ট্রাম্প জর্ডানের বাদশাহ আবদুল্লাহর উপস্থিতিতে গাজার নিয়ন্ত্রণ নেয়ার পরিকল্পনার ওপর আবারও জোর দিলেন

৪ সপ্তাহ আগে
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প মঙ্গলবার তার অবস্থান পুনর্ব্যক্ত করেন যে, জর্ডানের স্থায়ীভাবে ফিলিস্তিনি শরণার্থীদের গ্রহণ করা এবং যুক্তরাষ্ট্র কর্তৃক গাজার উপর নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠার পরিকল্পনাকে সমর্থন করা উচিৎ। ট্রাম্প এই পরিকল্পনাকে মধ্যপ্রাচ্যের জন্য "অসাধারণ" বলে অভিহিত করেন। এসময় জর্ডানের বাদশাহ দ্বিতীয় আবদুল্লাহ দ্বিতীয় হোয়াইট হাউসে উপস্থিত ছিলেন। ওভাল অফিসে বৈঠকের আগে সাংবাদিকদের উদ্দেশে ট্রাম্প বলেন, "আপনারা কিছু দুর্দান্ত অগ্রগতি দেখতে পাবেন। পুরো বিষয়টি সফল হবে—এটি কোনো জটিল প্রক্রিয়া নয়।" তিনি আরও বলেন, "প্রথমবারের মতো মধ্যপ্রাচ্যে স্থিতিশীলতা আসবে। ফিলিস্তিনিরা বা যারা বর্তমানে গাজায় বসবাস করছে, তারা অন্য কোথাও আরও ভালোভাবে ও নিরাপদে বসবাস করবে।" একজন সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে ট্রাম্প বলেন, "ফিলিস্তিনিরা যেখানে আমরা সম্মিলিতভাবে সিদ্ধান্ত নেব সেখানে বসবাস করবে," তা "জর্ডানের একটি অংশে হতে পারে, মিশরের একটি অংশে অথবা অন্য কোথাও" হতে পারে। তবে বাদশাহ আবদুল্লাহ ও মিশরের প্রেসিডেন্ট আবদেল ফাত্তাহ আল-সিসি ট্রাম্পের এই পরিকল্পনা প্রত্যাখ্যান করেছেন, যেখানে আনুমানিক ১.৯ মিলিয়ন ফিলিস্তিনিকে জোরপূর্বক গাজা থেকে সরিয়ে প্রতিবেশী জর্ডান ও মিশরে স্থানান্তরের কথা বলা হয়েছে, যাতে যুক্তরাষ্ট্র গাজার নিয়ন্ত্রণ গ্রহণ করতে পারে। ট্রাম্প বাদশাহ আবদুল্লাহকে প্রেসের সামনে তার বিকল্প পরিকল্পনা উপস্থাপন করতে আমন্ত্রণ জানান। বাদশাহ সে আমন্ত্রণে সাড়া দেননি। সবার জন্যই লাভজনক এমন সমাধানের প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দিয়ে বাদশাহ আবদুল্লাহ বলেন, "আমি মনে করি, আমাদের মনে রাখা উচিত যে মিশর ও আরব দেশগুলোর ইতোমধ্যেই একটি পরিকল্পনা রয়েছে। সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান আমাদের রিয়াদে আলোচনার জন্য আমন্ত্রণ জানিয়েছেন।" জর্ডান অবিলম্বে ক্যান্সার ও অন্যান্য গুরুতর অসুস্থতায় আক্রান্ত ২,০০০ শিশুকে গ্রহণ করতে প্রস্তুত জানিয়ে তিনি আরও যোগ করেন, "আজ আমরা কিছু গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা করতে যাচ্ছি।" প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প জোর দিয়ে বলেন যে যুক্তরাষ্ট্র গাজা কেনার পরিকল্পনা করছে না, তবে এর ওপর নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠার বিষয়ে কোনো স্পষ্ট ব্যাখ্যা দেননি। "আমরা এটির নিয়ন্ত্রণ নেব, আমরা এটি ধরে রাখব, এবং নিশ্চিত করব যে সেখানে শান্তি বজায় থাকবে। কোনো সমস্যা হবে না, কেউ এটিকে প্রশ্ন করবে না," ট্রাম্প বলেন। এটি ছিল বাদশাহ আবদুল্লাহর জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক। ওদিকে ট্রাম্প এবং ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু সতর্কবার্তা দিয়েছেন যে, যদি হামাস শনিবার দুপুরের মধ্যে ইসরায়েলি বন্দিদের মুক্ত না করে, তাহলে ১৯ জানুয়ারিতে সম্মত হওয়া যুদ্ধবিরতি বাতিল হয়ে যাবে। ট্রাম্প বলেন, "আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি না তারা নির্দিষ্ট সময়সীমা মেনে চলবে। তারা কঠোর অবস্থান নিতে চায়। তবে আমরা দেখব, তারা আসলেই কতটা কঠোর হতে পারে।" তিনি আরও বলেন, "শনিবার দুপুর ১২টার মধ্যে যদি বন্দিদের মুক্তি না দেওয়া হয়, তবে সব আলোচনা শেষ।" ইসরায়েলি কারাগারে আটক কতজন ফিলিস্তিনি বন্দিদের মুক্তির বিনিময়ে কতজন ইসরায়েলি জিম্মিকে ছেড়ে দেওয়া হবে সে বিষয়ে ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে একটি চুক্তি হয়। কয়েক মাস ধরে কাতার ও মিশরের মধ্যস্থতায় বাইডেন প্রশাসনের তত্ত্বাবধানে এই আলোচনা চলছিল। তবে সোমবার, হামাস ঘোষণা করে যে তারা ইসরায়েলি জিম্মিদের মুক্তির পরবর্তী ধাপ বিলম্বিত করতে পারে, কারণ তারা মনে করে ইসরায়েল যুদ্ধবিরতির শর্ত লঙ্ঘন করেছে। যুক্তরাষ্ট্র ১৯৯৭ সালে হামাসকে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে চিহ্নিত করে। ইসরাইল, মিশর, ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং জাপানও হামাসকে সন্ত্রাসী গোষ্ঠী হিসেবে বিবেচনা করে। মঙ্গলবার, নেতানিয়াহু বলেন যে তিনি ইসরায়েলি সেনাবাহিনীকে গাজা ঘেরাও করার নির্দেশ দিয়েছেন। নেতানিয়াহু বলেন "আমি মন্ত্রিসভায় যে সিদ্ধান্ত পাশ করেছি, তা একদম পরিষ্কার: যদি হামাস শনিবার দুপুরের মধ্যে আমাদের বন্দিদের ফিরিয়ে না দেয়, তবে যুদ্ধবিরতি বাতিল হবে এবং আইডিএফ (ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী) হামাসকে সম্পূর্ণ পরাজিত না করা পর্যন্ত কঠোর সামরিক অভিযান চালিয়ে যাবে।"
সম্পূর্ণ পড়ুন