মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের শুল্কারোপের সিদ্ধান্ত যুক্তরাষ্ট্রের আদালতে গড়ালেও এখনও কাটেনি জটিলতা। এরমধ্যেই আগামী ৯ জুলাই শেষ হচ্ছে পাল্টা শুল্ক স্থগিতের তিন মাস।
এ অবস্থায় সাময়িক সময়ের জন্য হলেও ট্রাম্পের ট্যারিফ এড়াতে ভিন্ন কৌশল নিয়েছেন বিদেশি ক্রেতারা।
ইন্টারন্যাশনাল বিজনেস ফোরামের চেয়ারম্যান এস এম আবু তৈয়ব বলেন, ‘আমাদের ক্রেতারা আমাদেরকে টাইমলাইন দিয়ে দিয়েছে। আমাদের যে বর্তমান অর্ডারগুলো ৫ জুলাইয়ের আগে শিপমেন্ট করতে হবে।’
গার্মেন্টস ব্যবসায়ীরা বলছেন, সম্প্রতি অর্ডার পাওয়া সব তৈরি পোশাক আগামী ৫ জুলাইয়ের মধ্যে জাহাজে পাঠানোর কাজ শেষ করতে হবে। এমনকি গত দুই মাসে শুধু চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে চার লাখের বেশি কন্টেইনার ভর্তি কাঁচামাল পাঠিয়েছেন বিদেশি ক্রেতারা। এখনও এ বন্দরে পণ্যবাহী ৪০ হাজারের বেশি কন্টেইনার রয়েছে।
বিজিএমইএ পরিচালক রাকিবুল আলম চৌধুরী বলেন, ‘কোনো ব্যবসার কিন্তু ৩৫ শতাংশ প্রফিট হয় না। সেটা যখন আমাদের বায়ারকে বা ম্যানুফেকচারকে দিতে হবে, সেটা থেকে পরিত্রাণ পেতে হলে তাড়াতাড়ি এক্সপোর্ট করাটা অতীব জরুরি।’
তৈরি পোশাক রফতানিতে কাজ করে ২১টি বেসরকারি অফডক। স্বাভাবিক সময়ে এসব অফডক গার্মেন্টস পণ্য বোঝাই দুই হাজার কন্টেইনার রফতানি করলেও সম্প্রতি তা তিন হাজার ছাড়িয়ে গেছে।
বিকডা মহাসচিব রুহুল আমিন সিকদার বলেন, ‘আগে আমরা ২ হাজার থেকে ২ হাজার ২০০টি কন্টেইনার জাহাজিকরণ করেছি। এখন সেটা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩ হাজার থেকে সাড়ে ৩ হাজারে।’
আরও পড়ুন: ট্রাম্প-জিনপিং ফোনালাপ, শুল্ক ইস্যুতে বরফ গলার ইঙ্গিত
বিদেশি ক্রেতাদের চাহিদা অনুযায়ী, বাড়তি শুল্ক ছাড়া পণ্য পাঠাতে বন্দরের সহযোগিতা চেয়েছেন ব্যবসায়ীরা। বিশেষ করে ঈদের বন্ধে বায়ার প্রতিষ্ঠান থেকে অতিরিক্ত কাঁচামাল আসতে থাকায় বন্দরে কন্টেইনার জটের আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।
বিজিএমইএ পরিচালক সাইফুল্লাহ মনসুর বলেন, ‘আমাদের মাল শিপমেন্ট করতে বা খালাস করতে কাস্টমস যাতে কোনো ধরনের জটিলতা তৈরি না করে, তাতে কন্টেইনার জটের আশঙ্কা বাড়বে।’
এ অবস্থায় গার্মেন্টস শিল্পের আমদানি করা কাঁচামালের ডেলিভারি দ্রুত করার পাশাপাশি পোশাক রফতানিতে অগ্রাধিকার ঘোষণা করেছে বন্দর কর্তৃপক্ষ।
চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সদস্য ক্যাপ্টেন আহমেদ আমিন আবদুল্লাহ বলেন, ‘বন্দর থেকে লোডিং প্রায়োরিটি দেয়ার চেষ্টা করব, যাতে তাদের পণ্য সঠিক সময়ে তাদের বায়ারের কাছে পৌঁছাতে পারে।’
২০২৪ সালে বাংলাদেশ থেকে প্রায় ৮৩৬ কোটি ডলারের তৈরি পোশাক আমদানি করেছে যুক্তরাষ্ট্র।