‘ঢলন’ পদ্ধতিতে আম বিক্রি, লোকসানে মেহেরপুরের চাষিরা

৩ সপ্তাহ আগে
মেহেরপুর জেলায় ২ হাজার ৩৬০ হেক্টর জমিতে আমের আবাদ রয়েছে। হিমসাগর, ল্যাংড়া, বোম্বাই আঁটি, আম্রপালিসহ নানা জাতের আমের বাগান রয়েছে এ জেলায়। তবে আম ঢলন পদ্ধতিতে (৪৬-৪৮ কেজিতে মণ ধরে) বিক্রির ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন বাগান মালিকরা। তবে এ পদ্ধতিতে বেশি আগ্রহী ব্যবসায়ীরা।

সম্প্রতি জিআই পণ্যের স্বীকৃতি পেয়েছে মেহেরপুর জেলার হিমসাগর আম। এ জেলার আমের সুখ্যাতি থাকায় দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ব্যবসায়ীরা এসে আম কিনে নিয়ে যান এখান থেকে। রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্তে এই আম বিক্রি করে মোটা অঙ্কের লাভ ঘরে তোলেন তারা।

 

তবে তুলনা হিসেবে লোকসানে পড়েন বাগানিরা। আম বিক্রি করতে অর্থনৈতিক ক্ষতির অন্যতম কারণ ঢলন প্রক্রিয়াকে দুষছেন বাগান মালিকরা। ব্যবসায়ীভেদে প্রতি মণ ৪০ কেজিতে হলেও ওজন দিতে হয় ৪৮ কেজি পর্যন্ত। অতিরিক্ত এই ৮ কেজি ঢলন হিসেবে বিবেচিত হয়। যার কোনো দাম পান না বাগান মালিকেরা। ফলে আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হন তারা।

 

আরও পড়ুন: রাজশাহীর আম কেনাবেচায় ঢলন প্রথা বন্ধের সিদ্ধান্ত

 

বাগান মালিক শামীম হোসেন বলেন, ‘আমার বাগানে ৪৫ টি হিমসাগর গাছ ছিল। প্রতি মণে ৯ কেজি ঢলন হিসেবে বেশি দিয়ে বিক্রি করেছি। সেই হিসেবে ২২০ মন আমের দাম পেয়েছি। এর ফলে পাঁচ মণ আমের দাম দেননি ব্যবসায়ী।’

 

আরেক বাগান মালিক মনজুরুল হাসান জানান, ‘ঢলন দিতে না চাইলে আম কিনবে না ব্যবসায়ীরা। তবে ক্রেতা-বিক্রেতা উভয়ের পক্ষ থেকে কমিশন কর্তন হলে বেশি ভালো। ঢলন নিলেও দুই থেকে তিন কেজির মধ্যে  সীমাবদ্ধ রাখা উচিত।’

 

তবে ব্যবসায়ীদের দাবি অতিরিক্ত আম না নিলে লোকসানে পড়তে হবে তাদের। ঢাকার আম ব্যবসায়ী শ্যামল কুমার বলেন, ‘আম কিনে বিক্রি করা পর্যন্ত সময়ে ওজন কিছুটা কমে। ওজনের এই তারতম্যের কারণে ঢলন নেয়া হয়। তবে অনেকে এটি অতিরিক্ত বেশি নিয়ে ফেলে। এটি উচিত নয়।’

 

আরও পড়ুন: মণ নয়, কেজিতে আম বিক্রি হবে রাজশাহীর চার জেলায়

 

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর বলছে, সহনীয় মাত্রার অধিক আম নেয়া ঠিক নয়। জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপপরিচালক শামসুল আলম বলেন, ‘সহনীয় মাত্রার থেকে বেশি আম ঢলন হিসাবে নেয়ার ফলে আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে বাগান মালিকরা। দীর্ঘদিন ধরে চলতে থাকা এই পদ্ধতিটি অপসারণ করা সম্ভব হচ্ছে না।’

 

আর কৃষি বিপণন বিভাগ বলছে, ঢলন প্রক্রিয়ায় আম বেচাকেনা না করার বিষয়ে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। জেলা কৃষি বিপণন কর্মকর্তা তরিকুল ইসলাম জানান, বাগানমালিক ও ব্যবসায়ীদের এ বিষয়ে এর আগে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। এর বিপরীতে কমিশনের মাধ্যমে বেচাকেনা করার বিষয়ে পরামর্শ দেয়া হচ্ছে।

 

উল্লেখ্য, এবার জেলায় আম উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৪৩ হাজার ১৮৮ মেট্রিক টন।

]]>
সম্পূর্ণ পড়ুন