শুক্রবার (১৩ জুন) নাটোর শহরের চকবৈদ্যনাথ এলাকায় অবস্থিত ঐতিহাসিক চামড়ার হাটে দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে ট্রাকযোগে চামড়া আসতে শুরু করেছে।
ঈদের পর প্রথম দিনেই প্রচুর গরু ও খাসির চামড়া হাটে আসলেও ট্যানারি মালিক বা বড় ক্রেতাদের অনুপস্থিতিতে চামড়া বিক্রি না হওয়ায় হতাশ ব্যবসায়ীরা।
স্থানীয় ব্যবসায়ী রকিব উদ্দিন কমল বলেন, ‘ব্যাংক বন্ধ থাকায় ট্যানারি মালিকরা এখনও আসেননি। রোববার ব্যাংক খোলার পর তারা নাটোরে এসে চামড়া কেনা শুরু করবেন বলে আমরা আশা করছি।’
পাবনা থেকে প্রায় ৪০০টি গরুর চামড়া নিয়ে নাটোরের হাটে আসেন আব্দুর রশিদ। তিনি বলেন, ‘প্রতিবছর এখানে ভালো দাম পাই বলেই আসি। কিন্তু আজ সকাল থেকে বসে আছি, কোনো ট্যানারি মালিক নেই। তাই আড়তে চামড়া জমা দিয়ে অপেক্ষায় আছি।’
চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে আসা আরেক ব্যবসায়ী রশিদ আনেন ৩ হাজারটি ছাগলের চামড়া। তারও একই অবস্থা।
তিনি বলেন, ‘ট্যানারি মালিকদের দেরিতে আসায় অতিরিক্ত খরচ পড়ছে। এতে লাভের বদলে লোকসানের আশঙ্কা রয়েছে।’
আরও পড়ুন: চামড়া বাজারে সিন্ডিকেটে হতাশ মাওলানা মুহিউদ্দীন রাব্বানী, কার্যকর উদ্যোগের দাবি
নাটোরের স্থানীয় ব্যবসায়ী নূরুল ইসলাম নূরু বলেন, ‘ঈদের মধ্যে গরুর চামড়া ৮০০ থেকে ১,০৫০ টাকায় এবং খাসির চামড়া ৩০ থেকে ৫০ টাকায় কেনা হয়েছে। এগুলো লবণ সংরক্ষণে গরুর চামড়ায় ২০০ টাকা ও খাসির চামড়ায় ৫০ টাকা খরচ হয়েছে। এখন যদি প্রতিপিস খাসির চামড়া কমপক্ষে ১০০ টাকায় ও গরুর চামড়া ১,১০০ টাকায় বিক্রি না হয়, তাহলে ব্যবসায়ীদের লোকসান গুনতে হবে।’
নাটোর জেলা চামড়া ব্যবসায়ী গ্রুপের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল হালিম বলেন, ‘এবার ঈদের মধ্যে সরকার নির্ধারিত দামের চেয়ে বেশি দামে চামড়া বিক্রি হয়েছে। ফলে আশা করছি ট্যানারি মালিকরাও বাজারদর অনুযায়ী দাম দিয়ে চামড়া কিনবেন।’
প্রতি বছর কোরবানির ঈদের পরবর্তী শুক্রবার থেকে নাটোরের এই হাটে মাসব্যাপী চামড়ার বেচাকেনা চলে। এখানে দেশের ৩৮টি জেলা থেকে প্রায় ৩ লাখ গরুর চামড়া ও ৫ লাখ ছাগলের চামড়া বিক্রি হয়, যা দেশের চামড়া শিল্পে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
ট্যানারি মালিকরা হাটে এলে বাজার পুরোদমে চালু হবে বলে আশা করছেন সংশ্লিষ্টরা। তাদের আগমনের দিকেই এখন চেয়ে আছেন ব্যবসায়ী ও আড়তদাররা।