ডাকসুর ফলাফল ঘিরে ক্যাম্পাসে উত্তেজনা, সতর্ক আইনশৃঙ্খলা বাহিনী

৩ সপ্তাহ আগে
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) ও হল সংসদ নির্বাচন শেষে চলছে ভোট গণনা। বিকেল ৪টায় ভোটগ্রহণ শেষ হওয়ার পর একের পর এক অভিযোগ-পাল্টা অভিযোগে ক্যাম্পাসে থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। এদিকে ক্যাম্পাস এলাকায় যে কোনো ধরনের পরিস্থিতি মোকাবিলায় সতর্ক অবস্থানে রয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।

মঙ্গলবার (৯ সেপ্টেম্বর) বিকেলে সরেজমিনে দেখা যায়, ভোট গণনার শুরুতেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্লাব কেন্দ্রে ঢুকে পড়েন ছাত্রশিবির মনোনীত ভিপি পদপ্রার্থী সাদিক কায়েম। পরবর্তীতে পোলিং এজেন্টদের চাপে তাকে বের হয়ে যেতে হলেও প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করে। এ ঘটনার পর থেকেই ক্যাম্পাসে কিছুটা অস্থিতিশীল পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়।

 

সাদিকের কেন্দ্রে ঢোকার খবর পেয়ে টিএসসি কেন্দ্রে ঢোকার চেষ্টা করেন ছাত্রদল মনোনীত ভিপি প্রার্থী আবিদুল। সেখানে তাকে বাধা দেয়া হলে কিছুটা উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। ফলে ভোট গণনাও কিছুক্ষণের জন্য স্থগিত থাকে।


আরও পড়ুন: যে নির্বাচন আশা করেছিলাম, তা হয়নি: আবিদুল

 

ছাত্রদলের ভিপি প্রার্থী আবিদুল ইসলাম খান সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমরা শুনতে পেরেছি শিবিরের প্রার্থীরা বিভিন্ন ভোটকেন্দ্রে গিয়ে ভোট গণনা দেখছেন। তবে আমরা কেন পারব না? তাহলে আমরা কীভাবে প্রশাসনের ওপর বিশ্বাস করব? বিভিন্ন জায়গায় কারচুপির অভিযোগ উঠেছে। প্রশাসন কী করতে চাচ্ছে, সেটি আমরা বুঝতে পারছি না।’

 

এলইডি লাইট বন্ধ থাকার কারণে কার্জন হল এবং উদয়ন স্কুলেও ভোট গণনা কিছুক্ষণের জন্য বিঘ্নিত হয়। কিছুক্ষণের মধ্যেই অবশ্য সেটা ঠিক হয়ে যায়।

 

এদিকে ভোট কারচুপি এবং নির্বাচনে বিশেষ পক্ষকে সুবিধা দেয়ার অভিযোগ তুলেছে ছাত্রদল। এ নিয়ে সিনেট ভবনে উপাচার্জ অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমেদ খানের সঙ্গে উত্তপ্ত বাক্যবিনিময় হয় ঢাবি এবং কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের নেতাদের।
 

আরও পড়ুন: ভোটে নানা অনিয়ম-কারচুপির ঘটনা দৃশ্যমান: মেঘমল্লার বসু

 

ভোট গণনা চলমান থাকা অবস্থায়ই রাত ৮টার সময় শামসুন্নাহার হল এবং ইউল্যাব কেন্দ্রের সামনে গিয়ে স্লোগান দেন ছাত্রদল মনোনীত প্রার্থীরা। এ সময় ক্যাম্পাসে তারা মিছিলও করেন। সেখানে ‘প্রশাসন ভোট চোর’ বলেও স্লোগান দেয়া হয়।

 

একই সময়ে টিএসসিতে ভোট কারচুপি এবং প্রশাসনের ব্যর্থতা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন বাগছাস সমর্থিত প্যানেলের ভিপি এবং জিএস প্রার্থী আব্দুল কাদের এবং আবু বাকের মজুমদার। অনিয়ম এবং কারচুপির অভিযোগ করেছেন বাম সমর্থিত প্রতিরোধ পর্ষদের মেঘমল্লার বসুও।

এদিকে ফলাফল ঘোষণার আগেই পুরো ক্যাম্পাসে থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। ভোটের ফলাফল ঘোষণাকে কেন্দ্র করে বিকেল থেকে ক্যাম্পাস এলাকায় জড়ো হতে থাকেন জামায়াত-শিবির ও বিএনপিসহ অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা। এ অবস্থায় ক্যাম্পাস এলাকায় অতিরিক্ত আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে।

 

সন্ধ্যার পর থেকে নীলক্ষেত এলাকায় বিএনপি ও জামায়াতের নেতাকর্মীরা অবস্থান নিয়েছেন। এছাড়া শাহবাগ মোড়, টিএসসি এলাকা ও দোয়েল চত্বর এলাকায় দুই দলের নেতাকর্মীদের অবস্থান নিতে দেখা গেছে। এসব এলাকায় নেতাকর্মীরা অবস্থান নেয়ায় ক্যাম্পাস এলাকার পরিস্থিতি থমথমে হয়ে ওঠে।

আরও পড়ুন: ডাকসু নির্বাচন বিএনপি-জামায়াতের ক্ষমতার ভাগাভাগি: ভিপি প্রার্থী কাদের

 

তবে রাত আটটার দিকে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) রমনা বিভাগের উপকমিশনার মাসুদ আলম বলেন, ফলাফল ঘিরে যেকোনো ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রস্তুত রয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা।

 

আরও পড়ুন: সিসিটিভি ফুটেজ উন্মুক্ত করা হোক: ফরহাদ

 

তিনি বলেন, সন্ধ্যার পর থেকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের উপস্থিতি বাড়ানো হয়েছে। এছাড়া সন্দেহভাজন যানবাহনে তল্লাশি চালানো হচ্ছে। কোনো ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি যাতে সৃষ্টি না হয়, সে বিষয়ে সতর্ক অবস্থানে রয়েছে পুলিশসহ অন্যান্য বাহিনীর সদস্যরা।

]]>
সম্পূর্ণ পড়ুন