি ও সঠিক তদন্তের আহ্বান জানান তিনি।
হামলার নিন্দা জানিয়ে সমাজকর্ম বিভাগের শিক্ষার্থী তুখোড় মিলিনিয়াম আরেং বলেন, ‘গণতান্ত্রিক দেশে সকলের মতামতকে সমান গুরুত্ব দেওয়া উচিত। গতকাল আমাদের ভাইদেরকে পুলিশের উপস্থিতিতে উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে হামলা করা হয়েছে। এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করুন না হলে আমরা ভাবো বৈষম্যহীন বাংলাদেশ শুধু সংখ্যাগুরুদের জন্য।’
আরও পড়ুন: মাহফিলে ছিনতাইকারীর হামলায় শাবিপ্রবির ২ শিক্ষার্থী আহত
এদিকে বুধবার রাতেও ‘বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীবৃন্দ শাবিপ্রবি’র ব্যানারে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেন শিক্ষার্থীরা।
প্রসঙ্গত, বুধবার রাজধানীর মতিঝিলে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি) ভবনের সামনে পাঠ্যপুস্তকে ‘আদিবাসী’ শব্দ প্রবেশ এবং জুলাই গণ-অভ্যুত্থান বিরোধী অখণ্ড ভারতের কল্পিত গ্রাফিতি সংযোজনের সঙ্গে জড়িতদের শাস্তিসহ ৫ দফা দাবিতে বুধবার সকালে এনসিটিবি ভবন ঘেরাও করে ‘স্টুডেন্ট ফর সভরেন্টি’ নামের একটি সংগঠন।
অন্যদিকে ‘সংক্ষুব্ধ আদিবাসী ছাত্র-জনতা’র ব্যানারে ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর একদল মানুষ পাঠ্যবইয়ে গ্রাফিতিটি পুনর্বহালের দাবিতে এনসিটিবির সামনে কর্মসূচি পালন করতে যায়। পাঠ্যপুস্তকে ‘আদিবাসী’ শব্দ সংবলিত গ্রাফিতি রাখা ও না রাখা নিয়ে দুই পক্ষের এই বিক্ষোভ কর্মসূচির চলাকালে হাতাহাতি ও হামলার ঘটনায় অনেকে আহত হন।