মঙ্গলবার (১৯ আগস্ট) বিকেলে অভিযুক্ত চিকিৎসক ও নার্সদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক বরাবর লিখিত অভিযোগ দেন ভুক্তভোগীরা।
ভুক্তভোগী সাথী আক্তার ঠাকুরগাঁও পৌর শহরের নিশ্চিন্তপুর এলাকার মো. আবুজর গিফারীর স্ত্রী।
লিখিত অভিযোগে জানা গেছে, গত ২৫ জুলাই মধ্যরাতে সাথী আক্তারের প্রসব ব্যথা উঠলে তাকে রাতে ঠাকুরগাঁও ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগে ভর্তি করান তার স্বামী আবুজর গিফারী। কিছুক্ষণ পর নরমাল ডেলিভারির মাধ্যমে তিনি সন্তান প্রসব করেন। এ সময় সাথী আক্তারের এক সাইড অস্ত্রোপচার করা হয়।
অস্ত্রোপচার শেষে নার্সরা ভিতরে গজ ও একটি প্যাড রেখে সেলাই করে দেন। পরদিন জেনারেল হাসপাতালের গাইনি ও স্ত্রী রোগ বিশেষজ্ঞ ডা. আইরিশ রহমান সাথী আক্তারকে ছাড়পত্র দেন। এরপর গত ১৭ আগস্ট রোগীর প্রচণ্ড ব্যথা উঠলে আবারও তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয় এবং চিকিৎসক প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে বেড রেস্ট দেন।
আরও পড়ুন: প্রসূতির পেটে ১৮ ইঞ্চি কাপড় রেখেই সেলাই!
পরে রোগীর অবস্থা খারাপের দিকে গেলে চিকিৎসক ডাকার জন্য নার্সদের বলা হলে তারা এতে অস্বীকৃতি জানান এবং বলেন এখন ডাক্তারের রাউন্ড শেষ হয়ে গেছে তাই তিনি আর কোনো রোগী দেখবেন না। পরদিন চিকিৎসক আসলে তখন দেখানো হবে।
এ সময় কর্তব্যরত নার্সরা বলেন, রোগীর বেশি সমস্যা হলে বাইরে প্রাইভেটভাবে চিকিৎসা করান। এরপর রোগীর স্বজনরা ডা. জিন্নাত পারভীনের কাছে নিয়ে গেলে তিনি অবজারভেশনে রাখন এবং রোগীর প্রসাবের রাস্তা থেকে একটি সম্পূর্ণ প্যাড (স্যানিটারি ন্যাপকিন) বের করেন।
এ বিষয়ে রোগীর স্বামী আবুজর গিফারী অভিযোগ করে বলেন, ‘আমার স্ত্রী ব্যথা অনুভব করলে হাসপাতালে নিয়ে আসি। সেখানকার নার্স ও চিকিৎসকদের কাছে ভালো সেবা না পেয়ে ডা. জিন্নাত পারভীনের কাছে যাই। তিনি আমার স্ত্রীকে ভালোভাবে চেকআপ করে গজ ও একটি প্যাড বের করেন। এটা যদি আরও কিছুদিন ভেতরে থাকতো তাহলে আমার স্ত্রীকে বাঁচানো যেত না।’
আরও পড়ুন: অপচিকিৎসায় প্রসূতির মৃত্যুর অভিযোগ, অপারেশন থিয়েটার সিলগালা
তিনি আরও বলেন, ‘ডা. আইরিশ রহমান কীভাবে একজন রোগীকে ভালোভাবে না দেখে রিলিজ দিলেন? অবশ্যই তার গাফিলতি রয়েছে। এর আগেও ওই চিকিৎসকের নামে অবহেলার অভিযোগ ওঠেছিল। তারপরও কেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয় না। শুধু চিকিৎসক নন, হাসপাতালের নার্সদের বিরুদ্ধে অনেক অভিযোগ রয়েছে, তারা ঠিকমতো রোগীদের সেবা করেন না। আমি ওই চিকিৎসক ও নার্সদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে তত্ত্বাবধায়কের কাছে লিখিত অভিযোগ করেছি। আশা করি তত্ত্বাবধায়ক তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবেন।’
তবে এ বিষয়ে ঠাকুরগাঁও ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের গাইনি ও স্ত্রী রোগ বিশেষজ্ঞ ডা. আইরিশ রহমানের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি মোবাইল ফোন রিসিভ করেননি।
অভিযোগ প্রসঙ্গে ঠাকুরগাঁও ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. মোহা. ফিরোজ জামাম বলেন, ‘রোগীর স্বজনরা একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। অভিযোগের বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। যদি কোনো গাফিলতি পাওয়া যায়, তাহলে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।’